আফগানিস্তান সরকার ও তালিবান প্রতিনিধিদের মধ্যে প্রথমবারের মতো শান্তি আলোচনা শুরু হল। কাতারের রাজধানী দোহায় শনিবার এই আলোচনা শুরু হয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এই করোনা আবহেই দোহায় গেছেন স্বয়ং মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। এই আলোচনাকে তিনি ‘ঐতিহাসিক’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
তালিবান ও আফগান সরকারের প্রতিনিধিদের মধ্যে এটিই সরাসরি প্রথম কোনো আলোচনা। গত ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তালিবানের নিরাপত্তা চুক্তির পরই এই আলোচনা শুরুর কথা ছিল। তবে, একজন বিতর্কিত বন্দির বিনিময় নিয়ে মতবিরোধের কারণে তা পিছিয়ে যায়। আলোচনা শুরু হতে কয়েক মাস দেরি হলেও শুক্রবার শান্তি আলোচনায় যোগ দিতে আফগান সরকারের একটি প্রতিনিধিদল দোহায় যায়। প্রতিনিধি দলের নেতা আব্দুল্লাহ আব্দুল্লাহ বলেন তাঁরা ‘ন্যায্য ও মর্যাদাপূর্ণ শান্তি’ খুঁজছেন। ১৯ বছর আগে ৯/১১ এই দিনটিতেই যুক্তরাষ্ট্রে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছিল।
ছয় জন বন্দির মুক্তি লাভের পর বৃহস্পতিবারই তালেবান আলোচনায় যোগ দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে। তালেবানরা সবসময়ই আলোচনার আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করে আফগান সরকারকে ‘যুক্তরাষ্ট্রের পুতুল’ হিসেবে উল্লেখ করে আসছিল। তবে বর্তমানে দুপক্ষই ১৯৭৯ সালে শুরু হওয়া সহিংসতার অবসান চায়।
আরও পড়ুন: অবশেষে ভারতের কাছে হার মানল সাম্রাজ্যবাদী চিন, নিরাপদে দেশে ফিরলেন অরুণাচলের ৫ নিখোঁজ
এই আলোচনার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র-তালেবান চুক্তির যোগসূত্র আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ওই চুক্তিতে বিদেশি সেনা সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার কথা বলা হয়েছিল। সেই সমঝোতায় পৌঁছাতে এক বছরেরও বেশি সময় লেগেছিল। ওই চুক্তিতে তালেবান এক হাজার আফগান সেনাকে ছাড়ার সম্মতি দেয়, আর সরকার পাঁচ হাজার তালেবান বন্দিকে ছেড়ে দেয়। প্রায় দুই দশক ধরে চলা আফগান যুদ্ধে সরকারি বাহিনী এবং তালেবানদের সংঘর্ষে হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।
দোহায় অনুষ্ঠিত এই আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিল ভারতও। ভারতের পক্ষ থেকে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে। অনুষ্ঠানে বক্তব্য পেশ করার সময় জয়শঙ্করের স্পষ্ট বক্তব্য, আফগানিস্তানে শান্তি ফিরবে আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণেই।
আমেরিকার পুতুল আখ্যা দিয়ে আসা আফগান সরকারের সঙ্গে তালিবানদের আলোচনা এটাই প্রথম। সেই আলোচনায় ভারতকেও এক অংশীদার হিসাবে রাখার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। সেই মতোই এদিনের আলোচনায় অংশ নেন ভারতীয় বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। এদিন অনুষ্ঠানে জয়শঙ্কর বলেন, 'ভারত-আফগানিস্তানের বন্ধুত্ব দীর্ঘদিনের। সেদেশের ৪০০টিরও উপর উন্নয়নমূলক প্রোজেক্টে ভারত অংশ নিয়েছে।'