বহু বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তা আইন পাস করার পর অবশেষে হংকংয়ে নিরাপত্তা বিষয়ক নতুন অফিস খুলল চিন। অস্থায়ীভিত্তিতে কজওয়ে বে-র একটি মেট্রোপার্ক হোটেলে খোলা হয়েছে নতুন অফিস।
হংকং-এ ভিক্টোরিয়া পার্কের পাশে রয়েছে একটি বাণিজ্যিক এলাকা। এখানেই গণতন্ত্রপন্থিদের প্রতিবাদ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এই জায়গাকেই আপাতত নিরাপত্তা সংস্থাগুলির নতুন সদরদফতরের জন্য বেছে নিল বেজিং প্রশাসন। বুধবার সকালে অফিসটির উদ্বোধন হয়। উপস্থিত ছিলেন হংকংয়ের বেইজিংপন্থি প্রধান নির্বাহী ক্যারি লাম, ঝেং ইয়ানসিয়ং। এই অফিসের দায়িত্বে থাকথেন ঝেং ইয়ানসিয়ং।
আরও পড়ুন: গালওয়ানে তাঁবু গুটিয়ে ফেলল লালফৌজ, উপগ্রহ চিত্রে ধরা পড়ল অস্থায়ী শিবির ভাঙার ছবিও
চিনের সরকারি সংবাদসংস্থা শিনহুয়া জানিয়েছে, ''সেন্ট্রাল পিপলস গভর্নমেন্টের জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হংকং-এর বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চলে অফিস খোলা হয়েছে।'' অফিসটি উদ্বোধন করার পর বাইরে উড়িয়ে দেওয়া হয় চিনা পতাকা।
হংকং সরকারের প্রতিনিধি ও পুলিশ কর্তাদের উপস্থিতিতে নিরাপত্তা সংস্থার নামফলক হোটেলে লাগানো হয়েছে। কোনও রকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে মোতায়েন করা হয়েছে বোম নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিট সহ ভারি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এর ফলে মূল চিনা ভূখন্ডের নিরাপত্তা বিষয়ক কর্মকর্তা বা এজেন্টরা প্রথমবারের মতো হংকংয়ের কেন্দ্রস্থলে কাজ করবে। হংকংকে নিজের নিয়ন্ত্রণে নেয়ার যেসব উদ্যোগ নিয়েছে চিন তার মধ্যে প্রথম উদ্যোগ এটাই।
গত সপ্তাহে বেজিং এই নতুন নিরাপত্তা আইন চালু করেছে। যে আইনে দেশদ্রোহ, সন্ত্রাসবাদ, বিদেশি শক্তির সঙ্গে হাত মিলিয়ে হংকং-এর ক্ষতি করার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু মানবাধিকার সংগঠন, বিক্ষোভকারীদের দাবি, আসলে এই আইন করা হয়েছে প্রতিবাদরুখতে। বলা হচ্ছে, এর ফলে হংকংয়ের মানুষ যেটুকু স্বাধীনতা ভোগ করতেন তার ইতি ঘটবে। কিন্তু চীনা কর্মকর্তাদের দাবি এতে সেখানে সহিংস বিক্ষোভের পর স্থিতিশীলতা ফিরবে।
সাম্প্রতিক সময়ে হংকং যে ভাবে একের পর এক বিক্ষোভে উত্তাল হয়েছে, চিন তা বরদাস্ত করতে রাজি নয়। সে জন্যই এই আইন চালু করে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ বন্ধ করার চেষ্টা করছে বেজিং প্রশাসন। এই আইন অনুসারে চীনের নিরাপত্তা সংস্থাগুলি হংকং-এ কাজ করবে। এবং তাদের দাবি মতো জাতীয় নিরাপত্তার বিরুদ্ধে যাঁরা কাজ করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে শাস্তি দেওয়া হবে।
ইতিমধ্যে এই আইন নিয়ে ব্রিটিশ যুক্তরাজ্য সহ ইউরোপের দেশগুলি উদ্বিগ্ন। তার প্রভাবও পড়তে শুরু করেছে। জনপ্রিয় মোবাইল অ্যাপ টিকটক সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এই নিরাপত্তা আইনের প্রতিবাদে তারা হংকং থেকে চলে যাবে। মনে করা হচ্ছে, আমেরিকাকে খুশি করার জন্যই টিকটক হংকং ছাড়ছে। তবে তারা একা নয়, হংকং এর বহু সংস্থাই চিনের এই নিরাপত্তা আইন নিয়ে অখুশি।