মাওবাদী শীর্ষ নেতা হিসেবেই পরিচত মিলিন্দ তেলতুম্বদে। তাঁর মাথার দাম ধার্য করা হয়েছিল ৫০ লক্ষ টাকা। তিনি ছাড়াও ওই জঙ্গলে ছিলেন আর দুই শীর্ষ মাওবাদী নেতা।
সিপিআই(মাওবাদী) (CPI (ML))কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মিলিন্দ তেলতুম্বদে (Milind Teltumbde) শনিবর গড়চিরোলিতে (Gadchiroli) পুলিশের সঙ্গে মাওবাদীদের এলকাউন্টারে (Encounter) নিহত হয়েছে। এই এনকাউন্টারে মিলিন্দ তেলতুম্বদেসহ ২৬ জন মাওবাদী নেতা কর্মী নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে মহারাষ্ট্র পুলিশ (Maharashtra Police)। সূত্রের খবর নিহতদের মধ্যে ৬ জন মহিলা রয়েছে। তাদের ৪ জনের পরিচয় রবিবার সকাল পর্যন্ত জানতে পারেনি পুলিশ। মোট ৬ জন ছাড়া নিহত ছাড়া বাকি সকলকে শনাক্ত করা গেছে। শনিবার গড়চিরোলির জঙ্গলে সকাল ৬টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত এনকাউন্টার হয়েছে। পুলিশের দাবি ছিল গড়চিরোলির ইতিহাসে এটাই দ্বিতীয় বৃহত্তম এনকাউন্টার।
মাওবাদী শীর্ষ নেতা হিসেবেই পরিচত মিলিন্দ তেলতুম্বদে। তাঁর মাথার দাম ধার্য করা হয়েছিল ৫০ লক্ষ টাকা। তিনি ছাড়াও ওই জঙ্গলে ছিলেন আর দুই শীর্ষ মাওবাদী নেতা। তাদেরও পুলিশ গুলি করে হত্যা করেছে। তারা হলেন ইটাপল্লি তহলিলের রেনাদিগুত্তা গ্রামেপ বাসিন্দা মহেশ ওরফে শিবাজি রাওজি গোটা ও ছত্তিশগড়ের দান্তেওয়াড়া জেলার জাগারগুন্ডা গ্রামে বাসিন্দা লোকেশ ওরফে মাঙগু পডিয়াম। দুজনেরই সিপিআই(মাওবাদী)কর গাড়চিরোলির বিভাগীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। গোটা কাসানুর দালামের অন্তর্গত ছিল। তার মাথার দাম ধার্য করা হয়েছিল ১৬ লক্ষ টাকা। পোডিয়াম কোম্পানি -৪এর কমান্ডার ছিলেন। তাঁর মাথার দাম ছিল ২০ লক্ষ টাকা।
শনিবার ১০ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা এনকাউন্টারে মাওবাদী তিন শীর্ষ নেতা ছাড়াও সংগঠনের একাধিক কর্মী নিহত হয়েছেন। মাওবাদীরা এই জঙ্গলে ক্যাম্প করেছিল। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ হানা দেয়। তারপর দীর্ঘ সময় ধরে চলে গুলির যুদ্ধ। পুলিশের অনুমান মাওবাদীদের ওই ক্যাম্পে এসেছিলেন মাওবাদীদের আরও এক শীর্ষ নেতা প্রভাকর। ১০০টিরও বেশি মাওবাদীদের মণ্ডলীর সদস্য এই ক্যাম্পে উপস্থিত ছিল বলেও অনুমা করছে পুলিশ। প্রভাকরসহ প্রায় ৭৫ জন মাওবাদী সদস্য পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে জঙ্গল ছেড়ে নিরাপদ স্থানে পালাতে সক্ষম হয়েছে। প্রভাকর হলেন দণ্ডকারণ্য স্পেশাল জোলান কমিটির সদস্য।
মিলিন্দ তেলতুম্বদের উত্থান ১৯৮০ সালে। তার আগে মিলিন্দ চন্দ্রপুর ওয়েস্টার্ন কোলফিন্ডস লিমিটেডের কর্মী ছিলেন। সেই সময় ম্যানেজারের সঙ্গে বিবাদের পর চাকরি ছাড়েন। যোগদেন মাওবাদী আন্দোলনে। তাঁর আইটিআই প্রশিক্ষণকে কাজে লাগিয়ে মাওবাদীদের প্রযুক্তিগত উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন মিলিন্দ। কর্মী সংগঠনে যোগ দিলেও দ্রুত উত্থান হয়ে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যও হয়ে যান তিনি। মাওবাদী সংগঠনের হয়ে কাজ করতেন তাঁর স্ত্রী অ্যাঞ্জেলা। ২০১১ সাল তাঁকে গ্রেফতার করা হলেও জামিনে মুক্তিপান তিনি। মহারাষ্ট্রের এক সিনিয়র পুলিশ কর্তার মতে তেলতুম্বে তিন বছর আগে ভীমা-কোরেগাঁও কর্মসূচির জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ জোগান দিয়েছিলেন। একটা সময় মিলিন্দ ও তার সঙ্গীর ওয়েস্টার্ন কোল্ডফিল্ডের ম্যানেজারকে (যার সঙ্গে বিবাদের কারণে চাকরি ছেড়েছিলেন) হত্যার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তা সফল হয়নি।