নতুন নাগরিকত্ব আইনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ, পাকিস্তান আর আফগানিস্তান থেকে কেউ ধর্মীয় কারণে নিগৃহীত হয়ে এদেশে চলে এলে তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। সরকারপন্থীদের অভিযোগ, তা সত্ত্বেও বিরোধীরা এই আইনের বিরোধিতা করছেন। অন্য়দিকে বিরোধীদের অভিযোগ, দেশ থেকে সংখ্য়ালঘুদের তাড়াতেই তৈরি হয়েছে এই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন। দু-পক্ষের এই চাপানউতোরের মাঝেই খবর এল, পাকিস্তানে সংখ্যালঘু মেয়েদের অপহরণ করে ধর্মান্তরিত করার ঘটনা বেড়ে চলায় সেখানকার নেটিজেনরা সোশাল মিডিয়ায় সংগঠিত হচ্ছেন।
পাকিস্তানে সম্প্রতি মাহেক নামে এক হিন্দু নাবালিকাকে অপহরের পর জোর করে ধর্মান্তরিত করার অভিযোগ উঠেছে। সেইসঙ্গে দাবি করা হচ্ছে, সেখানে এই ঘটনা কিন্তু নতুন কিছু নয়, বরং তা ঘটেই চলেছে। জানুয়ারির ১৫ তারিখে সিন্ধের জাকোবাবাদ থেকে মাহেককে অপহরণ করা হয়। তারপর তাকে জোর করে ধর্মান্তরিত করা হয় বলে অভিযোগ।
সেখানকার স্থানীয় ও জাতীয় সংবাদমাধ্য়মগুলো যখন এই ধরনের ঘটনাগুলোকে এড়িয়ে যাচ্ছে, তখন আক্রান্ত সংখ্য়ালঘুরা পাকিস্তানের উদারপন্থীদের কাছে ঘটনাগুলো তুলে ধরতে চাইছেন সোশাল মিডিয়ায়। সম্প্রতি তাঁরা একটি ফেসবুক পেজ তৈরি করেছেন, পাকিস্তানি হিন্দুজ ইউথ ফোরাম নাম দিয়ে। এখনও পর্যন্ত তা ৩০হাজারের বেশি লাইক পেয়েছে। শনিবার সেই পাতায় একটি পোস্ট অনেকেরই চোখে পড়েছে-- পাকিস্তানি হিন্দুরা ধর্মীয় নিগ্রহের মুখে।
সম্প্রতি মাহেক কুমারী নামে ১৪ বছরের যে মেয়েটিকে অরহরণ করা হয়, তাকে আমরুত শরীফে দুজন মোল্লার সঙ্গে দেখা যায়। ওই মোল্লারা দাবি করেন যে, মেয়েটি আলি রাজা সোলাঙ্গির প্রেমে পড়ছে। ফেসবুক পোস্টে দাবি করা হয়েছে, ওই সোলাঙ্গি কিন্তু বিবাহিত আর তার একটি বাচ্চাও রয়েছে। একজন মজুর হিসেবে কাজ করে সে। এখন মেয়েটি ধর্মান্তরিত। কেউ কি বলতে পারবেন, একজন ব্য়বসায়ীর কন্য়া কীভাবে একজন অশিক্ষিত মজুরের প্রেমে পড়তে পারে? এক বিবাহিত যুবককে বিয়ে করার জন্য় নিজের বাড়িঘর, ধর্ম সবকিছু কীভাবে ছাড়তে পারে একজন মেয়ে?
অর্থাৎ, মেয়েটি যে প্রেমে পড়ে স্বেচ্ছায় বিয়ে করেনি সোলাঙ্গিকে, সে কথাই কার্যত বোঝানো হয়েছে ফেসবুক পোস্টে। সেইসঙ্গে দাবি করা হয়েছে, এমন ঘটনা কিন্তু বারবার ঘটেই চলেছে। আরও একটি পোস্ট চোখে পড়েছে। সেখানে একটি নামের তালিকা দিয়ে দাবি করা হয়েছে, এই-এই সংখ্য়ালঘু মেয়েদের অপহরণ করে ধর্মান্তরিত করা হয়েছে। ওই তালিকায় রয়েছে ৫০ জনের নাম। সেখানে সবার শেষে রয়েছে মাহেকের নাম।
শুধু এই পেজই নয়। সিন্ধি হিন্দু স্টুডেন্ট ফেডারেশন নামে আর একটি পেজ চালু হয়েছে সম্প্রতি, ওই একই উদ্দেশ্য়ে।