সব রেকর্ড ভেঙে ফেলল এবারের গরম। ব্রাজিলের রিও ডি জেনেইরো কার্যত ফুটছে। সব মাত্রা ছাড়িয়ে তীব্র দাবদাহে জ্বলছে পেলে, নেইমারদের দেশ। ব্রাজিলের রাজধানী রিও ডি জেনেইরো এখন আগুনের গোলা। কলকাতার পরিস্থিতিও কী সেরকমই হতে চলেছে!
২০২৪ সালে এল নিনোর আরও দাপট বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। এল নিনোর দাপট বাড়লে বিশ্বজনীন তাপমাত্রাও বাড়বে অনেকটা। ক্রমেই বেড়ে চলেছে বিশ্বজনীন উষ্ণতার হার। তাপমাত্রা বাড়তে থাকায় হিমবাহের বরফও গলছে। এখুনি সতর্ক না হলে ভবিষ্যতে বড় বিপদ অপেক্ষা করছে বিশ্ববাসীর জন্য।
এদিকে ব্রাজিলের রাজধানী রিও ডি জেনেইরোর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি ছাডিয়েছে। কিন্তু সেখানকার গরম ওই তাপমাত্রার মাপকাঠিতে বিচার করা ভুল হবে। কারণ আর্দ্রতা সহ বেশ কিছু জিনিস বিচার করে গরমটা ঠিক কতটা গায়ে লাগছে তার বিচারে বা ফিল লাইক তাপমাত্রা রিও-তে ৬২.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
ধরা যাক কলকাতায় গরম পড়ল ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, কিন্তু শহরে আর্দ্রতার পরিমাণ এত বেশী যে সেই গরম অনুভব হওয়ার তাপমাত্রা হল ৪২ ডিগ্রি। তেমনই হয়েছে রিও-র 'ফিল লাইক' বা হিট ইনডেক্স তাপমাত্রা।
তীব্র গরমে রিও-তে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। অসহ্য গরমের কারণে স্কুল, কলেজ, বেশ কিছু অফিস বন্ধ রাখা হয়েছে।
গত ৪৯ বছরে রিও-তে এত গরম পড়েনি। ক্রমাগত গাছ কাটা, বনাঞ্চলে বড় বাড়ি তৈরি, রাস্তায় মাত্রাতিরিক্ত গাড়ির কারণে রিও-তেএই গরম বলে মনে করা হচ্ছে।
তীব্র গরম থেকে কিছুটা বাঁচতে বিখ্যাত কোপাকাবানা ও ইপানেমা সমুদ্র সৈকতে ভিড় জমিয়েছেন সাধারণ মানুষ।
এদিকে, এবারের গরমে পুড়তে পারে কলকাতাও। চলতি বছরে আগের বারের থেকে তাপমাত্রা আরও বাড়ার আশঙ্কা। দক্ষিণ ভারতে গ্রীষ্ম অসহনীয় হয়ে উঠতে পারে তাপপ্রবাহের দাপটে। এপ্রিল মাসে, ৪০ ডিগ্রি ছাড়াতে পারে তাপমাত্রা।
এবছর গ্রীষ্মে এই এল নিনোর দাপট সবচেয়ে বেশি থাকবে। মৌসম ভবন আশঙ্কাবাণী শুনিয়েছে, মার্চ থেকে মে দেশে লাগামছাড়া গরম পড়তে চলেছে। এমনকী শুধু দিনের বেলাই নয়, রাতেও স্বস্তি মেলার আশা নেই।
মার্চেই বাংলার বেশ কয়েকটি জেলায় থাবা বসাতে পারে তাপপ্রবাহ। তবে মার্চে শুধু পশ্চিমাঞ্চলে ভোগান্তি হলেও এপ্রিল-মে মাসে গোটা দক্ষিণবঙ্গেরই নিস্তার নেই। ফলে আবহাওয়াবিদদের অনুমান, লোকসভা ভোটের সময় দেশের অধিকাংশ স্থানেই তাপমাত্রা ঊর্ধ্বমুখী থাকবে। তাপপ্রবাহ এবং লু বইবারও সম্ভাবনা রয়েছে।
'এল নিনো পরিস্থিতির জন্য সমুদ্রপৃষ্ঠের উপরিভাগের তাপমাত্রা ক্রমশ বাড়তে শুরু করেছে। মধ্য প্রশান্ত মহাসাগরীয় অংশে তাপমাত্রা অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। গোটা গ্রীষ্মকাল জুড়েই এই পরিস্থিতি বজায় থাকবে। আবার একইসঙ্গে লা নিনা পরিস্থিতির জন্য দেশ জুড়ে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ স্বাভাবিকের তুলনায় অনেকটাই বেশি হবে। বর্ষার শেষ অংশে গিয়ে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হবে।