আবার যুগান্তকারী সুপ্রিম-রায়। এবার নৌসেনায় মহিলাদের স্থায়ী কমিশন দিতে নির্দেশ শীর্ষ আদালতের।
ফেব্রুয়ারি মাসে স্থলসেনায় মহিলাদের স্থায়ী কমিশন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। একমাসের মাথায় আবারও এক যুগান্তকারী রায়। মঙ্গলবার দেশের শীর্ষ আদালত নৌসেনাতেও মহিলাদের স্থায়ী কমিশন দেওয়ার নির্দেশ দিল। এদিন আদালত, ভারতীয় সেনার নৌবাহিনীতে লিঙ্গবৈষম্য়ের বিরুদ্ধে খুব তাৎপর্যপূর্ণ এক মন্তব্য়ও করে, "মহিলারাও পুরুষের মতোই সমান দক্ষতায় পাড়ি দিতে পারে, তাই তাদের মধ্য়ে কোনও বৈষম্য় কাম্য় নয়"।
খুব সহজ করে বলতে গেলে, সেনাবাহিনীতে চাকরির দুরকম বন্দোবস্ত রয়েছে। একটি হল পার্মানেন্ট কমিশন আর অন্য়টি হল শর্ট সার্ভিস কমিশন। প্রথম ক্ষেত্রে অবসরের বয়সের আগে পর্যন্ত চাকরিতে বহাল থাকতে পারা যায়। আর দ্বিতীয় ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট বয়সের বেশি আর কাজ করা যায় না। মহিলাদের ক্ষেত্রে, কী স্থলসেনায় কী নৌসেনায়, এই শর্ট সার্ভিস কমিশনের ব্য়বস্থা ছিল। আর পুরুষদের ক্ষেত্রে চালু ছিল পার্মানেন্ট কমিশন।
সেনাবাহিনীতে মহিলাদের জন্য় এই শর্ট সার্ভিস কমিশনের ব্য়বস্থাকে অনেকেই বৈষম্য়মূলক বলে মনে করেছিলেন। তাই দীর্ঘদিনের এই রীতিকে চ্য়ালেঞ্জ করে মামলা সুপ্রিম কোর্ট অবধি গড়ায়। গত ফেব্রুয়ারি মাসে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এই লিঙ্গবৈষম্য়ের রায় দিয়ে স্থলসেনায় মহিলাদের পার্মানেন্ট কমিশনের জন্য় নির্দেশ দেয়। সেই সময়ে রায় পড়তে গিয়ে বিচারপতি কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করে বলেন, "নিজেদের কাজ করার জন্য় প্রত্য়েক সেনার শারীরিক যোগ্য়তা থাকা উচিত। সেনাবাহিনীতে মহিলাদের জায়গা ক্রমশ পাল্টাচ্ছে। কেন্দ্রের উচিত দিল্লি হাইকোর্টের রায়কে পালন করা।"
তার আগে স্থল, জল ও বিমানবাহিনীতে মহিলাদের জন্য় পার্মানেন্ট কমিশনের নির্দেশ দিয়েছিল দিল্লি হাইকোর্ট। তাকে চ্য়ালেঞ্জ করেই সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল কেন্দ্র। গত ফেব্রুয়ারির মতো এদিনও সুপ্রিম কোর্ট খুব স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়, "মহিলাদের পার্মানেন্ট কমিশন না-দেওয়া অন্য়ায়।" এই নির্দেশিকা পালনের জন্য় কেন্দ্রীয় সরকারকে তিনমাসের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে শীর্ষ আদালত।