পেট্রোল-ডিজেল পেতে লম্বা লাইন পাম্প স্টেশনের বাইরে। সব মিলিয়ে তীব্র হাহাকার ও অরাজকতা চলছে শ্রীলঙ্কায়।
মূল্যবৃদ্ধির (economic crisis) আগুন জ্বলছে শ্রীলঙ্কায়। ভারতের প্রতিবেশী দেশে এখন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের আকাল (food crisis)। আকাশ ছুঁয়েছে খাদ্য (rice), ওষুধ (Medicine), দুধের গুঁড়ো (Milk powder), রান্নার গ্যাস (LPG) এবং জ্বালানীর মতো প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম। পেট্রোল-ডিজেল পেতে লম্বা লাইন পাম্প স্টেশনের বাইরে। সব মিলিয়ে তীব্র হাহাকার ও অরাজকতা চলছে শ্রীলঙ্কায়। প্রতিদিন দীর্ঘ সময় ধরে চলছে বিদ্যুৎ ঘাটতির ফলে লোডশেডিং। সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক এই মাসের শুরুতে স্থানীয় মুদ্রাকে ফ্রি ফ্লোট করার অনুমতি দেয়, যার ফলে দামে তীব্র বৃদ্ধি ঘটে।
অর্থনৈতিক সংকট গভীর হওয়ার সাথে সাথে প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রীর দাম আকাশচুম্বী হয়েছে। মুদ্রাস্ফীতির কারণে দ্বীপরাষ্ট্রে খাদ্য ও পানীয়ের দামে ব্যাপক বৃদ্ধি ঘটেছে। খাদ্যসামগ্রী কিনতে মানুষকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। এক কেজি চালের দাম পৌছেঁছে ৫০০ শ্রীলঙ্কান টাকায়। শ্রীলঙ্কায় ৪০০ গ্রাম দুধের গুঁড়ো পাওয়া যাচ্ছে ৭৯০ টাকায়। গত তিন দিনে দুধের গুঁড়োর দাম ২৫০ টাকা বেড়েছে।
ক্রমবর্ধমান আর্থিক এবং খাদ্য সংকটের জন্য, অনেক শ্রীলঙ্কার তামিলিয়ান এখন ভারতে আসতে চাইছেন। মঙ্গলবার শরণার্থী হিসেবে ভারতে প্রবেশ করেছেন প্রায় ১৬ জন শ্রীলঙ্কান। অনুমান করা হয় যে বিপুল সংখ্যক শ্রীলঙ্কান ভারতে আশ্রয় নিতে চলেছেন। মঙ্গলবার শ্রীলঙ্কার উদ্বাস্তুদের দুটি দল ভারতীয় উপকূলে পৌঁছেছে। এর মধ্যে রামেশ্বরমের উপকূলে ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনী ছয় জনের একটি দলকে উদ্ধার করেছে। আরিচল মুনাই থেকে দূরে একটি দ্বীপে আটকে পড়েন তাঁরা। এই লোকেরা শ্রীলঙ্কার উত্তর জাফনা বা মান্নার অঞ্চল থেকে আসছিলেন বলে খবর।
মাইক্রোওয়েব ওভেনের মধ্যে ২ মাসের শিশুর ঝলসানো দেহ, খুনের অভিযোগে কাঠগড়ায় সদ্যোজাতর মা
বিপ্লবী ভারত গ্যালারি- চোখের সামনে তুলে ধরবে স্বাধীনতার ইতিহাস, উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রী মোদীর হাতে
মঙ্গলবার ভারতে আসা শরণার্থীদের মধ্যে তিন শিশু ছিল। রামেশ্বরের তীরে একটি দ্বীপে আটকে ছিলেন এই মানুষগুলো। ভারতীয় কোস্টগার্ডের জওয়ানরা তাদের উদ্ধার করে ভারতে নিয়ে আসে। ১০ জনের দ্বিতীয় দল গভীর রাতে ভারতীয় উপকূলে পৌঁছেছে।
অর্থনীতিবিদরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে ১৯৮৯ সালের গৃহযুদ্ধের সময় যেরকম অভিবাসন ঘটতে দেখা গিয়েছিল, সেই একই পরিস্থিতি হতে পারে এবার। শ্রীলঙ্কার কাছে থাকা বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রায় নেই বললেই চলে। বাইরে থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আনার মতো টাকা দেশে নেই বলে খবর।
এ বছর কিস্তিতে ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ পরিশোধ করতে হবে শ্রীলঙ্কাকে কিন্তু বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ মাত্র দুই বিলিয়নের কাছাকাছি। এমন পরিস্থিতিতে একদিকে যেখানে চিন হাত বাড়িয়েছে, ভারত ১৭ই মার্চ এক বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ দেবে শ্রীলঙ্কাকে বলে জানিয়েছে।