Xi Jinping: মাও সেতুং-এর সঙ্গে একই আসনে শি জিংপিং, আরও শক্তিশালী হচ্ছেন চিনা প্রেসিডেন্ট

বৃহস্পতিবার চিনা রাষ্ট্রীয় মিডিয়া সিংহুয়া জানিয়েছে, কমিউনিস্ট পার্টির প্রদান করা এই ক্ষমতা চিনা প্রেসিডেন্টকে আরও শক্তিশালী করবে বলে আশা করা হচ্ছে। 

Saborni Mitra | Published : Nov 11, 2021 2:50 PM IST / Updated: Nov 11 2021, 08:32 PM IST

আরও শক্তিশালী, আরও কেন্দ্রীভূত ক্ষমতার অধিকারী হতে চলেছেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিংপিং ( Xi Jinping)। চিনা কমিউনিস্ট পার্টির (China's Communist Party)নেওয়া সিদ্ধান্ত শিং জিংপিং- শাসনকালের সময়কালকে বাড়ানোর পথ আরও প্রসস্থ করবে। চিনা কমিউনিস্ট পার্টির প্রায় ৪০০ জন কর্মকর্তা একটি বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর চিনা রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে এই সিদ্ধান্ত দেশের কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিষ্ঠাতা মাও সে তুং (Mao Zedong) অর্থনৈতিক উত্থানের স্থপতি জিয়াও পিংয়ের (Deng Xiaoping) সঙ্গে শিকে একটি উচ্চতায় নিয়ে যাবে। 

বৃহস্পতিবার চিনা রাষ্ট্রীয় মিডিয়া সিংহুয়া জানিয়েছে, কমিউনিস্ট পার্টির প্রদান করা এই ক্ষমতা চিনা প্রেসিডেন্টকে আরও শক্তিশালী করবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিশ্বের সবথেকে বেশি জনসংখ্যার দেশের অপ্রতিদ্বন্দ্বী নেতা হয়ে উঠবে শি জিংপিং। তিনিই আগামী দিনে রাজধানী বেজিং থেকে গোটা দেশের নেতৃত্ব দেবেন। সেই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তেমনটাই দাবি করেছে চিনের সরকারি মাধ্যম। 

Newtown Murder: বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের মর্মান্তিক পরিণতি, ছেলের চোখের সামনে মাকে কুপিয়ে খুন

চিনা কমিউনিস্ট পার্টির শক্তিশালী কেন্দ্রীয় কমিটির প্রায় ৪০০ জন সদস্য পার্টির শতবর্ষ সংগ্রামের প্রাপ্য ও ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতার বিষয়ে আলোচনার মাধ্যমে এই রেজোলিউশন পাশ করেছে। দলের ১০০ বছরের ইতিহাসে এটাই তৃতীয় জাতীয় রেজোলিউশন। আগের দুটি জাতীয় রেজোলিউশন গ্রহণ করা হয়েছে ১৯৪৫ সালে প্রাক্তন মাও সেতুং ও ১৯৮১ সালে দেং জিয়াওপিংয়ের অধীনে। বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্ত পাশ হয় ষষ্ঠ ও পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে। যা চিনা রাজনীতিতে অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ। 

Kangana Ranaut: 'পাগলামি না রাষ্ট্রোদ্রোহিতা' কী বলব, কঙ্গনার মন্তব্যের পর প্রশ্ন বিজেপি নেতার
জাতীয় সংবাদ মাধ্যম দাবি করেছে এই বৈঠকে পার্টির দীর্ঘ ইতিহাসের সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখার আহ্বান জানান হয়েছে। পাশাপাশি হাজার বছর ধরে চিনা জাতীর ইতিহাসে এটাই সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ সময় বলেও দাবি করা হয়েছে। পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি সেনা বাহিনী ও দেশের সমস্ত জনগণের কাছে কমরেড শি জিংপিংএর পাশে থাকার ও সংঘবদ্ধ হওয়ার আবেদন জানিয়েছে। সিনহুয়া দাবি করেছে সমাজতন্ত্রের নতুন যুগকে পুরোপুরি বাস্তবায়িত করবেন শি। 

