শুধু লাল নয়, সারদার সবুজ ডায়েরিও খুঁজছে সিবিআই, কী আছে তাতে

  • হাইকোর্টে রাজীব কুমার মামলার শুনানি
  • আইপিএস অফিসারের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ আনল সিবিআই
  • রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন
  • সারদার তিনটি ডায়েরির কথা উল্লেখ করলেন সিবিআই আইনজীবী

এতদিন শোনা যেত সারদার লাল ডায়েরির কথা। এবার সিবিআই-এর আইনজীবী নিজেই কলকাতা হাইকোর্টে জানালেন, শুধু লাল নয়, সারদার হলুদ এবং সবুজ রংয়ের দু'টি ডায়েরিও এখনও হাতে পায়নি সিবিআই। ওই তিনটি ডায়েরি হাতে পেলেই যে সারদা তদন্তের জাল গুটিয়ে আনা অনেকটা সহজ হবে, মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টে তা কার্যত স্পষ্ট করে দিয়েছেন সিবিআই আইনজীবী। পাশাপাশি সারদা মামলায় রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে কী কী অভিযোগ রয়েছে, তাও আদালতের সামনে তুলে ধরেন সিবিআই-এর আইনজীবী ওয়াই জেড দস্তুর। 

রাজীব কুমারের দায়ের করা এই মামলার শুনানিতে পুলিশকর্তার আইনজীবীর অভিযোগ ছিল, বার বার রাজীবকে ডেকে হয়রান করছে সিবিআই। মঙ্গলবার এই অভিযোগের জবাব দিয়েছেন সিবিআই-এর আইনজীবী। তিনি বলেন, 'সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেনের লাল,হলুদ ও সবুজ, মোট তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ফাইল বা ডায়েরি ছিল। যেখানে ব্যবসায়িক উন্নতির জন্য মিটিং, প্রোজেকশন রিপোর্ট, বিভিন্ন তথ্য- সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নথি ছিল। সবুজ ফাইলে তো ২০০ পাতার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র ছিল। কিন্তু আজ পর্যন্ত সিবিআই এর হাতে সেসব কিছুই এসে পৌঁছয়নি। এমনকি সারদার অফিস থেকে কম্পিউটার বাজেয়াপ্ত করা হলেও সিজার লিস্টে দেখা গেছে কোনো সিপিইউ নেই। আসলে সারদা থেকে সুদীপ্ত, দেবযানী ছাড়াও যারা সরাসরি উপকৃত হয়েছিল, সেই সংক্রান্ত যাবতীয় নথি খুব পরিকল্পনামাফিক সরিয়ে ফেলা হয়েছে বা নষ্ট করা হয়েছে৷ সারদা তদন্তে রাজীব কুমারের মতো কোনো কোনও অফিসারের অসহযোগিতা তো আসলে গৌণ বিষয়। আসলে তো পরিকল্পনা করে ধ্বংস করা হয়েছিল নথিপত্রগুলি। এ ছাড়া সিট বলেছে বহু মানুষকে তারা গ্রেফতার করেছে। সুদীপ্ত, দেবযানী ছাড়া তারা কয়েকজন সাক্ষী আর কয়েকজন এজেন্টকে গ্রেফতার করে। এজেন্টরা তো অর্থের বিনিময়ে কাজ করেছে। কোনও প্রভাবশালীকে কি গ্রেফতার করেছে?' 

Latest Videos

আরও পড়ুন- জীবনে শান্তি নেই, কার্যত বন্দিদশা রাজীবের, সারদা মামলায় সওয়াল আইনজীবীর

সরাসরি রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে আরও বেশ কিছু অভিযোগ আনেন সিবিআই আইনজীবী। তিনি বলেন, 'সুপ্রিম কোর্টে রাজীব কুমার হলফ করে জানিয়েছেন, সারদা কাণ্ডে বাজেয়াপ্ত করা পাঁচটি মোবাইল ও একটি ল্যাপটপের ইমেজ ইডি, সেবি, এসএফআইও এবং অসম পুলিশকে পাঠানো হয়েছে৷ কিন্তু প্রত্যেক দফতর থেকেই জানানো হয়েছে, এরকম কোনও ডকুমেন্ট তারা পায়নি৷ রাজীব কুমার এর আগে জানিয়েছিলেন, সিটের প্রধান তিনি হলেও তদন্তের বিষয়ে তিনি কিছুই জানতেন না। যা জানার ডিজি, এডিজি জানতেন। তাঁর কাজ ছিল গাড়ির বন্দোবস্ত করা, ফোনের লাইন ঠিক আছে কিনা দেখা। তাহলে পাঁচটি মোবাইল ও একটি ল্যাপটপের ইমেজ পাঠানোর মতো গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের কথা রাজীব কুমার জানলেন কী করে? এছাড়া, ২০১৭ সালের ১৯ অক্টোবর রাজীবকে প্রথম নোটিশ দিয়েছিল সিবিআই। কিন্তু উত্তরে রাজীব কুমার জানিয়েছিলেন দুর্গাপুজো, ছটপুজো, জগদ্ধাত্রী পুজোর আইনশৃঙ্খলা সামলাতে তিনি ব্যস্ত থাকবেন। তাই সিবিআই-এর কোনও অফিসার তাঁর অফিসে এসে  বয়ান রেকর্ড করে নিয়ে যেতে পারেন অথবা সিবিআই লিখিত প্রশ্ন পাঠালে তিনি লিখিত আকারে উত্তর দিয়ে দিতে পারবেন। কিন্তু সিবিআই যখন রাজীব কুমারের বাসভবনে গিয়েছিলেন, সেখানে রীতিমতো হাঙ্গামা বেঁধে যায়। এছাড়া সিটের যিনি তদন্তকারী অফিসার (আইও) ছিলেন, তিনি পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে বলেছেন তিনি কিছুই জানেন না। অথচ আইও যেকোনো কেসের ক্ষেত্রে সক্রিয়ভাবে যুক্ত থাকেন। তাহলে তিনি সব প্রশ্নের উত্তরেই কীভাবে জানিনা বলেন? আসলে রাজ্য সরকার সারদার অর্থ কোথায় গেল তা খুঁজে বের করার চেষ্টাই করেনি।' 

মঙ্গলবার অবশ্য আদালতে রাজীব কুমারের আইনজীবী এই মামলার শুনানিতে সংবাদমাধ্যমের উপস্থিতিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করার আবেদন জানান। তাঁকে সমর্থন করেন সিবিআই-এর আইনজীবীও। এর পরই মঙ্গলবার থেকে রাজীব মামলার রুদ্ধদ্বার শুনানির আবেদন মঞ্জুর করেন বিচারপতি মধুমতী  মিত্র।  
 

Share this article
click me!

Latest Videos

আর ৮ মাস! জুলাই-অগাস্টে রাজ্যে অকাল ভোট হতে চলেছে! জানালেন BJP সাংসদ | BJP News | Samik Bhattacharya
TMC-কে ভোট দিলেই মিলছে ঠোঙা ভর্তি মুড়ি ও চানাচুর! শোরগোল মেদিনীপুরে | Midnapore | WB By election
সাংবাদিকদের দেখেই দে ছুট! চাঞ্চল্য গোটা এলাকায়, ব্যপার কী? দেখুন
এবার ট্যাব কেলেঙ্কারির শিকার হলো গঙ্গাসাগরের স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা! চাঞ্চল্য ছড়ালো গোটা এলাকায়
‘ওপারে ইউনূস এপারে মমতা দুজনেই এক’ মমতাকে তোপ শুভেন্দুর, দেখুন কী বললেন | Suvendu Adhikari