পেরিয়েছে ৭৭টা বছর, খোঁজ মিলল আনা ফ্রাঙ্কের সেই ‘বিশ্বাসঘাতকের’

Published : Jan 18, 2022, 10:50 AM ISTUpdated : Jan 18, 2022, 11:08 AM IST
পেরিয়েছে ৭৭টা বছর, খোঁজ মিলল আনা ফ্রাঙ্কের সেই ‘বিশ্বাসঘাতকের’

সংক্ষিপ্ত

বিশ্বযুদ্ধের পর কেটে গিয়েছে ৭৭ বছর। নাৎসি বাহিনীকে কারা আত্মগোপন করে থাকা আনার পরিবারের খোঁজ দিয়েছিল সেই তথ্য উঠে এসেছে তদন্তের মাধ্যমে। এই ঘটনার তদন্তকারী দলে রয়েছেন মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের কর্মকর্তা থেকে শুরু করে ইতিহাসবিদ ও বিশেষজ্ঞরা। 

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সবথেকে বেশি আলোচিত হয়েছিলেন ইহুদি কিশোরী আনা ফ্রাঙ্ক (Anne Frank)। ১৯৪৫ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে এক নাৎসি শিবিরে বন্দি অবস্থায় মৃত্যু হয়েছিল তাঁর। তার আগে পরিবারের সঙ্গে গোপন জায়গাতে ছিলেন তিনি। আনার মৃত্যুর ৬ মাস আগে তাঁদের পরিবারের হদিশ পেয়েছিল নাৎসি (Nazi) বাহিনী। তারপরই নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডামের (Amsterdam) যে জায়গায় তাঁরা আত্মগোপন করেছিলেন সেখান থেকে তাঁদের ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বন্দি শিবিরে। কিন্তু, কীভাবে তাঁদের খোঁজ পেয়েছিল নাৎসি বাহিনী? তা অবশ্য এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি। তবে কে বা কারা আনার পরিবারের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা (Betrayal) করেছিল সেই বিষয়টি সম্প্রতি সামনে এসেছে। 

বিশ্বযুদ্ধের (World War) পর কেটে গিয়েছে ৭৭ বছর। নাৎসি বাহিনীকে কারা আত্মগোপন করে থাকা আনার পরিবারের খোঁজ দিয়েছিল সেই তথ্য উঠে এসেছে তদন্তের মাধ্যমে। এই ঘটনার তদন্তকারী দলে রয়েছেন মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের কর্মকর্তা থেকে শুরু করে ইতিহাসবিদ ও বিশেষজ্ঞরা। আনার পরিবারের বিশ্বাসঘাতকের খোঁজ করার জন্য তদন্ত শুরু করেছিলেন তাঁরা। আর সেই তদন্ত করতে গিয়ে অনেকটা সময় কেটে গিয়েছে তাঁদের। বিশ্বাসঘাতককে খুঁজে বের করতে সময় লেগেছে প্রায় ৬ বছর। বহু পুরোনো এই ঘটনার তদন্তের জন্য তাঁরা নির্ভর করেছিলেন বিভিন্ন অত্যাধুনিক প্রযুক্তির উপর। 

আরও পড়ুন- আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাত থেকে ভয়াবহ সুনামি, বাকি বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন টোঙ্গা

তদন্তের শেষে এফবিআইয়ের কর্মকর্তা ভিন্স প্যানকো জানিয়েছেন আরনল্ড ভ্যান ডেন বার্গ নামে এক ইহুদি ব্যক্তি আনার পরিবারের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিলেন। আর তার ফলেই নাৎসি বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে গিয়েছিল আনার পরিবার। তদন্তে জানা গিয়েছে, নাৎসিদের হাত থেকে নিজের পরিবারকে বাঁচাতেই হয়তো আনা ও তাঁর পরিবারকে ধরিয়ে দিয়েছিলেন ভ্যান ডেন বার্গ।

