দিনে দিনে এগিয়ে আসছে একুশের বিধানসভা নির্বাচন। নবান্ন দখলের লড়াই যতই এগিয়ে আসছে জোর তৎপরতা শুরু হয়েছে সব রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে। ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে বাম-কংগ্রেস জোটের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিল শাসক দল তৃণমূল। ওই সময় বিজেপি সেভাবে কোনও জায়গা করতে পারেনি। কিন্তু ২০১৯ এর লোকসভা ভোটের পর ক্রমশই বদলাচ্ছে রাজ্য রাজনীতির চালচিত্র। রাজ্যে এখন প্রধান বিরোধী শক্তি হয়ে উঠেছে বিজেপি।
আরও পড়ুন-বিজেপির বুথ কমিটির সম্পাদককে পিটিয়ে খুন, তৃণমূলের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগে উত্তেজনা
শাসক-বিরোধী শিবিরে জোর তৎপরতা
এই আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে আনুষ্ঠানিক না হলেও জোর তৎপরতা শুরু হয়েছে শাসক-বিরোধী শিবিরে। নবান্ন দখল করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বিজেপি। কলকাতায় ঘাঁটি গেড়েছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা। কৈলাস বিজয়বর্গীয় থেকে শুরু করে অমিত শাহ। দিল্লির তাবড় নেতাদের আনাগোনা ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে সহ-পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব নিয়ে কলকাতায় ঘাঁটি গেড়েছেন বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য। নিজেদের ক্ষমতা ধরে রাখতে জেলার সাংগঠনিক স্তরে বেশ কিছু বদল এনেছে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। করোনা আবহের মধ্যেও ফেলে রাখা দ্রুত সম্পর্ণ করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। ভোটকে সামনে রেখে সরকারি প্রকল্পের কাজে শুরু হয়েছে জোর তৎপরতা। কৃষি আইন থেকে শুরু করে নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় জেলায় জেলায় প্রতিবাদ মিছিল করছে তৃণমূল। অন্যদিকে, এবার আর দেরি না করে বাম-কংগ্রেস জোটের কথা ঘোষণা করেছেন বিমান বসু। দুই দলের মধ্যে আসন রফা করতে দুপক্ষের কোর কমিটি গঠন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন-একুশে বাংলা দখলের লড়াই বিজেপির, নির্বাচন পরিচালনায় কেন্দ্রীয় নেতাই ভরসা গেরুয়া শিবিরের
নির্বাচন কমিশনে চূড়ান্ত ব্যস্ততা
করোনা আবহের মধ্য়ে এখনও সম্পন্ন হয়নি কলকাতা পুরসভার ভোট। সব পুরসভাগুলিতে প্রশাসক বসিয়ে কাজ করছে রাজ্য সরকার। এর মধ্যে একুশের বিধানসভা নির্বাচন ঘিরে জোর তৎপরতা দেখা গেন নির্বাচন কমিশনে। ভোটার তালিকা সংশোধনে সর্বদল বৈঠক করেছে কমিশন। নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রকাশের দাবি জানিয়েছে শাসক-বিরোধী সবপক্ষ।
আরও পড়ুন-বিধানসভা ভোটে একসঙ্গে লড়বে বাম ও কংগ্রেস, জোট ঘোষণা বিমানের
একনজরে ২০১৬ বিধানসভা ভোটের ফল
২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রী পদে পুণরায় নির্বাচিত হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সব বিরোধী দলকে পিছনে ফেলে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা দ্বিতীয়বার সরকার গঠন করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। পশ্চিমবঙ্গে ২৯৪টি বিধানসভা আসনে ২১১টি পেয়েছিল তৃণমূল। ৪৪.৯১ শতাংশ ভোট পেয়েছিল তৃণমূল। সিপিএম পেয়েছিল ২৬টি আসন। ১৯.৭৫ শতাংশ ভোট পেয়েছিল কাস্তে-হাতুড়ে। আবার, সিপিএমকে পিছনে ফেলে ৪৪টি আসন পেয়ে বিরোধী আসনে বসেছিল কংগ্রেস। ১২.২৫ শতাংশ ভোট পেয়েছিল কংগ্রেস। যদিও বাম ও কংগ্রেসের মধ্যে জোট হয়েছিল। বিজেপি বাংলায় ৩টি আসন পেয়ে খাতা খুলেছিল। ফরওয়ার্ড ব্লক পেয়েছিল ২টি আসন। নির্দল ১টি। আরএসপি ৩টি। সিপিআই ১টি। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা ৩টি। এসইউসিআই একটিও আসন পায়নি।