বিমান মৃয়া, যার অর্থ ইউক্রেনীয় ভাষায় 'স্বপ্ন', ১৯৮৫ সালে তৈরি হওয়া মৃয়া ১৯৮৮ সালে প্রথম আকাশে ওড়ে। Antonov-225 বিমানটিতে ৩০টিরও বেশি চাকা, ছয়টি ইঞ্জিন, ২৯০ ফুটের ডানার স্প্যান রয়েছে।
রাশিয়া (Russia) এবং ইউক্রেনের (Ukraine) মধ্যে সংঘাতের মাঝে জ্বলছে ইউক্রেন। পরিসংখ্যান বলছে দেড় লক্ষেরও বেশি ইউক্রেনীয় পোল্যান্ড, মলদোভা এবং অন্যান্য প্রতিবেশী দেশগুলিতে পালিয়ে গেছে। রাষ্ট্রসঙ্ঘের সতর্কতা যে যুদ্ধ বাড়লে এই সংখ্যা চার মিলিয়ন পর্যন্ত বাড়তে পারে। এদিকে শেষ পাওয়া খবরে, বিশ্বের বৃহত্তম কার্গো বিমান (world largest cargo plane), ইউক্রেনের তৈরি (Ukraine-made) আন্তোনোভ-২২৫ (Antonov-225) মৃয়াকে জ্বালিয়ে দিয়েছে রুশ সেনা। কিয়েভের কাছে হোস্টোমেল বিমানবন্দরে রাশিয়ার শেলিংয়ে (Russian Shelling) এটিতে আগুন ধরে যায়। ইউক্রেনের জাতীয় অস্ত্র প্রস্তুতকারক ইউক্রবোরনপ্রম রবিবার এই তথ্য জানিয়েছে।
ইউক্রবোরনপ্রম তার ফেসবুক পেজে লিখেছে, "রাশিয়ান দখলদাররা ইউক্রেনীয় বিমান পরিষেবার ফ্ল্যাগশিপ ধ্বংস করেছে। ধ্বংস্ব হয়ে গিয়েছে An-225 মৃয়া। এই ঘটনা কিয়েভের কাছে হোস্টোমেলের আন্তোনোভ এয়ারফিল্ডে ঘটেছে।" অস্ত্র প্রস্তুতকারক সংস্থা আরও বলেছে যে প্লেনটি নতুন করে মেরামত করতে তিন বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি খরচ হবে এবং পাঁচ বছরেরও বেশি সময় লাগবে।
বিমান মৃয়া, যার অর্থ ইউক্রেনীয় ভাষায় 'স্বপ্ন', ১৯৮৫ সালে তৈরি হওয়া মৃয়া ১৯৮৮ সালে প্রথম আকাশে ওড়ে। Antonov-225 বিমানটিতে ৩০টিরও বেশি চাকা, ছয়টি ইঞ্জিন, ২৯০ ফুটের ডানার স্প্যান রয়েছে। এটিকে সর্বকালের বৃহত্তম বিমান বলা হয়।
ইউক্রেনের বিদেশমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা টুইট করে বলেছেন, “রাশিয়া হয়তো আমাদের ‘মৃয়া’ ধ্বংস করেছে। কিন্তু তারা কখনোই আমাদের শক্তিশালী, স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক ইউরোপীয় রাষ্ট্রের স্বপ্নকে ধ্বংস করতে পারবে না। আমরা জয়ী হব!”
ইউক্রেনের অফিসিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্টও বিমানটি পুনর্নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। টুইটে লেখা হয়েছে "বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিমান 'মৃয়া' (দ্য ড্রিম) কিয়েভের কাছে একটি এয়ারফিল্ডে রাশিয়ান হানাদাররা ধ্বংস করেছিল। আমরা বিমানটি পুনর্নির্মাণ করব। আমরা একটি শক্তিশালী, মুক্ত ও গণতান্ত্রিক ইউক্রেনের স্বপ্ন পূরণ করব।”
কার্গো প্লেনটি এখনও ইউক্রেন ব্যবহার করছিল এবং এমনকি ২০২০ সালে এটি ব্যবহার করা হয়েছিল। উল্লেখ্য, রবিবারই রাশিয়ান বাহিনী (Russian forces) দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভে (Kharkiv) একটি গ্যাস পাইপলাইন (gas pipeline) উড়িয়ে দিয়েছে। রবিবার ভোরে কিয়েভের দক্ষিণ আকাশ বিশাল বিস্ফোরণে আলোকিত হয়। প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির কার্যালয়ের তরফে বলা হয় যে একটি বিস্ফোরণ ঝুলিয়ানি বিমানবন্দরের কাছে ঘটেছে। রাজধানী থেকে প্রায় ২৫ মাইল দক্ষিণে ভাসিলকিভের মেয়র বলেছেন, সেখানে একটি তেল ডিপোতে আঘাত করা হয়েছে।
এর পালটা ইউক্রেনীয় বাহিনী রাজধানী কিয়েভে আরও শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়ে তুলছে। স্টেট সার্ভিস অফ স্পেশাল কমিউনিকেশন অ্যান্ড ইনফরমেশন প্রোটেকশন জানিয়েছে এই বিস্ফোরণের ফলে পরিবেশগত বিপর্যয় দেখা দিতে পারে। সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দাদের তাদের বাড়ির জানালা স্যাঁতসেঁতে কাপড় বা গজ দিয়ে ঢেকে রাখার এবং প্রচুর পরিমাণে জল পান করার পরামর্শ দিয়েছে।