নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে ইটালিয়ান পর্নস্টার ক্যারল মাল্টেসিকে। নিতম্বের ট্যাটু কীভাবে সমাধান করল এই হত্যা রহস্যের?
চকচকে নেইলপলিশ পরা একটা পচা-গলা হাত দেখতে পেয়েছিলেন এক পথচারী। তার পাশের এক ময়লা ফেলার ভ্য়াট থেকে পুলিশ পেয়েছিল আরও কিছু দেহাংশ। নিতম্বের এক ট্যাটু দেখে জানা গেল ওই দেহাংশ নিখোঁজ থাকা এক পর্ন অভিনেত্রীর। আর তারপর তদন্তে নামতেই সামনে এল ওই যুবতীর নৃশংস হত্যার শিউরে ওঠা কাহিনি। হত্যার দায়ে গ্রেফতার করা হল তারই বন্ধুস্থানীয় এক ব্যাঙ্ক কর্মচারীকে। এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে ইতালির মিলান শহরে।
নিহত পর্ন অভিনেত্রীর নাম ক্যারল মাল্টেসি। মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময়ে তাঁর নামে একটি নিখোঁজের মামলা করা হয়েছিল। ওই সময় তাঁর একটি ল্যাপড্যান্স ক্লাসে অংশ নেওয়ার কথা ছিল। তিনি না আসার পর, তাঁর এক বন্ধু পুলিশে খবর দিয়েছিলেন। এরপরই পুলিশ তাঁর খোঁজ শুরু করেছিল। তারপর, গত রবিবার (২৭ মার্চ) ক্যারলের দেহাংশগুলি মিলেছিল। তদন্তে উঠে আসে মিলানের ৪৩ বছর বয়সী ব্যাঙ্ক কর্মচারী ডেভিড ফন্টানার নাম। তার বক্তব্যে অসঙ্গতি পাওয়ায় গত মঙ্গলবার তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। জিজ্ঞাসাবাদের সময় সে নিজের অপরাধ স্বীকার করেছে।
ক্যারলকে হত্যার যে বর্ণনা সে দিয়েছে, তা ভয়ঙ্কর। ডেভিড জানিয়েছে, সে প্রথমে ক্যারলের গোটা শরীরে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করেছিল। তবে, সেই আঘাতগুলি খুব জোরে ছিল না। তারপর, তার মাথায় প্রথম হাতুড়ির আঘাত করার পরই, সে জোরে জোরে মারতে শুরু করেছিল। তারপর, ক্যারল ইতিমধ্যেই মৃত জানার পরও, একটি ছুরি দিয়ে তাঁর গলা কেটে ফেলেছিল ডেভিড। তারপর, ক্যারলের দেহ টুকরো টুকরো করে কেটে কয়েকটি প্লাস্টিকের ব্যাগে ভরে সে রেখে দিয়েছিল ফ্রিজে।
কয়েকদিন পর থেকে সে অল্প অল্প করে ক্যারলের দেহাবশেষ ভরা ব্যাগ নিয়ে ফেলে দেওয়া শুরু করেছিল। ব্রেসিয়া এলাকার এক পাহাড়ি রাস্তায় এবং উত্তর ইতালির আবর্জনা ফেলার ভ্যাটে ওই ব্যাগগুলি ফেলেছিল সে। এখানেই শেষ নয়, ক্য়ারলের পরিবার-পরিজনরা যাতে ক্যারলের মৃত্যুর কথা জানতে না পারে, তার জন্য সে ক্যারলের ফোন থেকে তাদের বার্তাও পাঠাতো। এমনকী, নেদারল্যান্ডসে ক্যারলে বয়ফ্রেন্ডকে ঘনিষ্ঠ মেসেজও করেছিল।
টুকরো টুকরো দেহাংশ থেকে ক্যারলকে সনাক্ত করাটাও চ্যালেঞ্জ ছিল কর্তৃপক্ষের জন্য। এই ক্ষেত্রে সাহায্য করেছেন একজন সাংবাদিক। তিনি ক্যারলের পরিচয় নিশ্চিত করেন তার শরীরে থাকা ট্যাটুর সাহায্যে। ক্যারলের শরীরে মোট ১১টি ট্যাটু ছিল। এর মধ্যে টুকরো হওয়ার পরও সাতটি অক্ষত ছিল। শরীরের উপরের অংশে খোদাই করা 'ওয়ান্ডারলাস্ট' বা নিতম্বে খোদাই করা 'এলিগেন্স ইস দ্য...', বা তার উরুর ভিতরের দিকে উল্টানো ভি অক্ষরের ট্যাটু, তার এক্স-রেটেড ভিডিওগুলির দৌলতে সকলের পরিচিত ছিল। ওই সাংবাদিক এরকম আটটি ট্যাটু মিলিয়ে দেখে, তারপর পুলিশের কাছে গিয়েছিলেন।
কিন্তু কেন ডেভিড এত নৃশংসভাবে ক্যারলকে হত্যা করল? ডেভিড জানিয়েছে, সে জানে না কেন এরকম করেছে। পুলিশকে সে সবটা খুলে জানিয়েছে, সত্য গোপন রাখার বোঝা হালকা করতে।