সিবিআইয়ের জয়েন্ট ডিরেক্টর পঙ্কজ শ্রীবাস্তব তখন অন্যান্য সিবিআই অফিসারদের নিয়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন দফতরে। অনুব্রতকে জেরা করার যাবতীয় প্রস্তুতিও সারা হয়ে গিয়েছিল।
এসএসকেএমে ভর্তি হলেন তৃণমূল নেতা অনুব্রত মন্ডল। বুকে ও পেটে তীব্র অস্বস্তি হচ্ছে তার, তৃণমূল সূত্রে অন্তত তেমনটাই খবর। তবে এই অসুস্থতার অদ্ভুত সমাপতনে কেন জানি না বিরোধীরা গোটা বিষয়ের দুয়ে দুয়ে চার সমীকরণ বের করছেন। সকাল ১১টায় সিবিআই দফতরে হাজিরার কথা ছিল বীরভূমের কেষ্টদার। সেই মতো চিনার পার্কের ফ্ল্যাট থেকে রওনাও দেন তিনি। কিন্তু নিজাম প্যালেস নয়, তিনি গাড়ি ঘুরিয়ে সোজা পৌঁছে যান এসএসকেএম হাসপাতালে।
কেন হাসপাতালে অনুব্রত
বুধবার সকাল থেকেই নাকি পেটে ও বুকে তীব্র ব্যথা শুরু হয় অনুব্রত মন্ডলের। তাই তড়িঘড়ি হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় তাঁকে। আপাতত এসএসকেএমের অনুব্রত মণ্ডলের শারীরিক অবস্থার পরীক্ষা হবে। ২১১ নম্বর কেবিনে রয়েছেন তিনি। জানা গিয়েছে, গঠন করা হচ্ছে মেডিক্যাল বোর্ডও।
উল্লেখ্য, বুধবার সকালে গবাদি পশু ও কয়লা চোরাচালানের মামলায় অভিযুক্ত অনুব্রতকে জেরা করার কথা ছিল সিবিআই আধিকারিকদের। সিবিআইয়ের জয়েন্ট ডিরেক্টর পঙ্কজ শ্রীবাস্তব তখন অন্যান্য সিবিআই অফিসারদের নিয়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন দফতরে। অনুব্রতকে জেরা করার যাবতীয় প্রস্তুতিও সারা হয়ে গিয়েছিল। তবে অনুব্রতর দেখা পাননি তারা।
নিজাম প্যালেসের বদলে কয়েক কিমি দূরে এসএসকেএমে গিয়ে থামে অনুব্রতর গাড়ি। সোজা ভর্তি হন হাসপাতালে। দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ মেডিক্যাল টিমের সদস্যরা তাঁকে পরীক্ষা করেন। অনুব্রত মন্ডলের ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছেন শারীরিক অসুস্থতার জন্যই তিনি হাসপাতালে যান।
তবে শারীরিক পরীক্ষার পর সিবিআই দফতরে কি যাবেন অনুব্রত, সে প্রশ্নের উত্তর অবশ্য মেলেনি। সিবিআই অফিসাররাও এই বিষয়ে মুখ খুলতে চাননি। এর আগে গবাদি পশু ও কয়লা চোরাচালানের ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অনুব্রত মণ্ডলকে পাঁচবার তলব করেছিল সিবিআই। তবে প্রতিবারই তিনি অসুস্থতার অজুহাতে সমন উপেক্ষা করেছেন।
অনুব্রত সিবিআইয়ের গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে আইনি সুরক্ষা চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মন্থার বেঞ্চের কাছে গিয়েছিলেন। তারও পরে গরুপাচার মামলায় বীরভূমের জেলা সভাপতি অনুব্রত মন্ডলের রক্ষাকবচের আরজি খারিজ করে দেয় হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চ। জানিয়ে দেওয়া হয় সিবিআই তলব করলে হাজিরা দিতেই হবে অনুব্রত মন্ডলকে। রায় ঘোষণা করে ডিভিশন বেঞ্চ জানায় এই মুহূর্তে একক বেঞ্চের নির্দেশের উপর, হস্তক্ষেপের প্রয়োজন নেই।
গরুপাচারকাণ্ডে সিবিআই-র নোটিসকে চ্য়ালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন জানিয়েছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। আবেদনের মূল বিষয় ছিল, রক্ষা কবচ দেওয়া হোক তাঁকে। এর আগে একই মর্মে বিচারপতি রাজা শেখর মান্থার এজালসেও আবেদন জানিয়ে ছিলেন। সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছিলেন বিচারপতি মান্থার। তারপরেই কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চের কাছে রক্ষা কবচের আবেদন নিয়ে দ্বারস্থ হন বীরভূমের জেলা সভাপতি অনুব্রত মন্ডল। তবে এবারেও শেষ রক্ষা হয়নি।