পুলিশের মতে, প্রতিবাদের সময় বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার ওপর গেরুয়া পতাকা উত্তোলন করা রাষ্ট্রদ্রোহ। মামলা দায়ের এই ঘটনার পর চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করা হয়।
হিন্দু সম্প্রদায়ের বিশিষ্ট ধর্মীয় নেতা ইসকন ট্রাস্ট সম্পাদক চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়েরের পর বাংলাদেশে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এ ঘটনার পর হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। অনেকে মনে করেন যে এই কাজটি হিন্দু নেতাদের দমন এবং তাদের ধর্মীয় অধিকার সীমিত করার একটি প্রচেষ্টা। বাংলাদেশে হিন্দু সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ইতিমধ্যেই অনেক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে এবং এই ঘটনা তাদের নিরাপত্তা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বেগ বাড়িয়েছে।
পুরো বিষয়টি কী?
হিন্দু সম্প্রদায়ের অধিকার ও নিরাপত্তার জন্য ২৫ অক্টোবর ২০২৪ সালে চট্টগ্রামে সনাতন জাগরণ মঞ্চ কর্তৃক একটি সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এই সমাবেশে তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগ রয়েছে। পতাকা বিতর্ক সমাবেশে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার উপরে গেরুয়া পতাকা উত্তোলনের অভিযোগ ওঠে, যা জাতীয় পতাকার অবমাননা বলে বিবেচিত হয়। পুলিশের মতে, প্রতিবাদের সময় বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার ওপর গেরুয়া পতাকা উত্তোলন করা রাষ্ট্রদ্রোহ। মামলা দায়ের এই ঘটনার পর চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করা হয়। গ্রেফতার ঢাকার গোপন পুলিশ কর্মকর্তারা তাকে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করে।
বাংলাদেশে হিন্দু ধর্মের উপর বিপদ ডেকে আনছে
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশে হিন্দু সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনা বেড়েছে। এর মধ্যে রয়েছে মন্দিরে হামলা, সম্পত্তি ভাংচুর এবং ধর্মীয় নেতাদের গ্রেপ্তার। চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেফতার করায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে ভয় ও নিরাপত্তাহীনতা বেড়েছে। এতে ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এসব ঘটনা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে যারা বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষায় সরকারের কাছে দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছে।
বাংলাদেশে ইসকনের ৭৭টিরও বেশি মন্দির রয়েছে যা হিন্দু ধর্ম প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেফতার ও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে গভীর ক্ষোভ ও উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য সরকার একটি নিরপেক্ষ তদন্ত পরিচালনা করে সংখ্যালঘুদের অধিকার সুরক্ষা নিশ্চিত করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের ঘটনা দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা সুষ্ঠু তদন্ত করে সংখ্যালঘুদের অধিকার সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। বাংলাদেশ সরকার আশ্বস্ত করেছে যে তারা সকল নাগরিকের অধিকার রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং কোন প্রকার সাম্প্রদায়িক সহিংসতা সহ্য করবে না। যাইহোক, মাটিতে পরিস্থিতির উন্নতির জন্য দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়া দরকার যাতে সমস্ত সম্প্রদায়ের মধ্যে আস্থা ও নিরাপত্তার অনুভূতি থাকে।