করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে আজ সোমবার থেকে শুরু হয়ে গেছে লকডাউন ৩। আগামী ১৭ মে পর্যন্ত চলবে এই তালাবন্দি। কিন্তু এই তৃতীয় পর্যায়ে এসে বেশ কয়েকটি বিষয়ে ছাড় দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। তারই একটি নির্দেশিকা জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। কী রয়েছে সেই নির্দেশিকায়। আগেই স্বাস্থ্য মন্ত্রক গোটা দেশকে তিনটি জোনে ভাগ করেছে। লাল, সবুজ আর কমলা। প্রতিটি জোনের জন্য আলাদা নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে।
লকডাউন৩ কেন্দ্রীয় নির্দেশিকা:
১. লকডাউন ১ ও ২-এর মত লকডাউন ৩-এও আন্তর্জাতিক উড়ান পরিষেবা বন্ধ থাকবে। অন্তর্দেশীয় রেল, উড়ান ও সড়ক যোগাযোগও বন্ধ থাকবে
২. প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে তবেই রেল, বিমান ও সড়ক পথে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাওয়া যাবে।
৩. স্কুল, কলেজসহ সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে।
৪. হোটেল, রেস্তোঁরা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মল, সিনেমা হল, জিমনেসিয়াম ও স্টোর্টস কমপ্লেক্স বন্ধ রাখার কথাও ঘোষণা করা হয়েছে।
৫. ধর্মীয়, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সংস্কৃতিক সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
৬.সন্ধ্যে ৭টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত তিনটি জোনেই স্থানীয় বাসিন্দাদের অপ্রয়োজনে বাড়ির বাইরে বার হতে নিষেধ করা হচ্ছে। সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যে ৭টা পর্যন্ত প্রয়োজনে বাড়ির বাইরে বার হতে পারবেন স্থানীয়রা। তবে এই নিয়ম কনটাইনমেন্ট জোনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।
৭. গোটা দেশেই সবুজ আর কমলা জোনে সেলুন, স্পা, বিউটি পার্লার খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
৮. সবুজ আর কমলা জোনে ই-কমার্স কোম্পানি গুলি নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস ছাড়াও অন্যান্য জিনিস বিক্রি করতে পারবে। তবে লাল জোনের ক্ষেত্রে সেই অনুমতি দেওয়া হয়নি।
৯. আজ থেকে গোটা দেশেই তিনটি জোনেই মদের দোকান খোলার অনুমতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। তবে নিরাপদ শারীরিক দূরত্বসহ স্বাস্থ্য মন্ত্রকের নির্দেশ মেনে চলতে হবে বলেও জানান হয়েছে। তবে মল বা বাজারে অবস্থিত মদের দোকান খোলার অনুমতি দেওয়া হয়নি।
১০. বয়স্ক, শিশু ও গর্ভাবতী মহিলাদের বাইরে বার হওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তবে শুধুমাত্র স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কারণেই তাঁরা বাড়ির বাইরে বার হতে পারেন।
১১. নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখেই হাসপাতালের আউটডোর বিভাগ খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। খোলা যেতে পারেন মেডিক্যাল ক্লিনিকও।
১২. প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সীমান্ত বাণিজ্য সম্পূর্ণ রূপে বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
১৩. রেড জোনে রিক্সা অটো চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে। এই এলাকায় সেলুন, স্পাও খোলা যাবে না।
১৪. রেড জোনে চার চাকার গাড়ি চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে চালক ছাড়া গাড়িতে মাত্র ২ জন যাত্রী থাকতে পারবেন। মোটরবাইকে আরোহীকে একাই থাকতে হবে। অন্য কোনও যাত্রী নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি।
১৫. সবুজ আর কমলা জোনে পরিচারক, চালক ও সাফাই কর্মীদের কাজে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে রেজ জোনের ক্ষেত্রে আবাসিক কল্যাণ সমিতিগুলির অনুমোদনের পরেই এলাকায় প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
১৬. কনটাইনমেন্ট জোন ছাড়া সমস্ত এলাকায় শিল্পাঞ্চল খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
১৭. ৩টি জোনেই বেসরকার সংস্থার অফিস খোলা যেতে পারে। তবে রেড জোনের ক্ষেত্রে মাত্র ৩৩ শতাংশ কর্মীকেই অফিসে হাজিরার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। বাকিদের বাড়ি থেকে কাজের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
১৮. বাসগুলি মাত্র ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে যাতায়াত করতে পারবে
১৯. লাল ও কমলা জোনের মতই সবুজ জোনকেও অপ্রয়োজনীয় সমাবেশ থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
২০. সবুজ আর অরেঞ্জ জোনেও ক্যাব চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে সেখানেও চালক ছাড়া গাড়িতে মাত্র ২জন সওয়ারি থাকতে পারবেন।
কেন্দ্রীয় সরকারের এই নির্দেশিকা আগামী ১৭ মে পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। সূত্রের খবর, প্রয়োজনে নির্দেশিকা বদলও করতে পারে কেন্দ্রীয় সরকার।