ভারত সফরে এসে মাহসা আমিনি মৃত্যু ঘিরে ওঠা যাবতীয় অভিযোগকে নস্যাৎ করে দিলেন ইরানের উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলি বাঘেরির। পাশাপাশি পশ্চিমী শক্তিগুলির ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
মাহসা মৃত্যুর অভিযোগ প্রকাশ্যেই উড়িয়ে দিলেন ইরানের উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলি বাঘেরির। ভারত সফরে এসে প্রকাশ্যেই তিনি বললেন,'নো ওয়ান কিলড মাহসা আমিনি।' পুলিশি হেফাজতে মাহসা মৃত্যুর অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলেও দাবি করে পশ্চিমী শক্তিগুলির বিরুদ্ধে অপপ্রচারেরও অভিযোগ তোলেন তিনি। তিনি আরও দাবি করেন হিজাব না পরার অপরাধে মাহসা খুন করার অভিযোগ অযৌক্তিক। ভারত সফরে এসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ইরানের উপ পরাষ্ট্রমন্ত্রী আমিনি মৃত্যু নিয়ে মুখ খুললেন।
ভারত সফরে এসে মাহসা আমিনি মৃত্যু ঘিরে ওঠা যাবতীয় অভিযোগকে নস্যাৎ করে দিলেন ইরানের উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলি বাঘেরির। পাশাপাশি পশ্চিমী শক্তিগুলির ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। আফিগানিস্তান, ইয়েমনের মতো দেশগুলিতে ঘটা ঘটনা নিয়ে তাঁদের মৌনতাকেও নিন্দনীয় বলে দাবি করে ইরানের আভ্যন্তরীণ বিষয় পশ্চিমী দেশগুলির নাক গলানোর বিষয়ও সমালোচনা করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ঠিকভাবে হিজাব না পরার 'অপরাধে' ইরানের ২২ বছরের তরুণীকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ ইরানি পুলিশের বিরুদ্ধে। পরিবারের সঙ্গে তেহরানে বেড়াতে এসেছিলেন ২২ বছরের মাহসা আমিনি। যথাযথ ভাবে হিজাব না পরার 'অপরাধে' নীতি পুলিশের হাতে আক্রান্ত হন আমিনি। কয়েকজন স্থানীয় মহিলা আমিনির পথ আটকে হিজাব পরার জন্য বারবারই চাপ দিতে থাকে। রাজী না হওয়ায় বাড়তে থাকে বাগবিতন্ডা। ধীরে ধীরে তর্কাতর্কি ধস্তাধস্তির রূপ নেয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় ইরানি পুলিশ। হিসাব নেই দেখে তরুণীকে 'উচিত শিক্ষা' দিতে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। আমিনিকে টানতে টানতে গাড়িতে তোলার পর পুলিশের গাড়িতেই তাঁকে বেধরক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। থানায় নিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই আমিনির পরিবার জানতে পারে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তরুণীকে। কয়েক ঘন্টার মধ্যেই কোমায় চলে যান তরুণী। চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ে ২২ বছরের আমিনি। পরিবারের অভিযোগ থানায় নিয়ে গিইয়ে বেধরক মারধর করা হয় আমিনিকে। হিজাব পরা শেখানোর নামে মেরে ভেঙে দেওয়া হয় মাথার খুলি। যদিও পুলিশের তরফ থেকে অস্বীকার করা হয়েছে যাবতীয় অভিযোগ। তাঁদের দাবি আগে থেকেই অসুস্থ ছিল তরুণী এবং হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই তাঁর মৃত্যু হয়। পুলিশের এই যুক্তি কোনওভাবেই মানতে রাজী নন আমিনির পরিবার।
এরপরই, রানের রাস্তায় রাস্তায় জ্বলে ওঠে প্রতিবাদের আগুন। 'অত্যাচার'-এর বিরুদ্ধে পথে নেমেছে কাতারে কাতারে ইরানি মহিলা। প্রশাসনের চোখ রাঙানিকে উপেক্ষা করে গণবিক্ষোভের আগুন দেখা গিয়েছে ইরানের রাস্তায়। সেই আগুনের আঁচ ছড়িয়ে পড়েছে গোটা বিশ্বজুড়ে। আমিনি হত্যার প্রতিবাদে প্রকাশ্য রাস্তায় হিজাব পুড়িয়ে, চুল কেটে বিক্ষোভ উত্তেজিত জনতা। মুহুর্মুহু উঠছে সরকার বিরোধী স্লোগান। তেহেরান বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে জমায়েত করেছেন শয় শয় ইরানি তরুণী। ইরানের ১৫টি শহরে ছড়িয়ে পড়েছে প্রতিবাদের আঁচ। সমবেত জনতার ওপর চাঠিচার্জ করে ইরানি পুলিশ। কাঁদানে গ্যাসের সেল ছোড়া এমনকী চলছে গুলিও। আমিনি মৃত্যুর প্রতিবাদে পথে নেমে ইতিমধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন ৩১ জন। যদিও গুলি চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন -
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে ভারতের কাছে জ্বালানি সরবরাহের প্রস্তাব, বড় উদ্যোগ মস্কোর
Nepal Elections- নেপালে কারা গঠন করতে চলেছে সরকার-ট্রেন্ড কোনদিকে, জেনে নিন বিশ্লেষণ
‘অসচ্চরিত্র লোকজনের ভিড়’, মুসলমানদের কাতার বিশ্বকাপ দেখতেই নিষেধ করে দিল আল কায়দা