কাবুলে ঢুকে পড়ল জইশ-লস্কর-আইএস জঙ্গিরাও, তালিবানদের সঙ্গে হতে পারে মুখোমুখি সংঘর্ষ

গত কয়েকদিনে তালিবানি পতাকা হাত কাবুলে প্রবেশ করেছে ইসলামিক স্টেট, জইশ-ই-মহম্মদ এবং লস্কর-ই-তৈবার বিপুল সংখ্যক সন্ত্রাসবাদী। তালিবানদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষে আবার হিংসা ছড়াতে পারে আফগানিস্তানে। 
 

Asianet News Bangla | Published : Aug 17, 2021 8:59 AM IST / Updated: Aug 17 2021, 04:51 PM IST

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শান্তিচুক্তি করার সময় তালিবানরা কথা দিয়েছিল, আফগানিস্তানে কোনও সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীকে আশ্রয় নিতে এবং সেখান থেকে জঙ্গি কার্যক্রম চালিয়ে যেতে দেওয়া হবে না। কিন্তু, দ্য হিন্দুর পোর্টালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, কাবুলের একটি সূত্র দাবি করেছে গত কয়েকদিনে তালিবানদের সঙ্গেই আফগান রাজধানীতে প্রবেশ করেছে ইসলামিক স্টেট (IS), জইশ-ই-মহম্মদ (JEM) এবং লস্কর-ই-তৈবা (LET)-এর বিপুল সংখ্যক সন্ত্রাসবাদী। তাদের হাতে তালিবানদের পতাকা থাকলেও, তালিবান নেতৃত্ব এই বিদেশী সন্ত্রাসবাদীদের দের উপস্থিতি সম্পর্কে অবগত, এমনটাই জানিয়েছে ওই ,সূত্র। তবে, তাদের উপর তালিবানদের কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই।

তবে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ বলেই অনেকেই এখনও আশা করছেন, আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই কাবুল থেকে এই সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলোকে উচ্ছেদ করবে তালিবানরা। দোহায় অবস্থিত তালিবান রাজনৈতিক কার্যালয়ের ঘনিষ্ঠ এক আফগান মানবাধিকার কর্মী জানিয়েছেন, বিদেশি জঙ্গিরা যাতে কাবুলে ঘাঁটি গাড়তে না পারেন, তার জন্য ইতিমধ্যেই সচেষ্ট তালিবান নেতৃত্ব। আফগানিস্তান থেকে তিনি জানিয়েছেন, তালিবান বিদেশী জঙ্গিদের আফগানিস্তান ত্যাগ করার আদেশ দিয়েছে এবং সাফ জানিয়ে দিয়েছে এই আদেশ মানতেই হবে। ওই আফগান মানবাধিকার কর্মী অবশ্য আশঙ্কা করছেন, তালিবান নেতৃত্বের নির্দেশ লঙ্ঘন করে এই বিদেশী ইসলামী জঙ্গিগোষ্ঠীগুলি তাদের নিজস্ব কার্যক্রম শুরু করে দিতে পারে। 

ফলে, আগামী কয়েকটা দিন নয়া তালিবানি শাসনের আফগানিস্তানের ভবিষ্যত নির্ধারণের জন্য দারুণ গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। পাকিস্তানের কোয়েটা শহর থেকে ইতিমধ্য়েই কাবুলে এসে পড়েছেন, তালিবান গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা মরহুম মোল্লা ওমরের পুত্র মোল্লা ইয়াকুব। তিনি তালেবান বাহিনীর 'চিফ অব অপারেশনস' অর্থাৎ সামরিক প্রধান বলা যায়। আশা করা হচ্ছে, তিনি শীঘ্রই কাবুলে তালিবানি শাসন জোরদার করার কাজ শুরু করবেন। তালিবানি যোদ্ধারা সামরিকভাবেও তাদের অপসারণের চেষ্টা করতে পারে। সেইক্ষেত্রে, এই সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলি এবং তালিবান যোদ্ধাদের মধ্যে সংঘর্ষের আরেকদফায় আফগানিস্তানে হিংসা ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে।

আসলে, আপাতত তালিবানরা, তাদের দুই দশক আগের চরমপন্থী তকমা মুছে, আন্তর্জাতিক মহলে একটি দায়িত্বশীল রাজনৈতিক গোষ্ঠী হিসাবে নিজেদের তুলে ধরতে চাইছে। পরবর্তী আফগান সরকার গঠনের জন্য তারা ইতিমধ্যেই প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই, আফগানিস্তানের সাবেক সিইও আবদুল্লা আবদুল্লা, হিজব-ই-ইসলামির প্রধান গুলবুদ্দিন হেকমতিয়ার এবং তাজিক নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। কাবুল বিমানবন্দর এখনও মার্কিন সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকায়, কাতার থেকে তালিবানদের রাজনৈতিক নেতৃত্ব এখনও দেশে ফিরকতে পারেনি। তারা আসলেই সরকার গঠনের কাজ শুরু হবে। তার আগে নিজেদের ভাবমূর্তি স্বচ্ছ রাখতে মরিয়া তারা। কাবুলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাটাই তাদের প্রাথমিক চ্যালেঞ্জ। প্রথম রাতেই বেড়াল মারতে না পারলে, কাবুল এবং আফগানিস্তানের অন্যান্য শহরে বিচ্ছিন্ন এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিতে পারে এই সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলি, এমনটাই মনে করছে তারা। 
 

Share this article
click me!