ফেসবুক ইন্ডিয়ার শীর্ষকর্তাকে মেরে ফেলার হুমকি
অভিযোগ জানানো হল দিল্লি পুলিশে
বিজেপি-র প্রতি পক্ষপাতের অভিযোগ উঠেছে ওই কর্তার বিরুদ্ধে
এই নিয়ে সরগরম রাজনৈতিক মহলও
রবিবারই ফেসবুক এবং হোয়াটস্যাপ, এই দুই সোশ্য়াল মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে বিজেপি এবং আরএসএস - এই অভিযোগে উত্তাল হয়েছিল জাতীয় রাজনীতি। গুরুতর অভিযোগটি করা হয়েছে এক প্রথম সারির মার্কিন সংবাদমাধ্যমে। তার পরদিনই জানা গেল ইতিমধ্যেই বিজেপিকে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার অভিযোগে ফেসবুক ইন্ডিয়ার সর্বোচ্চ কার্যনির্বাহী কর্তাকে অনলাইনে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়েছে। সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, রবিবার রাতেই এই বিষয়ে ওই কর্তা অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দিল্লি পুলিশের সাইবার সেল ইউনিটে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
২০১১ সাল থেকেই ফেসবুকের ভারত এবং দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার পাবলিক পলিসি ডিরেক্টর হলেন আঁখি দাস। এককথায় ভারতে ফেসবুকের সর্বময় কর্তা বলা যেতে পারে তাঁকে। ৪৯ বছর বয়সী এই তথ্য-প্রযুক্তি কর্মকর্তা রবিবার রাতে দিল্লি পুলিশ সাইবার সেলে করা অভিযোগে বলেছেন, বেশ কিছু লোক 'অনলাইন পোস্টিং বা কনটেন্ট' প্রকাশ করে তাঁর 'প্রাণ ও দেহ'-এর বিরুদ্ধে 'হিংসাত্মক হুমকি' দিচ্ছে। তিনি আরও দাবি করেছেন, এই হুমকিগুলি গত ১৪ অগাস্ট 'ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল'এ প্রকাশিত যে নিবন্ধ নিয়ে বর্তমানে ফেসবুকের বিরুদ্ধে ভারতের শাসক দল-কে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে, তার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত।
দিল্লি পুলিশের এক পদস্থ কর্তা এই বিষয়ে জানিয়েছেন পুলিশের কাছে এই মর্মে একটি অভিযোগ জমা পড়লেও এখনও এফআইআর নিবন্ধিত হয়নি। অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।
গত ১৪ অগাস্ট মাপর্কিন সংবাদপত্র ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল-এ প্রকাশিত 'ফেসবুক হেট-স্পিচ রুলস কোলাইড উইথ ইন্ডিয়ান পলিটিক্স' শীর্ষক ওই নিবন্ধে, সাংবাদিক নিউলি পার্নেল এবং জেফ হরউইট্জ দাবি করেছিলেন, ফেসবুকে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য এবং বিতর্কিত পোস্ট প্রচারের কারণে বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। আঁখি দাস-এর নাম উল্লেখ করে বলা হয়েছিল, তিনি নাকি কর্মীদের বলেছেন বিজেপি নেতাদের যদি 'নীতি লঙ্ঘনের শাস্তি দেওয়া' হয়, তাহলে ভারতে সংস্থার ব্যবসা-র বড় ক্ষতি হতে পারে। এই বিষয়ে নিবন্ধে ফেরসবুক ইন্ডিয়ার বেশ কিছু 'বর্তমান ও প্রাক্তন' কর্মীদের উদ্ধৃতি দিয়ে বিজেপির প্রতি ফেসবুকের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ করা হয়েছে।
এই নিয়ে রবিবারই জোর তরজায় জড়িয়েছিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এবং কেন্দ্রীয় তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদ। রাহুল ফেসবুক এবং হোয়াটসঅ্যাপ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে বিদজেপির বিরুদ্ধে ভুয়ো খবর এবং বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগ করেন। ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগ করেন। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রী, রাহুল-কে কটাক্ষ করে বলেন, তিনি নিজের দলের লোকদেরও প্রভাবিত করতে পারেন না বলেই মনে করেন গোটা বিশ্বকেই বিজেপি এবং আরএসএস নিয়ন্ত্রণ করছে। কংগ্রেসই তথ্যকে অস্ত্রে পরিণত করার চেষ্টা করেছিল বলেও অভিযোগ করেন রবিশঙ্কর।