দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন ফ্যাসিবাদ বিরোধী লোকসংগীতের মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় গান ছিল 'বেলা চাও'। প্রায় এক শতাব্দি পর ফের ইরানে হিজাব বিরোধী আন্দোলনে ফের মানুষের কন্ঠে উঠে এল এই গান।
মাহসা মৃত্যুর প্রতিবাদে এবার বিক্ষোভকারীদের হাতিয়ার গত শতাব্দির ইতালির ফ্যাসিবাদ বিরোধী জনপ্রিয় লোকসংগীত 'বেলা চাও'। মেয়েদের বাধ্যতামূলকভাবে হিজাব পড়ার বিরোধীতায় বিক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়েছে ইরানের একাধিক প্রদেশে। অন্যদিকে শরিয়া আইন প্রত্যাহারে নারাজ ইব্রাহিম রাইসি আন্দোলন দমনে সচেষ্ট। প্রত্যেকদিন বাড়ছে পুলিশের গুলিতে মৃত্যুর সংখ্যা। আটক করা হচ্ছে শয় শয় প্রতিবাদী মহিলাকে। তবুও এতটুকু দমানো যায়নি বিক্ষোভকারীদের। বরং ইরানের রাস্তাঘাট এবার গর্জে উঠছে 'বেলা চাও'-এর সুরে।
প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে গানকেই বেছে নিয়েছে ইরান। রাজধানী তেহরান সহ একাধিক প্রদেশের পথে ঘাটে কান পাতলেই শোনা যাবে ইতালির ফ্যাসিবাদ বিরোধী জনপ্রিয় লোকসংগীত 'বেলা চাও'। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় জনপ্রিয় হয়েছে এই গানের পার্সি অনুবাদ। আমিনি মৃত্যুর বিচার চেয়ে 'বেলা চাও' গানটিকে পার্সি ভাষায় গেয়ে টুইটারে পোস্ট করেছেন এক ইরানি যুবতী। মুহূর্তে ভাইরাল হয় সেই ভিডিও।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন ফ্যাসিবাদ বিরোধী লোকসংগীতের মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় গান ছিল 'বেলা চাও'। প্রায় এক শতাব্দি পর ফের ইরানে হিজাব বিরোধী আন্দোলনে ফের মানুষের কন্ঠে উঠে এল এই গান।
প্রসঙ্গত, ঠিকভাবে হিজাব না পরার 'অপরাধে' ইরানের ২২ বছরের তরুণীকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ ইরানি পুলিশের বিরুদ্ধে। পরিবারের সঙ্গে তেহরানে বেড়াতে এসেছিলেন ২২ বছরের মাহসা আমিনি। যথাযথ ভাবে হিজাব না পরার 'অপরাধে' নীতি পুলিশের হাতে আক্রান্ত হন আমিনি। কয়েকজন স্থানীয় মহিলা আমিনির পথ আটকে হিজাব পরার জন্য বারবারই চাপ দিতে থাকে। রাজী না হওয়ায় বাড়তে থাকে বাগবিতন্ডা। ধীরে ধীরে তর্কাতর্কি ধস্তাধস্তির রূপ নেয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় ইরানি পুলিশ। হিসাব নেই দেখে তরুণীকে 'উচিত শিক্ষা' দিতে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। আমিনিকে টানতে টানতে গাড়িতে তোলার পর পুলিশের গাড়িতেই তাঁকে বেধরক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। থানায় নিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই আমিনির পরিবার জানতে পারে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তরুণীকে। কয়েক ঘন্টার মধ্যেই কোমায় চলে যান তরুণী। চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ে ২২ বছরের আমিনি। পরিবারের অভিযোগ থানায় নিয়ে গিইয়ে বেধরক মারধর করা হয় আমিনিকে। হিজাব পরা শেখানোর নামে মেরে ভেঙে দেওয়া হয় মাথার খুলি। যদিও পুলিশের তরফ থেকে অস্বীকার করা হয়েছে যাবতীয় অভিযোগ। তাঁদের দাবি আগে থেকেই অসুস্থ ছিল তরুণী এবং হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই তাঁর মৃত্যু হয়। পুলিশের এই যুক্তি কোনওভাবেই মানতে রাজী নন আমিনির পরিবার।