করোনা ভাইরাসের গ্রাসে অর্থনীতিতে টালমাটাল, ধাক্কা শেয়ারবাজার থেকে পর্যটন শিল্পে

  • করোনা ভাইরাস আতঙ্কে টালমাটাল দুনিয়ার অর্থনীতি
  • বিশ্ববাজারে আকস্মিকভাবে কমে গেছে জ্বালানি তেলের দাম
  • গত কয়েক দিনে সেনসেক্স নেমেছে প্রায় ২ শতাংশ
  • ধাক্কা খাচ্ছে চিনসহ আন্তর্জাতিক পর্যটন শিল্প

Tapan Malik | Published : Feb 7, 2020 5:52 AM IST / Updated: Feb 07 2020, 11:24 AM IST

চিন থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের প্রভাব ব্যাপকভাবে পড়তে শুরু করেছে বিশ্ব অর্থনীতিতে। একে মন্দার অর্থনীতি তার ওপর করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক সব মলিয়ে টালমাটাল বিশ্ব অর্থনীতি।  বিশ্ববাজারে আকস্মিকভাবে কমে গেছে জ্বালানি তেলের দাম। শেয়ারবাজারও নিম্নমুখী, ধাক্কা খাচ্ছে চিনসহ আন্তর্জাতিক পর্যটন শিল্প।

আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম গত কয়েক দিনে ২ দশমিক ৩ শতাংশ কমে তিন মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে ঠেকেছে। গত দু’দিন ব্রেন্ট ব্র্যান্ডের তেল ব্যারেলপ্রতি ৫৯ ডলার ৩২ সেন্টে বিক্রি হয়েছে। যা গত অক্টোবর থেকে শব থেকে কম। পেট্রল এবং ডিজেলের দামও সামান্য হলেও নেমেছে।    

এমএসসিআই ওয়াল্ড ইন্ডেক্স যা ২৩টি বাজারের সূচক তা গত দশ দিনে নেমেছে ১.৩ শতাংশ৷ এর প্রভাব আমাদের দেশের ওপরওপড়েছে। গত কয়েক দিনে সেনসেক্স নেমেছে প্রায় ২ শতাংশ। উল্লেখযোগ্যভাবে নামে গত মঙ্গলবার। সেনসেক্স .৪৬ শতাংশ নিচে নেমে যায়। আমেরিকার শেয়ারবাজারে গত কয়েক দিন প্রধান তিনটি সূচকেই দরপতন হয়েছে ১ দশমিক ৫ শতাংশের বেশি। অন্যদিকে লন্ডনের এফটিএসই সূচকের পতন গিয়ে ঠেকেছে প্রায় ২ দশমিক ৩ শতাংশ। ইউরোপের শেয়ারবাজারেও গত কয়েক দিন বড় ধরনের অবনমন ঘটেছে। পাশাপাশি জার্মানির ডিএএক্স ও ফ্রান্সের সিএসি দুটি সূচকই পড়ে যায় ২ দশমিক ৫ শতাংশের বেশি।

এই অবস্থার মধ্যে উল্টোপথে হাঁটছে জীবাণুনাশক উৎপাদক ক্লোরক্স। সবার শেয়ারে দরপতন ঘটলেও  ক্লোরক্স-এর দাম বেড়েছে এক শতাংশ। মাস্কের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের সংযুক্ত আরব আমিরাতে। দেশটিতে ভালো মানের মাস্ক (এন-৯৫)-এর এক প্যাকেটের (২০টির) দাম সাধারণত ১৫০-১৮০ দিরহাম, কিন্তু এখন একটি মাস্ক বিক্রি হচ্ছে ৫৯৯ দিরহামে। সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী, যেখানে গত দু’দিনে আট কোটি মাস্ক বিক্রি করেছে আলিবাবার মালিকানাধীন তাওবাও। সেখানে জানুয়ারির ১৯ থেকে ২২ তারিখের মধ্যে জেডি ডটকম মাস্ক বিক্রি করেছে অন্তত ১২ কোটি ৬০ লাখ।

করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের পর সাংহাই ও হংকংয়ের পার্ক বন্ধ করে দিয়েছে ডিজনি। তাদের দরপতন হয়েছে তিন শতাংশেরও বেশি। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পর্যটন কোম্পানিগুলোও। চলতি বছর কয়েক লাখ মানুষ দেশটিতে ভ্রমণে যাওয়ার কথা থাকলেও ভাইরাস আতঙ্কে ফ্লাইট বাতিল করছেন অনেকে, বাতিল করছেন হোটেল বুকিংও। যাত্রীদের আগের বুকিং দেওয়া ফ্লাইটের ভাড়া ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চিনা সাউদার্ন এয়ারলাইন্স, চীনা ইস্টার্ন এয়ারলাইন্স ও চীনা এয়ার। 

এদিকে কলকাতার চায়না টাউনে নিউ ইয়ার কার্নিভাল শুরু হয়ে যায় ২৫ শে জানুয়ারি থেকেই। ১৫দিন ব্যাপী এই অনুষ্ঠানে কলকাতার চিনা বাসিন্দারা তাদের আত্মীয় স্বজনদের নিমন্ত্রণ করে ধুমধাম করে পালন করেন নববর্ষ। কিন্তু এই সব আয়োজন এবার কার্যত জলে গেছে করোনা আতঙ্কে। 

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, করোনা ভাইরাস সার্স মহামারির চেয়েও বিশ্ব অর্থনীতিতে বেশি প্রভাব ফেলবে। ২০০২ সালে সার্স ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৭০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছিলো এবং তার মোকাবিলায় বিশ্বে ৩ হাজার কোটি মার্কিন ডলার ব্যয় হয়েছিল। 

Share this article
click me!