লাদাখে দেশের জন্য শহিদ হওয়া ২০ জন জওয়ানকে সম্মান জানাতে এক নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত নিল দেশের সরকার। ভারতের সবচেয়ে বড় কোভিড ১৯ হাসপাতালের নামকরণ হবে গালওয়ান উপত্যকায় দেশের জন্য প্রাণ দেওয়া বীর জওয়ানদের নামে। এমন ঘোষণাই করল দেশের ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ডিআরডিও)।
দক্ষিণ দিল্লিতে রয়েছে সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল হাসপাতাল। জানা যাচ্ছে, এখানকার কোভিড কেয়ার ইউনিটটিই দেশের মধ্যে সবচেয়ে বড়। এখানে প্রায় ১০ হাজার বেড রয়েছে। আর এই করোনা হাসপাতালের ওয়ার্ডগুলির নামকরণ এবার হবে লাদাখে শহিদ হওয়া জওয়ানদের নামে। এমনটাই জানিয়েছেন ডিআরডিও-র চেয়ারম্যান।
ডিআরডিও-র তরফে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ''১৫ জুন লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় দেশের জন্য প্রাণ বিসর্জন দেওয়া শহিদ জওয়ানদের নাম আমরা অমর করে রাখতে চাই। তাঁদের নামে এবার হাসপাতালের ওয়ার্ড-এর নামকরণ করা হবে।''
দিল্লির প্রকাণ্ড আকারের এই কোভিড হাসপাতালে কুড়িটি প্রমাণ মাপের ফুটবল মাঠ অনায়াসে ঢুকে যেতে পারে। ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বিশেষ অনুরোধে ইন্দো-তিব্বত বর্ডার পুলিশ (আইটিবিপি) হাসপাতালটি পরিচালনার কাজ করে। সহায়তা করে দিল্লি সরকার। আবার সেবা প্রতিষ্ঠান রাধাস্বামী বিয়াস-এর স্বেচ্ছাসেবকরাও কাজে হাত লাগান নিজেদের মতো করে।
কোভিড চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল হাসপাতালের দুটি অংশ রয়েছে। একটি কোভিড কেয়ার সেন্টার, এখানে চিকিৎসা করা হয় সেইসব রোগীদের যাঁরা সংক্রমিত কিন্তু বাইরে থেকে সংক্রমণের লক্ষ্মণ বুঝতে পারা যাচ্ছে না। হাসপাতালের অপর অংশটি হল ডেডিকেটেড কোভিড হেলথ কেয়ার। এখানে চিকিৎসা করা হয় মারাত্মকভাবে সংক্রমিত সঙ্কটজনক অবস্থায় থাকা কোভিড রোগীদের। প্রথম বিভাগটির জন্য রয়েছে হাসপাতালের ৯০ শতাংশ বেড। বাকি ১০ শতাংশ আছে দ্বিতীয় বিভাগের জন্য। ডেডিকেটেড কোভিড হেলথ কেয়ার ইউনিটে সঙ্কটজনক রোগীদের রাখা হয় বলে সেখানে অক্সিজেন সাপোর্ট সিস্টেমের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। পাশাপাশি গোটা হাসপাতালটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত।
হাসপাতালের আইসিইউ ও ভেন্টিলেটর ওয়ার্ড-এর নামকরণ হবে কর্নেল বি সন্তোষ বাবুর নামে। গালওয়ান ভ্যালিতে চিনা সেনার কাপুরুষের মতো হামলায় প্রাণ হারিয়েছিলেন কর্নেল বাবু। জানা গিয়েছে, রবিবার ওই হাসপাতালের নতুন ওয়ার্ডগুলির উদ্বোধনে আসতে পারেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং।
শুক্রবার হঠাৎ করেই লেহ-তে হাজির হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেনার মনোবল বাড়াতেই তাঁর এই সফর বলে জানা গিয়েছে। যদিও প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলেছিলেন, ভারত-চিন সীমান্ত উত্তেজনার মাঝে মোদীর এই সফর যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। মোদি লে উপত্যকায় গিয়ে সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিশেষ বৈঠক করে আসার পরেই ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ডিআরডিও)-এর তরফে গালওয়ানে শহিদদের নামে হাসপাতালের ঘোষণাটি করা হয়।