শনিবার ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছিলেন, নাগরিক জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। খাবার, গরম জল আর গ্যাসের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা।
শুক্রবার থেকেই অবরুদ্ধ ছিল ইউক্রেনের (Ukraine) রাজধানী কিয়েভ (Kyiv)। শনিবার সকাল থেকে রুশ সেনা বাহিনী রাজধানীর বেসামরিক এলাকায় নির্বিচারে গুলি চালাতে শুরু করে। অন্যদিকে দিনের শেষে কৌশলগত দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ মারিউপোল (Mariupol) শহরও অবরুদ্ধ করে ফেলে রুশ (Russia)সেনা। ইউক্রনের আশঙ্কা কয়েক ঘণ্টার মধ্য়ে এই দুটি শহর বড় সামরিক হামলার মুখোমুখি হতে পারে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। যুদ্ধের ১৮তম দিনে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। রাষ্ট্র সংঘের অনুমান এখনও পর্যন্ত আড়াই মিলিয়নেরও বেশি মানুষ ইউক্রেন ত্যাগ করে প্রতিবেশী দেশগুলিতে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছে। তবে এখনও অনেক ইউক্রেনীয় বেসমেন্ট, পাতাল রেল স্টেশন ও ভূগর্ভস্ত আশ্রয়কেন্দ্রগুলিতে আশ্রয় নিয়েছে। শনিবার ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছিলেন, নাগরিক জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। খাবার, গরম জল আর গ্যাসের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা।
জেলেনস্কির দাবি রুশ হানায় এপর্যন্ত প্রায় ১৩০০ ইউক্রেনীয় মারা গেছে। যারমধ্যে রয়েছে ৭৯টি শিশু। আহতের সংখ্যা ১০০। জেলেনস্কি শনিবারও জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজ ও ফরাসি রাষ্ট্রপতি ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। রুশ হামলার মোকাবিলা কীভাবে করা যায় তাও পরামর্শ চেয়েছেন। অন্যদিকে এদিনও জেলেনস্কি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে সরাসরি তাঁর সঙ্গে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিয়েছেন। একই সঙ্গে মেলিটোপোলের মেয়র ইভাল ফেডোরভের মুক্তির আর্জি জানিয়েছেন। রুশ সেনারা ইউক্রেনীয় এই মেয়রকে অপহরণ করেছে বলে অভিযোগ।
অন্যদিকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও স্কোলড ও ম্যাক্রোঁর সঙ্গে ফোনে একটি বৈঠক করেছেন। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মানবিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন তিনি। পাশাপাশি ইউক্রেনের আচরণের তীব্র নিন্দা করেছেন।
রুশ সেনারা মারিউপোল ঘিরে রেখেছে। মারিউপোলের মেয়র বড় রকমের বিপর্যয়ের আশঙ্কা করেছেন। ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক একটি বিবৃতি জারি করে জানিয়েছেন শহরের পূর্ব উপকণ্ঠের দখল নিয়েছে রুশ সেনা। মারিউপোল গ্যাস, জল, বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। ত্রাণবাহী কনভয়তেও হামলা চালাচ্ছে রাশিয়া। কিয়েভ ও মারিউপোল ছাড়াও রুশ বাহিনী ঘিরে ফেলেছে খারকিভ, চেরনিহিভ ও সুমিকে।
রুশ সেনা বাহিনীর ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের বেসামরিক এলাকায় বোমা বর্ষণ করছে। ইউক্রেনের বাকি শহরগুলিও টার্গেট করেছে রুশ সেনা। শনিবার সকালে কিয়েভ ও বাকি বড় শহরগুলিতে বিমানহানার সাইরেন বেজে ওঠে। শুরু হয় অবিরাম গুলি ও বোমা বর্ষণ। পশ্চিমের দেশগুলিকে রীতিমত হুঁশিয়ারি দিয়ে রুশ সেনা কিয়েভের চারদিকে ঘিরে ফেলেছে। এদিনই পূর্ব ইউক্রেনের ডিনিপ্রোরের কাছে মাইকোলাইভ, নিকোলাইভ ও ক্রোপিভনিটস্কিতে বিস্ফোরণ হয়েছে বলে কিয়েভ প্রশাসন জানিয়েছেন।