নতুন করে এই মারাত্মক কাশির রোগ ফিরে আসা নিয়েই এখন আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে গোটা ব্রিটেন।
করোনার প্রকোপ কেটে গিয়ে গড়িয়েছে মাত্র একটি বছর, তার মধ্যেই ব্রিটেনে ভয়ঙ্করভাবে বাড়তে শুরু করেছে কাশির উপদ্রব। আর, এই উপদ্রব শুরু হলে এক কিংবা দু' সপ্তাহ নয়, একটানা ১০০ দিনের ভোগান্তি। রোগটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘১০০ দিনের কাশি’, অর্থাৎ Hundred Day Cough। শীতকাল শুরু হওয়ার আগে থেকেই মারাত্মক আকার ধারণ করতে চলেছে এই রোগ।
-
ব্যাকটেরিয়া জনিত হুপিং কাশি সাধারণ সর্দি কাশির মতো হলেও এই কাশির দাপটে প্রাণ একেবারে ওষ্ঠাগত হয়ে ওঠে। পাঁচের দশকে টিকা আবিষ্কার হওয়ার পর এই রোগের প্রাদুর্ভাব অনেকটাই কমে গিয়েছিল। কিন্তু সেই অসুখই নাকি আবার নতুন করে ফিরছে ব্রিটেনে। আক্রান্ত হলে টানা ১০০ দিন কিংবা তারও বেশি দিন পর্যন্ত কাশি বন্ধ হচ্ছে না। এই ১০০ দিনের কাশি- ই এখন নতুন করে চিন্তায় ফেলে দিয়েছে সেই দেশের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের।
-
ব্রিটেনে এই ছোঁয়াচে অসুখটি নিয়ে ইতিমধ্যেই সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সূত্রের খবর, শুধুমাত্র জুলাই থেকে নভেম্বর মাসের মধ্যেই হুপিং কাশিতে আক্রান্ত হওয়ার ৭১৬টি রিপোর্ট প্রকাশে এসেছে। গত বছর অর্থাৎ ২০২২ সালের তুলনায় এই সংখ্যাটা প্রায় তিনগুণ বেশি।
-
এমনিতে এই রোগ সাধারণ ঠান্ডা লাগা কিংবা কাশির মতো হলেও সপ্তাহ খানেকের মধ্যে সেরে যায় না। বরং, প্রায় তিন থেকে চার মাস ধরে এর রেশ বজায় থাকে, যার জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ফুসফুস এবং শ্বাসযন্ত্র। সেরে ওঠার পরেও এর ক্ষতিকর প্রভাবগুলি থেকে যাচ্ছে। বিগত কয়েক মাসের মধ্যেই ব্রিটেনে এই সংক্রমণের হার ২৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
-
এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা সাধারণ শিশু এবং বৃদ্ধ মানুষদেরই বেশি থাকত। কিন্তু, এবছর প্রাপ্তবয়স্ক মানুষরাও একের পর এক আক্রান্ত হচ্ছেন হুপিং কাশিতে। বর্ডেটেলা পারটোসিস নামক ব্যাকটেরিয়া থেকে ছড়ানো এই রোগে ফুসফুস এবং শ্বাসনালি ক্ষতিগ্রস্থ তো হচ্ছেই, তার পাশাপাশি পাঁজর ফুলে যাওয়া, কানে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া, হার্নিয়া এবং প্রস্রাবে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার মতো মারাত্মক অসুখও হচ্ছে। যাদের অনাক্রম্যতা কম, যেমন শিশু এবং বৃদ্ধরা, তাদের ক্ষেত্রে হুপিং কাশি প্রাণঘাতীও হতে পারে। এই রোগের নতুন করে ফিরে আসা নিয়েই এখন আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে গোটা ব্রিটেন।