উত্তর কোরিয়ার সেনা বাহিনীর প্রতিষ্ঠা দিবস। সেই দিন বিশাল কুচকাওয়াজের আয়োজন করা হয়েছিল। এই কুচকাওয়াজের মাধ্যমে উত্তর কোরিয়া দেশের সামরিক দক্ষতার কথা তুলে ধরে। প্রতিবারের মত এবারই কুচকওয়াজ দেখতে হাজির ছিলেন প্রচুর মানুষ।
গোটা বিশ্ব যখন মহামারির শেষ লগ্নে পৌঁছে গেছে, তখনই উত্তর কোরিয়া প্রশাসন দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণের কথা প্রথমবারের মত স্বীকার করে নিয়েছে। এপর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। করোনাভাইরাসের নতুন প্রজন্ম ওমিক্রনও কিম জং উনের দেশকে রাতিমত ধাক্কা দিয়েছে । প্রায় এক হাজার মানুষকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে। কিন্তু কী করে এই দেশে থাবা বসাল কোভিড সংক্রমণ- তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। মনে করা হচ্ছে বিশাল ও বর্ণাঢ্য সামরিক কুচকাওয়াজ থেকেই ছড়িয়েছে সংক্রমণ।
গত ২৫ এপ্রিল, উত্তর কোরিয়ার সেনা বাহিনীর প্রতিষ্ঠা দিবস। সেই দিন বিশাল কুচকাওয়াজের আয়োজন করা হয়েছিল। এই কুচকাওয়াজের মাধ্যমে উত্তর কোরিয়া দেশের সামরিক দক্ষতার কথা তুলে ধরে। প্রতিবারের মত এবারই কুচকওয়াজ দেখতে হাজির ছিলেন প্রচুর মানুষ। সেখান থেকেই মহামারি ছড়িয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে গোটা অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হয়েছিল। সেখানেই ভিডিও ফুটেজে দেখা যাচ্ছে প্রচুর মানুষ এক জায়গায় জড়ো হয়েছেন। কোনও মানুষই মুখোশের ব্যবহার করেনি। মানা হয়নি নিরাপদ শারীরিক দূরত্বও। ভিড়ে ঠাসাঠাসি অবস্থাতেই সকলে কুচকাওয়াজ দেখছে। কিম ইল সুং স্কোয়ারে হয়েছিল এই কুচকাওয়াজ। সেখানে বিশাল একটি মিসাইলও প্রদর্শন করা হয়।
উত্তর কোরিয়ার প্রতিবেশি দেশ তথা প্রধান প্রতিপক্ষ দক্ষিণ কোরিয়ার ইনস্টিটিউট ফর ন্যাশালান ইউনিফিকেশনের গবেষক হং মিন দাবি করেছেন ২৫ এপ্রিলের প্যারেড থেকেই ওই দেশে কোভিড ১৯ সংক্রমণ ছড়িয়ে রয়েছে। প্যারেডের সঙ্গে কোভিডের ঘনিষ্ট যোগাযোগ রয়েছে। তিনি আপও বলেছেন ওই অনুষ্ঠানে প্রায় ২০ হাজার দর্শক উপস্থিত ছিল। তারাই সেখান থেকে কোভিড-১৯ এর মত মহামারি নিজেরদের জেলায় বহন করে নিয়ে গেছে।
তবে দেশের করোনা পরিস্থিতির কথা জানিয়েছে উত্তর কোরিয়া প্রশাসন বলেছেন মহামারি মোকাবিলায় রীতিমত দ্রুত পদক্ষেপ করা হচ্ছে। আক্রান্তদের দ্রুত পৃথক রাখা হচ্ছে।
তবে করোনা মহামারির চলার মধ্যে এটাই যে উত্তর কোরিয়ার প্রথম প্যারেড এমনটা কিন্তু নয়। এর আগে ২০২১ সালে রাতের বেলায় একটি সামরিক কুচকাওয়াজ হয়েছিল। তবে সেখান থেকে সংক্রমণ ছড়িয়েছে তেমন কোনও তথ্য প্রকাশ করেনি উত্তর কোরিয়া প্রশাসন। তবে ২০২০ সালে চিন থেকে যখন বিশ্বে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছিল তখন প্রথমেই কিম জং উন দুই দেশের সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছিলেন। এই বছর শুরুতে লকডাউন শিথিল করা হয়। একই সঙ্গে চিনের সঙ্গে নতুন করে বাণিজ্যিক সম্পর্ক চালু করে কিম প্রশাসন।