বেসরকারি হাসপাতালের একজন সিনিয়র মেডিকেল অফিসার জানিয়েছেন, অন্তত আটজন মারা গেছেন এবং ২২ জন আহত হয়েছেন বিস্ফোরণে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের একজন মুখপাত্র বলেছেন, তদন্তকারী আধিকারিকদের দল বিস্ফোরণস্থলে আহতদের সাহায্য করতে এবং হতাহতের সংখ্যা নিয়ে রিপোর্ট তৈরি করেছে।
শনিবার আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের একটি ব্যস্ত শপিং স্ট্রীটে একটি বোমা বিস্ফোরণে অন্তত ৮ জন নিহত এবং ২২ জন আহত হয়েছে। স্থানীয় হাসপাতালে আহতদের ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের কর্মকর্তা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন বিস্ফোরণটি শহরের পশ্চিমাঞ্চলীয় একটি জেলায় হয় যেখানে সংখ্যালঘু শিয়া মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ নিয়মিত যাতায়াত করেন। মূলত তাদের টার্গেট করেই এই বিস্ফোরণ বলে খবর। ইতিমধ্যেই সুন্নি মুসলিম জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট, হামলার দায় স্বীকার করেছে। নিজস্ব টেলিগ্রাম চ্যানেলে বার্তা দিয়ে আই এস বলেছে এই তথ্য।
একটি বেসরকারি হাসপাতালের একজন সিনিয়র মেডিকেল অফিসার জানিয়েছেন, অন্তত আটজন মারা গেছেন এবং ২২ জন আহত হয়েছেন বিস্ফোরণে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের একজন মুখপাত্র বলেছেন, তদন্তকারী আধিকারিকদের দল বিস্ফোরণস্থলে আহতদের সাহায্য করতে এবং হতাহতের সংখ্যা নিয়ে রিপোর্ট তৈরি করেছে।
অনলাইনে পোস্ট করা ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে অ্যাম্বুলেন্সগুলো ঘটনাস্থলে ছুটে আসছে। উল্লেখ্য, ইসলামিক স্টেট আফগানিস্তানের কোনো ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণ করে না তবে তাদের স্লিপার সেল রয়েছে যা আফগানিস্তানে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের পাশাপাশি ক্ষমতাসীন তালেবানদের ওপরেও হামলা করছে।
দুই দশকের বিদ্রোহের পর গত বছরের আগস্টে আফগানিস্তানের দখল নেয় সুন্নি মুসলিম তালিবান। তালিবানদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে এবার থেকে তারা শিয়া মসজিদ এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাগুলির জন্য আরও সুরক্ষা দেবে।কাবুলের একজন শিয়া ধর্মীয় পণ্ডিত সাইয়েদ কাজুম হোজাত বলেছেন, তালেবান সরকার নিরাপত্তা জোরদার করেছে কিন্তু সতর্কতা বাড়াতে হবে।
কোনো আপ-টু-ডেট আদমশুমারির তথ্য নেই, তবে অনুমান অনুযায়ী শিয়া সম্প্রদায়ের আকার ৩৯ মিলিয়ন। অর্থাৎ তা জনসংখ্যার দশ থেকে ২০ শতাংশ এর মধ্যে রয়েছে, যার মধ্যে ফার্সি-ভাষী তাজিক এবং পশতুন এবং সেইসাথে হাজাররা রয়েছে। উল্লেখ্য জুলাই মাসের শেষের দিকেই কাবুলের কাবুল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শপেজেজা ক্রিকেট লিগ টি-টোয়েন্টি চলাকালীন আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটে। সব খেলোয়াড়কে একটি বাঙ্কারের ভেতরে নিয়ে যাওয়া হয়। ব্যান্ড-ই-আমির ড্রাগনস এবং পামির জালমির মধ্যে একটি ম্যাচ চলাকালীন বিস্ফোরণটি ঘটে। হামলার সময় স্টেডিয়ামে রাষ্ট্রসঙ্ঘের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মে মাসে, এই বছরের সবচেয়ে মারাত্মক হামলার মধ্যে একটিতে, কাবুল এবং উত্তরের শহর মাজার-ই-শরিফকে কেঁপে ওঠা চারটি বিস্ফোরণে ১৪ জন নিহত এবং ৩২ জন আহত হয়েছিল। কাবুলে সন্ধ্যার নামাজের সময় একটি মসজিদে বিস্ফোরণে পাঁচ মুসলমান নিহত এবং ১৭ জন আহত হয়েছেন। সিনহুয়া বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, হজরত-ই-জেকরিয়া মসজিদে লোকেরা যখন নামাজ পড়ছিল তখন বিস্ফোরণ ঘটে।