প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাজেন্দ্র সিংয়ের মতে, চিন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি এবং জিনপিং চান এটি অর্থনীতিতে প্রথম শক্তিশালী দেশে পরিণত হোক। অন্যদিকে, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে এটি একটি প্রধান সামরিক শক্তি হিসাবেও একটি জায়গা তৈরি করেছে।
প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং টানা তৃতীয়বারের মতো চিনের ক্ষমতায়। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে কমান্ড পাওয়ার সাথে সাথে ভারত-চীন সম্পর্কের বর্তমান তিক্ততা প্রকাশ করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে জিনপিংয়ের উচ্চাকাঙ্ক্ষা এমন যে ভারত-চিন সম্পর্ক কখনই ট্র্যাকে ফিরে আসতে পারবে না। সীমান্ত জুড়ে এরপর থেকে তিক্ততা ক্রমশই বাড়বে বলে আশঙ্কা।
প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাজেন্দ্র সিংয়ের মতে, চিন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি এবং জিনপিং চান এটি অর্থনীতিতে প্রথম শক্তিশালী দেশে পরিণত হোক। অন্যদিকে, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে এটি একটি প্রধান সামরিক শক্তি হিসাবেও একটি জায়গা তৈরি করেছে। তাই চিন এশিয়া সহ সমগ্র ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে তার আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে চায়, অন্যদিকে ভারত প্রতিনিয়ত তার পরিকল্পনা ভেস্তে দেওয়ার চেষ্টা করছে।
লেফটেন্যান্ট জেনারেল বলেন ভারতের অর্থনীতিও দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাই চিন মনে করে যে ভারত ভবিষ্যতে বেজিংয়ের সামনে একটা কড়া চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে। একইভাবে ভারতও সামরিক শক্তি বৃদ্ধিতে দ্রুত পদক্ষেপ নিচ্ছে। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে, ভারত কোয়াডের মাধ্যমে চিনকে কড়া টক্কর দিয়েছে। তাই, ভারতের তৈরি করা চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে বেশ কিছুটা ভয় পায় বেজিং।
ভারতের বিশাল বাজারও দরকার
রাজেন্দ্র সিংয়ের মতে, একদিকে চিন ভারতের অগ্রগতি নিয়ে শঙ্কিত, অন্যদিকে ভারতের বিশাল বাজারেরও প্রয়োজন। তাই চিন ভারতের সাথে সরাসরি শত্রুতা দেখাতে চায় না, তবে ভারতের সামনে ডোকলাম, পূর্ব লাদাখের মতো চ্যালেঞ্জ তৈরি করার চেষ্টা করতে পারে চিন। ফলে সম্পর্কের অবনতি হতে পারে।
জিনপিংয়ের দলে বড় পরিবর্তন
রাজেন্দ্র সিং বলছেন চিনের নজর থাকবে ভারতের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবং সেনাবাহিনীর শক্তির মতো পদক্ষেপের দিকে। তাই এসব ক্ষেত্রে ভারতকে আরও শক্তিশালী হতে হবে। জিনপিংয়ের তৃতীয় মেয়াদে একটি চ্যালেঞ্জ হলো, এবার তার দলে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়েছে। দলে যোগ হয়েছে নতুন মুখ। তাদের বেশিরভাগই হবে জিনপিংয়ের দলের লোক। অর্থাৎ নতুন দলে স্বাধীন কেউ থাকবে না। তাই ভারতের প্রতি তাদের মনোভাব কী তা দেখা কঠিন হবে। আশঙ্কা হল প্রবণতা নেতিবাচক হতে পারে।
উল্লেখ্য, সিপিসি কংগ্রেসের সম্মেলন শুরু হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যেই শি কে সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত করা হলো। শি ও নিজেকে তৃতীয় বারের জন্য চীনের রাষ্ট্রপতি হিসেবে মেনে নিয়ে নিজেকে মাও সেতুং-এর উত্তরাধিকারের সমকক্ষে নিয়ে এসেছেন। তিনি চিনে গণ প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন।
সমাপনী অনুষ্ঠানের ঠিক আগে, প্রায় ২০০ জন শীর্ষস্থানীয় নেতাকে বেছে নেওয়া হয় কেন্দ্রীয় কমিটি গঠনের জন্য । তার পদ পাবার পরই বেছে নেন তার অনুগতদের। তবে কেন্দ্রীয় কমিটির এই তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন প্রিমিয়ার লি, লি ঝানশু, চেন কোয়াংগু, ওয়াং ইয়াং এবং হান ঝেং-এর মতো নেতারা।
আরও পড়ুন -- পাকিস্তানের ধুসর তালিকা থেকে বাদ পড়া নিয়ে ভারতের উদ্বেগ