প্রায় দুই শতাব্দীরও বেশি সময় পরে বিজ্ঞানীরা গেজ-এর মুখটি পুনর্গঠন করেছেন। তারা তুলে ধরেছেন দুর্ঘটনার সময় জেগের মুখ কেমন হয়েছিল।
IFL সায়েন্স অনুসারে, বিজ্ঞানীরা প্রথমবারের মত এক ব্যক্তির চেহারায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে যে ব্যক্তি এক অদ্ভূত দুর্ঘটনার মুখোমুখি হয়েছিল। ফিনিয়াস গেজ , একজন রেল কর্মী ছিলেন। ১৩ সেপ্টেম্বর ১৮৪৮ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভার্মেন্টে একটি নতুন রেলপথ তৈরির জন্য পথের সন্ধান করছিলেন। সেই সময়ই দুর্ঘটনার কারণে একটি লোহার লাঠি তাঁর মাথা এফোঁড়ওফোঁড় করে দেয়। এই ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনার পরই তাঁর মস্তিষ্কের একটি অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, বিকৃত হয়ে যায়। এই আঘাত সত্ত্বেও গেজ দুর্ঘটনার পর প্রায় ১২ বছর বেঁচে ছিলেন। তিনি সক্রিয় ও অপেক্ষাকৃত স্বাভাবিক জীবনযাপন করেছিলেন।
প্রায় দুই শতাব্দীরও বেশি সময় পরে বিজ্ঞানীরা গেজ-এর মুখটি পুনর্গঠন করেছেন। তারা তুলে ধরেছেন দুর্ঘটনার সময় জেগের মুখ কেমন হয়েছিল। তারা তার বৈশিষ্ট্যগুলি সম্পূর্ণ ফরেনসিক পুনর্গঠনের জন্য তাঁর ভাঙা মাথার খুলি কম্পিউটার স্ক্যান করেছে।
3D ডিজাইনার এবং ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ সিসেরো মোরেস বলেছেন, লোকটির আসল মুখটি পুনরায় তৈরি করতে সাহায্য করেছিল। তিনি ইউটিউবে নিজের প্রকল্পের একটি ক্লিপ পোস্ট করেছেন। দেখুন ইউটিউব ভিডিওটিঃ
বিজ্ঞানী আরও জানিয়েছেন, একটি রেললাইন তৈরির সময় গেজ পাথর উড়িয়ে দেওয়ার জন্য সরঞ্জাম তৈরি করছিলেন। সেই সময়ই দুর্ঘটনাটি ঘটে। বারুদের আঘাতে তার ফেলে দেওয়া লোগার রডটি হার্পুনের মত তার গালের দিকে উড়ে যায়। এটি গেজের বাম গাল দিয়ে ঢুকে মাথার খুলি পর্যন্ত গিয়েছিল।
3D ডিজাইনার এবং ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, লোহারদণ্ডটির দৈর্ঘ্য ছিল ১.০৯ মিটির। আর সেটির ব্যাস ছিল ৩.১৪ সেন্টিমিটার। ওজন প্রায় ৬ কিলোগ্রাম। লোহার দণ্ডটি ১০ মিটারেও বোশি দূরে ছিটকে গিয়ে গেজের গালে ঢুকেছিল। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল টিস্যু। প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, গেজকে সেই অবস্থায় হোটেলে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল। হোটেলের সিঁড়িয়ে দিয়ে ধরাধরি করে তাঁকে তোলাও হয়েছিল। সেই সময়ই ডেকে আনা হয় চিকিৎসককে। তিনি দ্রুততার সঙ্গে গেজের খুলি থেকে প্রায় ২৮ গ্রাম মস্তিষ্ক বের করে আনেন। তারপর ব্যান্ডেজ করে দেন। এই ঘটনার মাত্র এক মাস পরে গেজ সুস্থ হয়ে যায়। তারপর একটি আস্তাবলের কাজে যোগ দেন। দুর্ঘটনার ঠিক ১২ বছর ৬ মাস ৮ দিন পরে ১৮৬১ সালের ২১ মে তিনি মারা গিয়েছিলেন।