রাতের আকাশ থেকে হারিয়ে যাবে সব তারা, ২০ বছর পরে কোনও তারা দেখা যাবে না- এখন থেকে সতর্ক না হলে। জানিয়ে দিলেন বিজ্ঞানীরা।
রাতের আকাশ- মানেই রহস্য আর রোমাঞ্চ। সেই কবে থেকে রাতের আকাশ নিয়ে মানুষ কল্পনা করে এসেছে। শুধু কল্পনা নয়, আকাশের তারা বা নক্ষত্র নাবিকদের পথ দেখিয়েছে। কিন্তু আর মাত্র ২০টা বছর- তারপরই রাতের আকাশ থেকে গায়েব হয়ে যাবে সমস্ত তারা- নক্ষত্র। কিছুই দেখা যাবে না। গল্পকথা নয়- তেমনই আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। দূষণে ঢাকা পড়বে রাতের আকাশ তারা দেখার ক্ষমতাই নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। তারারা থেকে যাবে দূষণের ওপারে। আর আমরা থাকব এপারে। যার অর্থ আগামী প্রজন্ম আর তারা খসা উল্কাপাত দেখার মত আনন্দ পাবে না।
দ্যা গার্ডিয়ানকে সাক্ষাৎকার দিতে দিয়ে ব্রিটিশ জ্যোতির্বিজ্ঞানী বলছেন, আলোক দূষণের অবস্থা কয়েক বছর ধরে ক্রমাগত খারাপ হচ্ছে। ২০১৬ সালেই বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, আকাশগঙ্গা বা মিল্কিওয়ে এখন বিশ্বের এক তৃতীয়াংশ মানুষ আর দেখতে পান না। তিনি আরও জানিয়েছেন, লাইট এমিটিং ডায়োড বা এলইডি ও আলোর অন্যাম্য রূপের ক্রমবর্ধমান ব্যবহার নাটকীয় হারে রাতের আকাশের নিজস্ব উজ্জ্বলতা কেড়ে নিচ্ছে। পাল্টা রাতের আকাশকে নকল আলোয় ভরিয়ে দিচ্ছে।
বিজ্ঞানী আরও বলেছেন, 'রাতের আকাশ আমাদের পরিবেশের অংশ। আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম যদি রাতের আকাশ দেখতে না পায় তাহলে তাদের সঙ্গে একটি বড় বঞ্চনা হবে। এটা অনেকটা তেমনই ঘটনা হবে বর্তমান তরুণ তরুণী যারা কোনও দিনও পাখির বাসা দেখেনি।' তিনি আরও বলেছেন- এই বিষয় এখন থেকেই সতর্ক হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।
জার্মান সেন্টার ফর জিওসায়েন্সের ক্রিস্টোফার কিবা বলেছেন, একটি শিশু বর্তমানে বিশ্বে যে স্থানে জন্ম গ্রহণ করেছে সে এখন সেখান থেকেই রাতের আকাশে ২৫০টি তারা দেখতে পাচ্ছে। কিন্তু সেই শিশুটির যখন ১৮ বছর হবে তখন তার নজর থেকে হারিয়ে যাবে ১৫০টি তারা। অর্থাৎ মাত্র ১০০ টি তারাই তার দৃষ্টিগোচর হবে। কিবা আরও জানিয়েছেন, কয়েক বছর আগে পর্যন্ত মানুষ প্রায়ই মহাজাগতিক ঘটনার সাক্ষী থাকতে পারত। কিন্তু এখন তা অত্যান্ত বিরল ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তবে রাতের আকাস যাতে হারিয়ে না যায় তার জন্য জার্মান বিজ্ঞানী কিছু টিপস দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আলোর মুখ সর্বদা নিম্মমুখী রাখতে। আলোর উজ্জ্বলতা কমাতে। হালকা রঙের বিশেষত সাদা রঙের আলো ব্যবহার করতে। তিনি বলেছেন এই কটেকটি পদক্ষেপ যদি নেওয়া হয় তাহলেই হারিয়ে যাবে না তারারা।
অন্যদিকে লন্ডনের ইউনিভার্সিটি কলেজ অধ্যাপক রবার্ট ফসবারি দাবি করেছেন এনইডি আলোর কারণেই এই ক্ষতি হচ্ছে হচ্ছে, এলইডি আলোতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছি যা খুবই ক্ষতিকারক। তিনি বলেন এলইডির নীল আলো আমাদের শরীরে ক্ষতিও করে। তিনি বলেন, এর নীল আলো রক্তে চিনির মাত্রা ভেঙে দেয়। মেলোটোনিন উৎপাদন বাড়ায়। গবেষকরা আরও উল্লেখ করেছেন যে আলোক দূষণ সমুদ্রের কচ্ছপ এবং পরিযায়ী পাখিদের বিভ্রান্ত করে, যারা চাঁদের আলো দ্বারা পরিচালিত হয়। উপরন্তু, তারা বলেছে যে অন্ধকার রাত মানুষের জন্য অপরাধ এবং অন্যান্য বিপজ্জনক পরিস্থিতির জন্যও আচ্ছাদন প্রদান করে।
আরও পড়ুনঃ
'কেমনভাবে দেশ চালাবেন তার টিজার দিলেন মোদী', নতুন সংসদভবন নিয়ে অভিষেকের অভিযোগ
আরও একটি বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের চাকা গড়াবে রাজ্য দিয়ে, কাল মোদীর হাতে উদ্বোধন অসমের প্রথম ট্রেনের
অমিত শাহের সফরের আগেই রক্তাক্ত মণিপুর, মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন নিহত ৪০ বিচ্ছিন্নতাবাদী