হাসপাতালে বেড নেই। ফোন করা হয়েছিল 'দিদিকে বলো'র নম্বরে। কিন্ত সুরাহাও মেলেইনি, উল্টে পচনধরা পা নিয়ে কলকাতার চারটি সরকারি হাসপাতালে ঘুরতে হল এক যুবককে! মঙ্গলবার সকালে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ট্রমা কেয়ার ইউনিটের সামনে যন্ত্রণায় রীতিমতো ছটফট করছিলেন তিনি। শেষপর্যন্ত অবশ্য রোগীকে ভর্তি নেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। শুরু হয় চিকিৎসাও।
বীরভূমের মুরারইয়ে বাড়ি জয়ন্ত রাজবংশীর। গত ১৮ ডিসেম্বর হুগলি ডানকুনি স্টেশনে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন। মালগাড়ির ধাক্কায় জয়ন্ত-এর একটি পা কাটা যায় বলে জানা গিয়েছে। ঘটনার পর তাঁকে উদ্ধার করে উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন হুমায়ুন কবীর নামে এক যুবক। তাঁর দাবি, উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতাল থেকে জয়ন্তকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় এসএসকেএম-এর ট্রেমা কেয়ার ইউনিটে। কিন্তু বেড খালি না থাকায় রোগীকে ভর্তি করা যায়নি। সেদিন মধ্যরাতে দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত ওই যুবককে পাঠিয়ে দেওয়া হয় অন্য একটি হাসপাতালে। তবে এবার আর কোনও সমস্যা হয়নি। জয়ন্তকে ভর্তি করে নেন চিকিৎসকরা। কিন্তু অস্ত্রোপচারের আগের মূহুর্তে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেন, প্রয়োজনীয় মেশিনপত্র নাকি খারাপ! অভিযোগ তেমনই। ফলে চিকিৎসা শেষ হওয়ার আগেই ওই হাসপাতালে ফিরতে হয় জয়ন্ত রাজবংশীকে। এদিকে ততদিনে ওই যুবকের জখম পায়ে পচন ধরেছে।
আরও পড়ুন:মায়ানমারে ফিরলে মরতে হবে, ভারতে থাকতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ রোহিঙ্গা দম্পতি
ডানকুনি স্টেশনে দুর্ঘটনার পর জয়ন্তকে যিনি উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন, সেই হমায়ুন কবীরের দাবি, ২৪ ডিসেম্বর 'দিদি বলো'র নম্বরে ফোন করে ঘটনাটি জানিয়েছিলেন তিনি। তাতে কাজও হয়। সেদিন আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ট্রমা কেয়ার ইউনিটে ভর্তি হন জয়ন্ত। হুমায়ুন কবীরের দাবি, হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর শুক্রবার অস্ত্রোপচার করার কথা জানিয়ে দেন চিকিৎসকরা। কিন্তু অস্ত্রোপচার আর হয়নি, বরং মঙ্গলবার সকালে কোনও কারণ ছাড়া হাসপাতাল থেকে জয়ন্ত রাজবংশীকে বের করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। অগত্যা দিনভর হাসপাতালে ট্রমা কেয়ার ইউনিটের সামনেই পচনধরা পা দিয়ে পড়েছিলেন ওই যুবক। যন্ত্রণার রীতিমতো কাতরাচ্ছিলেন তিনি। ঘটনাটি সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত হতে শোরগোল পড়ে যায়। শেষপর্যন্ত মঙ্গলবার বিকেলে জয়ন্তকে ফের ভর্তি করে নেন আরজিকর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।