Afghanistan এ কেমন হবে নতুন তালিবানি জমানা, তারই কিছু তথ্য তুলে ধরলেন দলের নেতা। তিন তালিবান শীর্ষ নেতার কথাও বলেন তিনি।
আফগানিস্তানে কেমন করে তালিবানরাজ প্রতিষ্ঠা করা হবে- তারই একটি রুপোরেখা দিলেন প্রবীণ তালিবান নেতা। একটি কাউন্সিল গঠন করা হবে। সেই কাউন্সিলই শাসনভারের দায়িত্বে থাকবে। কাউন্সিলের মাথায় থাকবে হায়বাতুল্লাহ আখন্দুজাদ নামে দলের এক শীর্ষ নেতা। প্রবীণ তালিবান নেতা সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে একথা বলেছেন। অন্য একটি সূত্র বলছে তালিবান নেতা মোল্লা আবদুল ঘানি বরাদর আগামী দিনে তালিবান আর স্থানীয় সরকারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় মুখ্যভূমিকা পালন করবেন। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও আফগানিস্তান ইস্যুতে আলোচনায় বলেছিলেন।
অন্যদিকে তালিবানরা প্রাক্তন পাইলট ও সশস্ত্র আফগান বাহিনীর কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা শুরু হয়েছে। সেকথা মেনে নিয়েছেন প্রবীণ তালিবান নেতা ওয়াহিদুল্লাহ হাশিমি। তবে পরিকল্পনা কতটা সফল হবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কারণ গত ২০ বছর ধরে তালিবানদের সঙ্গে যুদ্ধে হাজার হাজার আফগান সৈন্য নিহত হয়েছিল। মার্কিনদের থেকে প্রশিক্ষণ পেয়েও আফগান সৈন্যরা তালিবানদের বিরুদ্ধে তেমনভাবে দাঁড়াতে পারেনি।
সূত্রের খবর হাশেমি ১৯৯৬-২০০১ সালে তালিবানরা যেভাবে আফগান শাসনভার পরিচালনা করেছিল সেই শাসনকাঠামোটি তুলে ধরতে চাইছেন। সেই সময় মোল্লা ওমরের নেতৃত্বে তালিবানরা আফগানিস্তানের নয়ন্ত্রক ছিল। হাশেমি বলেছেন আখন্দুজাদ সম্ভবত প্রেসিডেন্ট সমতুল্য কোনও পদে থাকবেন। হয়তো ডেপুটি প্রেসিডেন্টের ভূমিকাও পালন করতে পারেন।
তালিবানদের তিনজন নেতা রয়েছেন যাঁদের মোটের ওপর শীর্ষ স্থানীয় নেতা বলা যায়। প্রথমজন মোল্লা ওমরের ছেলে মৌলবি ইয়াকুব, দ্বিতীয়জন হাক্কানি জঙ্গি সংগঠনের নেতা সিরাজউদ্দিন হাক্কানি আর দোহায় তালিবানদের রাজনৈতিক কার্যালয়ের প্রধান আব্দুল ঘানি বরাদর। তিন জনই দলের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যও। আফগানিস্তানে তালিবান শাসনে এই তিন জনকে সামনের সারিতে দেখা যেতে পারে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
কীভাবে পরিচালনা করা হবে তা এখনও পর্যন্ত স্থির হয়নি। তবে আফগানিস্তানে গণতন্ত্র যে ফিরবে না তা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন সিনিয়র তালিবান নেতা হাশিমি। তিনি বলেন আফগানিস্তানে কোনও রকম গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা থাকবে না। কারণ এই দেশে গণতন্ত্রের কোনও ভিত্তি নেই। আফগানিস্তানে কোনও রকম রাজনৈতিক ব্যবস্থাও প্রয়োগ করা হবে না। এই নিয়ে আগামী বৈঠকে কোনও আলোচনা হবে না বলেও জানিয়েছেন তিনি। সপ্তাহ শেষেই তালিবানদের একটি বৈঠক রয়েছে। সেই বৈঠকে যোগ দেবেন তিনি। সেই বৈঠকেই আগামী দিনে আফগান শাসনের বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
হাশিমি জানিয়েছেন তালিবানরা একটি নতুন জাতীয় বাহিনী গঠনের পরিকল্পনা নিয়েছে। সেই বাহিনীতে তালিবান সদস্যদের পাশাপাশি আফগান সরকারের সৈন্যরাও চাইলে যোগ দিতে পারবে। তবে তুরস্ক, জার্মানি আর ইংল্যান্ড থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সেনাদের বাড়তি সুবিধে দেওয়া হতে পারে। এই নিয়ে সেনাদের সঙ্গে কথা বলা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। সেনা বাহিনীতে কিছু সংস্কার হবে ।
হাশিমি স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন তাঁদের সঙ্গে অনেক আফগান সেনা আর বিমান চালকদের যোগাযোগ রয়েছে। আগামীদিনে তাঁদের কাজে যোগ দিতে বলা হবে। তবে আফগানিস্তানের বিমান, যেগুলি বিদেশের মাটিতে অবতরণ করেছিল সেগুলি ফিরিয়ে দেওয়ার জন্যও আবেদন করেছেন তিনি।