গত ৬ জুলাই একটি বিজ্ঞতি জারি করে ইউনিভার্সিটি গ্র্যান্ট কমিশন জানিয়েছিল চলতি বছর ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যেই বার্ষিক পরীক্ষা গ্রহণ করতে হবে। কিন্তু করোনা আবহে এই বিজ্ঞপ্তির বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় অনেকেই। সেই মামলার শুনানি মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট সংশ্লিষ্ট সবকটি পক্ষকে আগামী তিন দিনের মধ্য়ে নিজস্ব মতামত দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছে।
এদিনের শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল করেন সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহতা। তিনি বলেন বিশ্ববিদ্যালয়গুলি চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষা স্থগিত রাখতে পারে বা সময়সীমা পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারে। কিন্তু কখনই তা বাতিল করা যেতে পারে না। পরীক্ষা গ্রহণ না করে ডিগ্রি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না।
ইউজিসির নির্দেশিকাগুলির বাতিল করার বিষয়ে দুর্যোগ ব্যাবস্থাপনা আইন ও রাজ্য সরকার কর্তৃক বিষয়ে বহু উপস্থাপনা ও যুক্তির জবাবে ইউজিসির প্রতিনিত্বকারী তুষার মেহেতা বলেন ডিএম আইনের অধীনে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের আধিপত্য রয়েছে। তিনি আরও বলেন পুরো দেশ কাজ করছে এই অবস্থায় পরীক্ষার্থীদের বয়স ২১-২২ এর মধ্যে। তাঁরা কী বাড়ি থেকে একদম বার হন না?
বিচারপতি অশোক ভূষণের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এদিন রায়দান স্থগিত রেখেছেন। তবে তিন দিনের মধ্যে এই মামলার সঙ্গে যুক্ত সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে তাঁদের পরামর্শ জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছ।
আগের দিনের শুনানিতে করোনা আক্রান্ত রাজ্যের তালিকায় প্রথম দিকে থাকা দিল্লি ও মহারাষ্ট্রসহ একাধিক রাজ্য পরীক্ষা গ্রহণে অসম্মত হয়েছে। আপত্তি জানিয়েছিল ওড়িশা। প্রায় একই শুরু কথা বলেছিল পশ্চিমবঙ্গও।
অ্যাডভোকেট জয়দীপ গুপ্ত শিক্ষকদের একটি সংস্থার হয়ে সওয়াল করেন। তিনি বলেন, জুলাইয়ে ইউজিসির বিজ্ঞপ্তি কোনও বিধিবদ্ধ দলিল নয়। আর ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পরীক্ষা নেওয়া প্রায় অযৌক্তিক ছিল। তিনি আরও বলেছিলেন পশ্চিমবঙ্গে নির্দেষ্টি কোনও ক্যাম্পাস কেন্দ্র নেই। তাই এই রাজ্যে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য পরীক্ষার্থীদের রাজ্য জুড়ে ভ্রমণ করতে হবে। মোট্র ও রেল পরিষেবা বর্তমানে বন্ধ এই রাজ্যে। তাই এই অবস্থায় পরীক্ষা দেওয়া রীতিমত কঠিন কাজ হবে।
কিন্তু পাল্টা যুক্তি হিসেবে তুলে ধরা হয় প্রয়োজনে সময়সীমা পিছিয়ে দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষা গ্রহণ করা খুবই জরুরি। অ্যাডভোকেট নাভারে বলেন এটি শিক্ষার্থীদের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর জনপ্রিয়তা অর্জনের কোনও ব্যবস্থা হতে পারে না। তিনি আরও বলেন যে ভিসি এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। কিন্তু কোনও রাজ্য এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। রাজ্যগুলি ইচ্ছাকৃতভাবে পরীক্ষা গ্রহণে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে নাতো সেই বিষয়েও প্রশ্ন ওঠে আগের দিনের শুনানিতে।