বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড 'নাইকি'-র একটি ৪৮ বছরের পুরোনো এক জোড়া জুতো, বা বলা ভালো স্পোর্টস শু। জুতোজোড়ার অবস্থা মোটেই ভালো নয়। রঙও উঠে গিয়েছে। অথচ, নিলামে তারই দাম উঠল ৪ লক্ষ ৩৭ হাজার ৫০০ ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৩ কোটি ১২ লক্ষ টাকা)। আসলে এই জুতোগুলির ঐতিহাসিক মূল্য এর ব্যবহারিক মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি। নাইকির সহ-প্রতিষ্ঠাতা বিল বওয়ারম্যান নিজে এই জুতোটির নকশা তৈরি করেছিলেন। নকশা হয়েছিল কাগজের উপর এঁকে।
অনলাইনে নিউইয়র্কের এক বিখ্যাত নিলাম সংস্থা এই নিলাম আয়োজন করেছিল। শুরুতেই দর এসেছিল ভারতীয় মুদ্রায় ১ কোটি ১৪ লক্ষ টাকা। শেষে অবশ্য প্রায় ৩ কোটি ১২ লক্ষ টাকা দর হেঁকে বাজি হাসিল করেন ৬১ বছরের কানাডিয়ান ব্যবসায়ী মাইলস নাদাল। এতে করে গণ-নিলামে বিক্রি হওয়া স্পোর্টস শু-এর সর্বাধিক দামের রেকর্ড ভেঙে গিয়েছে।
নিলাম সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে 'এই জুতো তৈরির নেপথ্য়ের গল্পটি খুব আকর্ষণীয়। ১৯৭২ সালে, বওয়ারম্যান এই জুতোটি তৈরির জন্য বিভিন্ন উপকরণ ঘেঁটে দেখেছিলেন। কিন্তু, কিছুতেই কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারছিলেন না। শেষ পর্যন্ত, তিনি স্ত্রীর ওয়াফল (এক ধরণের বিদেশী খাদ্য) তৈরির মেশিনে রাবার দিয়ে শক্ত একটি জুতোর সোল তৈরি করেন। অলিম্পিক দৌড়বিদদের জন্য এই ধরণের মাত্র ১২টি জুতো তৈরি করা হয়েছিল।
কোটি টাকা খরচা করে জুতোটি কেনা নাদালের মতে, এটি শুধু অ্যান্টিক নয় একেবারে অনন্য। তিনি জানিয়েছেন এই জুতোটি তেমন একটি জুতো, যা স্পোর্টস শু-র ইতিহাসে খুব অল্প সংখ্যক তৈরি করা হয়েছিল। এটা একই সঙ্গে ক্রীড়া ইতিহাস এবং পপ সংস্কৃতির একটি ঐতিহাসিক নমুনা। পাশাপাশি, এর সঙ্গে নাইকি সংস্থার ইতিহাসও যুক্ত। তিনি আরও জানিয়েছেন, ওই নিলামে অ্যাডিডাস থেকে এয়ার জর্ডনের মতো অন্যান্য নামি সংস্থার প্রায় ১০০ জোড়া জুতো ছিল। কিন্তু সবগুলি ছেড়ে তিনি পাখির চোখ করেছিলেন ১৯৭২ সালে 'মুন শু' নামে তৈরি করা নাইকির এই জুতোজোড়াই।