টানা ১৫ বছর বাংলাদেশের ক্ষমতায় ছিলেন শেখ হাসিনা। বিশেষজ্ঞদের দাবি হাসিনার আমলে দুর্দান্ত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছিল বাংলাদেশের অর্থনীতি। যারমধ্যে ২০১১ সাল থেকে ১৯ সাংল পর্যন্ত একটানা ৬ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছিল বাংলাদেশের ডিজিপি। ২০১৬ সালের পরে দেশের মূল্যবৃদ্ধির হাস নেমে গিয়েছে ৬ শতাংশের নিচে। ২০১১ সালের তুলনায় ২০১৯ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় দ্বিগুণ হারে বেড়ে হয়েছিল ২.১৫৪ মার্কিন ডলার। কিন্তু ধাক্কা খায় কোভিড মহামারির সময়। তবে করানোকাল থেকে শেখ হাসিনার হাত ধরে ২০২৪ সালে অনেকটাই ঘুরে দাঁড়িয়েছিল বাংলাদেশের অর্থনীতি। কিন্তুএবার নতুন আশঙ্কা শুরু হয়েছে। মুডি'সএর প্রতিবেদন অনুযায়ী এবার আবারও বড় সমস্যার মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে বাংলাদেশের অর্থনীতি।
সম্প্রতি বাংলাদেশে বাংলাদেশি টাকার দাম, মাথা পিছু আয় , বৈদেশিক মুদ্রার ভাণ্ডার - সবই কমছিল। সেই সঙ্গে দ্রুত হারে বাড়ছিল মুদ্রাস্ফীতি আর বেকারত্ব। তাতেই বাংলাদেশের অর্থনীতির টালমাটাল অবস্থা তৈরি হতে পারে বলেও আশঙ্কা করছে মুডি'স।
হাসিনার বিদায়ের কয়েক দিন আগে থেকেই সে দেশে শুরু হয়েছিল শিক্ষার্থীদের কোটা বিরোধী বিক্ষোভ। সেই সময়ই , জুলাই মাসেই অনির্দিষ্টকালের জন্য কার্ফু জারি করা হয়েছিল। বন্ধ হয়ে গিয়েছিল কলকারখানা, দোকানপাট। যার প্রভাব সরাসরি পড়েছিল অর্থনীতির ওপর। এই অবস্থায় সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে আন্দোলন থিতিয়ে যায়। কিন্তু কিন্তু তার কয়েক দিন পরে হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে নতুন করে আন্দোলন শুরু হয়। এই অবস্থায় গত ৫ অগাস্ট ক্ষমতাচ্যুত হন হাসিনা। দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন। তারপর দিনই বাংলাদেশ থেকে কার্ফু প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। কিন্তু তারপর দেশজুড়ে শুরু হয় নৈরাজ্য। এই পরিস্থিতি কোভিড মহামারির সময়ের মত পরিস্থিতি তৈরি করেছে বলেও দাবি করেছে মুডি'স প্রতিবেদন।
প্রতিবেদনে আগে বলা হয়েছে, চলতি আর্থিক বছরে বাংলাদেশের জিডিপি বৃদ্ধির হার ৫.৪ শতাংশের মত থাকবে। কিন্তু সম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে জিডিপি বৃদ্ধির হার আরও কমে গিয়ে হবে ৫.১ শতাংশ।
প্রতিবেদন আরও আশঙ্কা করা হয়েছে,'আমরা আপাত এই বছরের জন্য বাংলাদেশের জিডিপি বৃদ্ধির পূর্বাভাস আগের ৫.৪ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫.১ শতাংশে সংশোধন করেছি। এটি একটি অস্থায়ী চিত্র, যা রাজনৈতিক , সামাজিক, অর্থনৈতিক পরিস্থিতির ওপর নির্ভরশীল।'
হাসিনা পদত্যাগের তিন দিনের মাখায় অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম মহম্মদ ইউনুস। তিনি অর্থনীতিবিদ। তাই বাংলাদেশের অর্থনীতির হালও তাঁর কাছে গোপন নয়। অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা হয়েছেন বাংলাদেশের ব্যাঙ্কের গভর্নর, সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি শনিবারই বলেছেন, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে পথে নিয়ে আসা , ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থায় সাধারণ মানুষের আস্থা ফেরানই তাঁর প্রধান লক্ষ্য। তিনি আরও বলেছেন বাংলাদেশকে স্বাভাবিক করাই তাঁর প্রধান লক্ষ্য । অর্থনীতি থেমে গেলে তা বিপজ্জনক হবে। তাই অর্থনীতি থেমে যেতে দেওয়া হবে না।
তবে কোন পথে বাংলাদেশের অর্থনীতি সচল করা হবে তা স্পষ্ট নয়। কিন্তু বর্তমানে পাকিস্তানের নেতারাই স্বীকার করে নিয়েছেন, তাদের অর্থনৈতিক স্থবিরতার কারণই হল অর্থনৈতিক বিপর্যয়। অর্থনৈতিক স্থবিরতার কারণে পাকিস্তান বর্তমানে ভিখারি হয়ে গেছে। বাংলাদেশের অর্থনীতি থেমে থাকলে তাদেরও সেই পরিণতি হতে পারে।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।