এদিন উত্তরপ্রদেশের মোট ১৬টি জেলা জুড়ে ৫৯টি আসনে হয়েছে ভোটগ্রহণ। সকাল ৭টা থেকে শুরু হয় ভোটগ্রহণ পর্ব।
বেশ সকাল সকাল বেজে উঠেছিল নির্বাচনী কাঁসর। মিটল উত্তরপ্রদেশে তৃতীয় দফার ভোটগ্রহণ পর্ব। মোট ১৬টি জেলা জুড়ে ৫৯টি আসনে হয়েছে ভোটগ্রহণ। সকাল ৭টা থেকে শুরু হয় ভোটগ্রহণ পর্ব। মোট ২.১৬ কোটি ভোটারদের হাতে নির্ধারিত হতে চলেছে এই ১৬ জেলার প্রার্থীদের ভাগ্য। এদিন তৃতীয় দফার ভোটগ্রহণ পর্বে অর্ধেক জেলার বিজেপি প্রার্থীদের ভাগ্য নির্ভর করছে চাষিদের উপর। বলা বাহুল্য ১৬টি জেলার ৫৯টি আসনের মধ্যে ৩৬টি আসনে আলু চাষিদের প্রভাব রয়েছে ভীষণ ভাবে। সুতরাং এই ক্ষেত্র বিশেষ সুবিধা ভোগ করার সম্ভবনা বিরোধী দলগুলির দিকেই রয়েছে। কারণ অবশ্যই গত এক বছর ধরে চলা কৃষক আন্দোলন।
উল্লেখ্য, কারহাল কেন্দ্র আজকের দফার মধ্যে ছিল সর্বোচ্চ জনপ্রিয় ও আকর্ষণীয় কেন্দ্র। একটা বিরাট সময় ধরে সেখানে নির্বাচনে জয়ী হয়েছে সমাজবাদী পার্টি। তবে একবার তাঁদের দেখতে হয়েছিল হারের মুখ। এই ক্ষেত্রে বলা যায়, যাদব পরিবারের এক শক্ত ঘাঁটি কারহাল কেন্দ্র। এদিন হাথরাস, ফিরোজাবাদ, ইটা, কাসগঞ্জ, ময়নপুরি, ফারুখাবাদ, কনৌজ, ইটাওয়া, আউরাইয়া, কানপুর দেহাত, কানপুর নগর, জালাউন, ঝাঁসি, ললিতপুর, হামিরপুর এবং মাহোবা এই সকল জেলা জুড়েই চলে ভোট পর্ব। ৫০ শতাংশ বুথে ক্যামেরা মাধ্যমে লাইভ সম্প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়।
ঠিক দু’বছর আগে যে হাথরাসের মাটিতে লেগেছিল তাঁর কন্যার রক্তের ছাপ। সেই হাথরাস জুড়ে আজ যেন শান্তির পরিবেশ। সেখানেও বেজেছে নির্বাচনী কাঁসর। কিন্তু তা হয় তো নাড়াতে পারেনি হাথারাস কন্যার পরিবারকে। প্রসঙ্গত, শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ পর্ব মেটাতে এদিন মোতায়েন করা হয়েছিল আধা-সামরিক। ভোট এলেই দেশের রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীরা পরিণত হন জনসাধারণের প্রতিনিধিতে। আক্ষরিকভাবে একজন নির্বাচিত নেতা-নেত্রীর কাজই সেটা। কিন্তু নির্বাচনে জয় লাভের পর নিজেদের দায়িত্ব অনেকাংশেই ভুলে যান দেশের অধিকাংশ নেতা-নেত্রীরা। আবার বছর পাঁচেক পর যখন নির্বাচন আসে, তখন সেই পুরানো নেতা-নেত্রীদের দেখা মেলে জনসাধারণের দুয়ারে। এদিন ঘটে এমনটাই। ভোটগ্রহণের কাঁসর বাজতেই দেশে প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে বিজেপির অধিকাংশ নেতাই ভোট দানের আবেদন করে বসেন জনসাধারণের কাছে।
তবে এই তৃতীয় দফার নির্বাচনে একটি সমস্যা নানা বিভিন্ন কেন্দ্রতেই দেখা যায় তা হল ইভিএম ত্রুটি। হাথরাস, কাসগঞ্জ সহ একাধিক বিধানসভায় ফুটে ওঠে ইভিএম ত্রুটি। আবার হাজার ত্রুটির মাঝে দেখা যায় নানা অন্যরকম চিত্র। বর্তমানে উত্তরপ্রদেশ পরিণত হয়েছে সাম্প্রদায়িকতার আখড়ায়। সর্বদা হিন্দু-মুসলিম বিভেদ। কেউ চায় ৮০ শতাংশের ভোট তো কেউ চায় ২০ শতাংশের ভোট। তাহলে কী মরে গেছে ভারতের মানুষের মধ্যে ঐক্য, সাম্প্রদায়িকতার রঙেই কী রেঙে গেছে সকলে। হয় তো না! ফিরোজাবাদের জাসরানার মোস্তফাবাদ ভোটকেন্দ্রে গণতন্ত্রের ঐক্যের চিত্র সামনে এসেছে। এখানে জাফরান পোশাকে রাজবীর ও শরীফ ভোট দেওয়ার পর একসঙ্গে বেরিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন-মেটেনি রাস্তা-জলের সমস্যা, পুরুলিয়ায় ভোট বয়কটের ডাক একাধিক ওয়ার্ডে
আরও পড়ুন-তৃতীয় দফার ভোটে উত্তপ্ত উত্তরপ্রদেশ, যাদব ঘাঁটিতে জয় আনতে মরিয়া অখিলেশ
আশা ছিল শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণের। মোতায়েন করা হয়েছিল আধা-সামরিক বাহিনী। কিন্তু শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পুরো অর্থে দেখা মিলল না। ঝাঁসির বাবিনা বিধানসভার সিমথ্রি গ্রামে সংঘর্ষে বাঁধল এসপি ও বিজেপি কর্মীরা। বাকবিতণ্ডা থেকে শুরু করে পাথর ছোড়াছুরি। আহত হয়েছেন অনেকে। রাজনৈতিক সংঘর্ষের মাঝে পড়ে আবার গুরুত্বরভাব আহত হন এক বৃদ্ধা। তৃতীয় দফার নির্বাচনে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ভোট পড়ে ৫৭.৫৮ শতাংশ।
আরও পড়ুন- টেস্টে বাদ পড়তেই বিসিসিআই-র বিরুদ্ধে বিস্ফোরক ঋদ্ধি, তোপ রাহুল-সৌরভকে