সকালের দিকে বিক্ষিপ্ত কিছু জটলা, পুলিশ বেরোতেই ফাঁকা হয়ে গেল কলকাতা ও শহরতলী। সংক্ষেপে এই ছিল লকডাউনের দ্বিতীয় দিনের পরিস্থিতি। রবিবার বিকেল থেকে রাজ্য়ে লকডাউন শুরু হওয়ার পরেই কড়া হতে দেখা গিয়েছিল পুলিশকে। বারাসত-সহ বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ কর্তারা রাস্তায় নেমে খালি করে দিয়েছে মোড়ের মাথার জটলা আর চায়ের দোকানের আড্ডা। নিয়ম ভেঙে লকডাউনে বেরনোর অভিযোগে কলকাতা পুলিশ গ্রেফতার করেছে আড়াইশোরও বেশি লোককে। তাতে করে লকডাউনের দ্বিতীয়দিনে রাস্তাঘাট মোটের ওপর শুনশান থাকলেও ইতিউতি জটলা যে কোথাও ছিল না, তা কিন্তু নয়। তবে সেই জটলা হটিয়ে দিতে যথেষ্ট তৎপর হয়েছে পুলিশও।
মঙ্গলবার সকালে ইতিউতি জটলা দেখা গিয়েছিল কলকাতা-সহ শহরতলীতে। দক্ষিণ কলকাতায় বেশ কয়েকজনকে প্রাতঃভ্রমণে বেরোতে দেখা গিয়েছিল। তবে গত বারোঘণ্টার ধরপাকড়ের পর চায়ের দোকানের জটলা আর সেভাবে দেখা যায়নি। কোথাও সকালে পাউরুটি এসেছে। কোথাও বা আসেনি। দুধ অনেক জায়গাতেই অমিল ছিল সকালে। বেলার দিকে কোথাও কোথাও অবশ্য় দুধ এসেছে। আনাজপাতির দোকান কিছুকিছু খোলা ছিল। তবে হামলে পড়ে বাজার করার লোক ছিল না বললেই চলে। খবরের কাগজ আসেনি বাড়িতে। এই পরিস্থিতিতে কলকাতা আর তার আশপাশে রাস্তাজুড়ে গাড়ি দাঁড করিয়ে চালককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সন্তোষজনক উত্তর না-পেলে গাড়ি থামিয়ে দিচ্ছে পুলিশ। তবে আটকানো গাড়ির মধ্য়ে রয়েছে মুরগির ভ্য়ানও। আর যেহেতু সরকার আশ্বস্ত করেছে, খাবারদাবার, আনাজপাতি, মাছ-মাংশ সব পাওয়া যাবে, তাই মুরগিও কার্যত জরুরি পরিষেবার মধ্য়ে পড়ে বলেই মনে করেছেন চালক। অন্য়দিকে পুলিশ সেই গাড়িতে আটকে হেনস্থা করেছে বলে অভিযোগ।
এদিক কলকাতার আশপাশে নানা জায়গায় পুলিশকে কার্যত মারমুখী হতে দেখা গিয়েছে। কোথাও লাঠি হাতে পুলিশ গিয়ে জটলা ভেঙে দিয়েছে। কোথাও আবার টোটোচালক বা অটোচালককে ধরে লাঠিপেটা করেছে। কোথাও ভ্য়ানচালককে লাঠিপেটা করার জন্য় রোষের মুখে পড়তে হয়েছে পুলিশকেও। এমনকি রাস্তায় বেরনোর কারণে কয়েকজন যুবককে কান ধরে ওঠবোস করাতেও দেখা গিয়েছে পুলিশকে।
তবে সব মিলিয়ে যা দেখা গিয়েছে তা হল, লকডাউনের দ্বিতীয়দিনে ইতিউতি কিছু জটলা সকালেও দিকে থাকলেও মানুষ আগের থেকে অনেক সচেতন হয়েছে। যে সব জায়গায় জটলা চলেছে, সেখানে পুলিশ যথেষ্ট সক্রিয়তা দেখিয়েছে। রাজারহাট নিউটাউনে এদিন কার্যত শুনশান থেকেছে। টেকনোনগরীতে বাইরে থেকে কাজ করতে আসা লোকজন প্রায় নেই বললেই চলে। বিধাননগরেও একই অবস্থা। এদিন সকালে যেটুকু-যা লোক বেরিয়েছিল রাস্তায়, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সবাই ঘরে ঢুকে যায়। এমনকি পাড়ায় পাড়়ায় গলি ক্রিকেট খেলার দলও এদিন উধাও। মঙ্গবার তাই কলকাতা ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চল যেন বনধের চেয়েও শুনশান।