সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা সম্প্রতি স্যান্ডি দ্বীপের খোঁজে বেরিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে তাঁরা দেখেন, যেখানে স্যান্ডি দ্বীপটি থাকার কথা, সেখানটায় সাড়ে চার হাজার ফুটের বেশি গভীর জল।
কোনো লাগেজ, গাড়ি বা মোবাইল উধাও হওয়ার কথা আপনি নিশ্চয়ই অনেকবার শুনেছেন, কিন্তু কখনো কি কোনো দ্বীপ থেকে গায়েব হওয়ার কথা শুনেছেন। দ্বীপটি খুব ছোট নয়, রীতিমত ২২ কিলোমিটার দীর্ঘ। শুনে অবাক হবেন, তবে এই ঘটনাটিই ঘটেছে। আর এই গোটা একটা দ্বীপ গায়েব হওয়ার খবরে বেশ বিচলিত গবেষকরা। তাহলে পুরো বিষয়টি কি। চলুন জেনেনি।
গোটা দ্বীপ গায়েব, ব্যাপারটা কি
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই খবরটি স্যান্ডি দ্বীপের (Sandy Island)। বিশ্ব এই দ্বীপটিকে দুই শতাব্দী ধরে পৃথিবীর এক স্থলভাগের অংশ (22 km long Sandy island) বলে মনে করেছিলেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু বাস্তবে নাকি এই স্থলভাগ ছিলই না (suddenly disappeared)। প্রশান্ত মহাসাগরের মাঝখানে পাওয়া এই দ্বীপটির অস্তিত্ব ১৭৭৪ সালে গৃহীত হয়েছিল। দুই দশক ধরে মানুষ এই নামটি মুখে মুখে প্রচারও করেছিল, কিন্তু এখন রহস্য সামনে এসেছে যে এমন কোনও দ্বীপ নাকি ছিলই না।
বিশ্ব মানচিত্র, গুগল ম্যাপ এমনকি নাবিকদের ব্যবহূত মানচিত্রেও দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের বুকে ‘স্যান্ডি আইল্যান্ড’ নামের একটি লম্বাটে দ্বীপের খোঁজ পাওয়া যায়। আদৌ এ দ্বীপটির কোনো অস্তিত্ব আছে? সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার গবেষকেরা এ দ্বীপটির খোঁজে বের হয়ে একরাশ হতাশা নিয়ে ফিরেছেন। গুগল ম্যাপে অস্ট্রেলিয়া ও ফ্রেঞ্চ শাসিত নিউ ক্যালেডোনিয়ার সমুদ্রসীমায় এ দ্বীপটির অবস্থান নির্দেশ করা হলেও গবেষকেরা জানিয়েছেন, দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে স্যান্ডি দ্বীপের কোনো অস্তিত্বই নেই।
যিনি দাবি করেছেন
আসলে, এই দ্বীপটি ব্রিটিশ ক্যাপ্টেন জেমস কুক আবিষ্কার করেছিলেন বলে দাবি করেছিলেন। যদিও তখন এর নামকরণ করা হয়েছিল ফ্যান্টম আইল্যান্ডস ট্রুথ। কিছুদিন আগে পর্যন্ত এটি গুগল ম্যাপেও ছিল, পরে অনেক গবেষণার পর এটি নকল বলে ধরে নেওয়া হয়। এখন গুগল ম্যাপ থেকেও সরানো হয়েছে এই দ্বীপের নাম। তার পর থেকেই চলছে আলোচনা।
অনেক দেশের মানচিত্রে ছিল এর অস্তিত্ব
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্যাপ্টেন জেমস কুক দাবি করেছিলেন যে এই দ্বীপটি ২২ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং পাঁচ কিলোমিটার চওড়া। এটি অস্ট্রেলিয়ার উপকূলে ছিল বলে দাবি করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, ১৮৭৬ সালে ভেলোসিটি নামের একটি জাহাজও এই দ্বীপের অস্তিত্বের কথা বলেছিল। এটি উনিশ শতকে ব্রিটেন এবং জার্মানির মানচিত্রেও ছিল। এখন হঠাৎ করে উধাও হয়ে যাওয়ায় নানা কথা হচ্ছে।
সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা সম্প্রতি স্যান্ডি দ্বীপের খোঁজে বেরিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে তাঁরা দেখেন, যেখানে স্যান্ডি দ্বীপটি থাকার কথা, সেখানটায় সাড়ে চার হাজার ফুটের বেশি গভীর জল। গবেষক মারিয়া সেটন এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘গুগল আর্থ, বিশ্ব মানচিত্রসহ অন্যান্য মানচিত্রে এ দ্বীপটির অবস্থান দেখে সেখানে গিয়েছিলাম আমরা, অথচ সেখানে গিয়ে দেখি দ্বীপটি অদৃশ্য!’ বেশ কয়েকটি সংবাদপত্রে বলা হয়েছে, স্যান্ডি দ্বীপটির যদি অস্তিত্ব থাকে, তবে তা নিউ ক্যালেডোনিয়ার সমুদ্রসীমার মধ্যে থাকতে পারে। তবে ফ্রান্সের সরকারি মানচিত্রে তার উল্লেখ নেই।