ITBP: চিন সীমান্তে আরও শক্তি বাড়াতে তৎপর ভারত, হিমালয়ে রাস্তা তৈরির দায়িত্বে আইটিবিপি

চার দিনের রুদ্ধদার প্লেনামের পর আগামী বছর কমিউনিস্ট পার্টির ২০তম কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হবে বলেও জানান হয়েছে। শরৎকালে পার্টি কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হবে। সেথানেই চিনের সবথেকে শক্তিশালী নেতা হিসেবে তৃতীয় মেয়াদের দায়িত্ব শি জিংপিংএর হাতে তুলে দেওয়া হবে। আগামী বছর পার্টি কংগ্রেসে শি জিংপিং-এর হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হতে পারে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে এই রেজোলিউশনে শি-কে চিনার আগের নেতাদের তুলনা বেশি ক্ষমতা প্রদান করা হবে। যা বাকি নেতাদের ক্ষমতা হ্রাস করবে। 

২০১৮ সালের আগে পর্যন্ত  চিনা রাষ্ট্রপতির ক্ষমতায় থাকার মেয়াদ ২ বছরের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু ২০১৮ সালে সেই নিয়ম বাতিল হয়ে যায়। পাশাপাশি শি জিংপিং-কে আজীবন ক্ষমতায় থাকার পথ প্রসস্থ করে। চিনা বিশেষজ্ঞদের মতে এই রেজোলিইশনের মাধ্যমে শি জিংপিং নিজেকে আধুনিক চিনের নায়ক হিসেবে তুলে ধরতে পারবেন। এটিকে ক্ষমতা ধরে রাখার একটি দলিল হিসেবেই দেখছেন অনেকে। সিঙ্গাপুর ন্যাশানাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক চংজা ইয়ান জানিয়েছেন এই রেজোলিউশনের মাধ্যমে শি নিজেকে তাঁর পূর্ববর্তী কমিউনিস্ট পার্টির নেতাদের থেকে আলাদা করে রাখতে পারবেন। পূর্ববর্তী দুই নেতা হু জিনতাও ও জিয়াং জেমিন কখনই শি-র মত সমস্ত কর্তৃত্ব কেন্দ্রীভূত করেননি। তাঁরা বিকেন্দ্রীকরণে অনেকবেশি জোর দিয়েছিলেন। তবে এজাতীয় সুযোগ তাঁদের কাছে থাকলে তাঁরা কী করতেন তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অধ্যাপক। কারণ এই সিদ্ধান্ত এমন সময় নেওয়া হয়েছে, যখন চিন বিশ্ব শক্তিতে পরিণত হয়েছে। যা কয়েক দশক আগে কল্পনা করেনি চিনারাও। 

বর্তমানে চিন বিশ্ব শক্তিতে পরিণত হয়েছে। চিনের অর্থনীতি ও সামরিক শক্তি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। চিনা কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে বিন্দুমাত্র বিরোধ নেই শি-র। চিনা সরকার ও কমিউনিস্ট পার্টির মধ্যে তালমিলও বজায় রাখতে পেরেছেন তিনি। তবে রাজনীতিতে সমস্ত কিছু হওয়াই সম্ভব। বিশেষজ্ঞের কথায় অদূর ভবিষ্যতে ক্ষমতা ধরে রাখার সমস্ত প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও শিকে প্রধানের পদ থেকে সরে যেতে হতে পারে। চিনের রাজনীতি অভিজাত হলেও তা কিন্তু দেশের সাধারণ মানুষ বা বিশ্ববাসীর কাছে স্বচ্ছ্ব নয়।  যথেষ্ট কেন্দ্রীয়ভূত। 

Share this article
click me!