ভ্যান ডেন বার্গ ছিলেন আমস্টারডামের ইহুদি কাউন্সিলের সদস্য। ইহুদি অধ্যুষিত এলাকাগুলোয় নাৎসি নীতি বাস্তবায়ন করতে বাধ্য করা হয়েছিল কাউন্সিলকে। কিন্তু, ১৯৪৩ সালে সেই কাউন্সিল বিলুপ্ত করা হয়। আর সেই কাউন্সিলের বিভিন্ন সদস্যকে পাঠানো হয়েছিল নাৎসিদের বিভিন্ন বন্দি শিবিরে। এদিকে সেই বন্দি শিবিরে গিয়ে কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়নি ভ্যান ডেন বার্গকে। তাঁর পরিবারের সদস্যরা আমস্টারডামে স্বাভাবিক জীবন কাটিয়েছিলেন। নাৎসি বাহিনীর হাতে বন্দি হওয়ার কঠিন পরিস্থিতির সাক্ষী ছিলেন না তিনি বা তাঁর পরিবারের কোনও সদস্যই। 

ভ্যান ডেন বার্গ কেন বিশ্বাসঘাতকতা করেছিলেন সে প্রসঙ্গে সিবিএসের সিক্সটি মিনিটস অনুষ্ঠানে এফবিআই কর্তা বলেন, "বন্দিশিবিরে যাওয়া এড়াতে ভ্যান ডেন বার্গের সব সুরক্ষা হাতছাড়া হয়ে যায়। নিজের ও স্ত্রীর নিরাপত্তার জন্যই এমনটি করেছিলেন তিনি। এক ইহুদি যে আর এক ইহুদির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারে কা মানতেই পারছিলাম না। তারপর তদন্তে জানা যায় যে আনার বাবা ওটো ফ্রাঙ্ক বিশ্বাসঘাতকের সম্পর্কে জানতেন। কিন্তু, বিষয়টি তিনি চেপে গিয়েছিলেন। এ নিয়ে আগের তদন্তকারীদের নথিপত্রে বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যায়। দেখা গিয়েছিল যে, ওটো ফ্রাঙ্কের কাছে পরিচয়হীন একটি চিরকুট এসেছিল। ভ্যান ডেন বার্গই যে বিশ্বাসঘাতক, তা জানিয়ে দিতেই ওই চিরকুট পাঠানো হয়েছিল।"

আরও পড়ুন- আবুধাবি বিমানবন্দরে ড্রোন হামলা, দায় স্বীকার হুথি'দের

তারপরই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে যে ওটো ফ্রাঙ্ক যদি বিশ্বাসঘাতকের কথা আগে থেকেই জানতেন তাহলে কেন সেকথা প্রকাশ্যে আনেননি? এ প্রসঙ্গে তদন্তকারীদের তরফে জানানো হয়েছে, এর পিছনে ইহুদিবিদ্বেষের কারণ থাকতে পারে। আনার বাবা ভেবেছিলেন বিশ্বাসঘাতকের নাম প্রকাশ করলে তা শুধু আগুনে ঘিই ঢালবে। যাই হোক এই ঘটনার কয়েক বছর পর ১৯৫০ সালে মৃত্যু হয় ভ্যান ডেন বার্গের। 

১৯৪৪ সালে আনা ও তাঁর পরিবারকে গ্রেফতার করেছিল নাৎসি বাহিনী। তারপর আনাকে পাঠানো হয়েছিল ওয়েস্টারবর্কের শিবিরে। তারপর সেখান থেকে তাঁকে নেওয়া হয় জার্মানিতে নাৎসি বাহিনীর বার্গেন-বেলসেন শিবিরে। সেখানেই ১৯৪৫ সালে মৃত্যু হয়েছিল আনার। মৃত্যুর প্রায় দু'বছর পর আনার লেখা ডায়েরি হাতে পেয়েছিলেন তাঁর বাবা। অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল সেই ডায়েরি। প্রথম সেটি বই হিসেবে প্রকাশিত হয় ১৯৪৭ সালে। গোটা বিশ্বে সাড়া ফেলে দিয়েছিল ওই ডায়েরি। সেই ডায়েরি থেকেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে ইহুদিদের করুণ পরিস্থিতি সম্পর্কে জানা যায়। 

PREV
click me!

Recommended Stories

বিস্ফোরক বা মাদক আছে বলে সন্দেহ, লন্ডনে মহসিন নকভির গাড়ি তল্লাশি পুলিশের
LIVE NEWS UPDATE: 'ক্রিকেটের চেয়ে অন্য কোনও কিছুকে বেশি ভালোবাসি না,' বার্তা স্মৃতি মন্ধানার