ট্রেনের মধ্যে এক ভারতীয়কে বর্ণবিদ্বেষমূলক আক্রমণ করছিল এক কিশোরী। মাঝপথে ট্রেন থামিয়ে পত্রপাঠ তাকে নামিয়ে দিলেন ট্রেনের মহিলা কন্ডাক্টর। প্রতিবাদী ওই কন্ডাক্টর এখন রীতিমতো জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন গোটা নিউজিল্যান্ডে। সেদেশের প্রথমসারির সংবাদপত্র নিউজিল্যান্ড হেরাল্ডে এই খবর প্রকাশিত হয়েছে।
ওই পত্রিকার খবর অনুযায়ী, গত ৮ অগাস্ট এই ঘটনা ঘটে। ট্রেনটি আপার হাট থেকে ওয়েলিংটন রেল স্টেশনে। প্রতিবাদী ওই কন্ডাক্টরের নাম জে জে ফিলিপ।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান অনুযায়ী, ট্রেনের মধ্যেই ফোনে হিন্দিতে কারো সঙ্গে কথা বলছিলেন এক ভারতীয় পুরুষ যাত্রী। আর তা শুনেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে বছর ষোলর ওই কিশোরী। সে ওই ভারতীয় যাত্রীর উদ্দেশে চিৎকার করে বলতে থাকে, 'নিজের দেশে গিয়ে এই ভাষায় কথা বলুন। ওই ভাষা এখানে বলবেন না।'
কিশোরীর এহেন আচরণ দেখে ওই ভারতীয় যাত্রী-সহ কামরার অন্যান্য যাত্রীরা হকচকিয়ে যান। তাঁদের মধ্যেই একজন কন্ডাক্টরকে খবর দেন। দ্রুত ট্রেনের ওই কামরায় পৌঁছন তিনি। সবকিছু শোনার পরে ট্রেন থামিয়ে সটান ওই অভিযুক্ত কিশোরীকে ট্রেন থেকে নেমে যেতে বলেন ফিলিপ।
যদিও কন্ডাক্টরের কথায় প্রথমে ট্রেন থেকে নামতে চায়নি ওই কিশোরী। সে পরের স্টেশনে নেমে যাবে বলে দাবি করে। কিন্তু তার কোনও কথা শোনেননি ওই মহিলা কন্টাক্টর। মাঝরাস্তায় প্রায় কুড়ি মিনিট ট্রেন দাঁড় করিয়ে রাখেন তিনি। খবর দেন পুলিশেও। সাফ জানিয়ে দেন, কিশোরী না নামলে ট্রেন ছাড়বে না।
এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ওই কন্ডাক্টর কিশোরীকে বলেন,'তুমি যেই হও না কেন আমি কোনও কথা শুনতে রাজি নই। ট্রেন থেকে এখনই নেমে গিয়ে নিজের বাড়ির পথ ধরো।'
নিউজিল্যান্ডের সংবাদপত্রকে পরে ওই মহিলা কন্ডাক্টর বলেন, 'একটি কিশোরী কয়েকজন যাত্রীর উদ্দেশে গালিগালাজ করছিল। আমি সবার সঙ্গেই কথা বলি। যে যাত্রীকে গালিগালাজ করা হয়, তিনি নিজের কাজেই ব্যস্ত ছিলেন, কাউকে বিরক্তও করেননি। সবশুনে বোঝা যায় যে ওই কিশোরী বর্ণবিদ্বেষমূলক কথা বলেছে। আমরা এই ধরনের আচরণ সমর্থন করিনা। জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে যাত্রীদের নিরাপদে তাঁদের গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়াটাই আমাদের কর্তব্য।'