'অবনী বাড়ি আছো' বলতেই মনে পড়ে যায় তাঁর কথা। যার হাত ধরে বাংলা সাহিত্যে স্থান পেয়েছিল 'অবনী' বাংলার সেই কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের নামেই নামাঙ্কিত হতে চলেছে কলকাতার এক রাস্তার নাম। কবিকে সম্মান জানাতেই কলকাতা পৌরসভার এই বিশেষ উদ্যোগ।
বেলেঘাটার রামমোহন মল্লিক গার্ডেন লেন, সেখানকারই পূর্বাঙ্গনা আবাসনে থাকতেন কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়। সেখান থেকেই তাঁর একের পর এক চমকপ্রদ আবিষ্কার। সেখানে বসেই তিনি লিখে গেছেন 'ধর্মেও আছ, জিরাফেও আছ' থেকে শুরু করে 'যেতে পারি কিন্তু কেন যাব?' কবিতা গুলির মতো অসাধারণ কবিতা। যার জন্য তিনি পেয়েছেন আনন্দ পুরষ্কার, সাহিত্য অ্যাকাদেমি পুরষ্কার মতো পুরষ্কারও।
তার সেই অমূল্য আবিষ্কারকে সম্মান জানাতেই রামমোহন মল্লিক গার্ডেন লেনের নামকরণ করা হচ্ছে তাঁর নামে। আপাতত যানাযাচ্ছে সেখানকার নাম পরিবর্তন করে রাখা হচ্ছে শক্তি চট্টোপাধ্যায় লেন।
কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় শুধু যে একজন কবি ছিলেন তাই নয়। তিনি ছিলেন একজন ঔপন্যাসিক, লেখক ও অনুবাদকও। কবি ২৫ শে নভেম্বর ১৯৪৩ সালে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা জেলার জয়নগরে জন্মগ্রহণ করেন।
কবি জীবনানন্দ-উত্তর যুগে বাংলা সাহিত্যের একজন প্রধান আধুনিক কবি হিসেবে বিবেচিত হন। ষাটের দশকে যে চারজন কবি হাংরি আন্দোলনের জনক ছিলেন তাঁদের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম। ১৯৪৯ সালে তিনি প্রগতি লাইব্রেরী প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীকালে তিনি এই নামেই হাতে লেখা একটি পত্রিকা প্রকাশ করেন যা পরবর্তীকালে নাম বদলে "বহ্নিশিখা" নামে মুদ্রিত রূপে প্রকাশ পায়।
কবির আবিষ্কারের অন্যতম 'যেতে পারি কিন্তু কেন যাব'(১৯৮২) কাব্যগ্রন্থটি পরবর্তীকালে ইংরাজি ও মৈথিলি ভাষাতেও অনুবাদ করা হয়। ১৯৮৩ সালে তাঁর এই আবিষ্কারের জন্যই তিনি সাহিত্য অ্যাকাদেমি পুরষ্কারও পান। এই ভাবেই তাঁর লেখা ক্রমশ জনপ্রীয়তা পায়। কবির সেই সব অনবধ্য আবিষ্কারকে সম্মানিত করতেই এই উদ্যোগ।
অনেকদিন ধরেই এই পরিবর্তনের কথা ভাবছিল কলকাতা পৌরসভা। অবশেষে তাঁর মৃত্যুর ২৫ বছর পরে তাঁর নামেই নামাঙ্কিত হতে চলেছে মল্লিক গর্ডেন লেনের নাম। কলকাতা পৌরসভার এই উদ্যোগে বেশ খুশি কবির পরিবার পরিজনেরা। তবে কবে এই পরিবর্তন বাস্তবে রূপায়িত হবে তা এখনও সঠিকভাবে জানা যায়নি।