শ্রমিক তালিকায় রাখতে হবে নাম, মিছিলে পা মেলালেন শহরের যৌনকর্মীরা


যৌনকর্মীদের শ্রমিকের মর্যাদা দিতে হবে। মে দিবসের ঠিক আগেই কলকাতার রাস্তায় এই দাবিতে সোচ্চার হয়ে পথে নামলেন তাঁরাই।

arka deb | Published : May 1, 2019 6:46 AM IST / Updated: May 02 2019, 01:00 PM IST

যৌনকর্মীদের শ্রমিকের মর্যাদা দিতে হবে। মে দিবসের ঠিক আগেই কলকাতার রাস্তায় এই দাবিতে সোচ্চার হয়ে পথে নামলেন তাঁরাই। শ্রমিক দিবসের আগের দিন মঙ্গলবার বিকেলে নানা পোস্টার হাতে যৌনকর্মীদের এক বর্ণাঢ্য মিছিল করল দুর্বার মহিলা সমন্বয় কমিটি। দাবি, সরকারি শ্রমদপ্তরের তালিকায় যৌনকর্মীদের ‘শ্রমিক’ হিসাবে তালিকাভুক্ত করা।

মিছিলের রুটম্যাপ
সোনাগাছি থেকে শুরু হয়ে এই মিছিল হেদুয়া পার্ক, কলেজ স্ট্রিট বাটা হয়ে শিয়ালদহ শ্রদ্ধানন্দ পার্ক পর্যন্ত যায়। 

পটভূমি

রাজ্য ও দেশে স্বশাসিত বোর্ডের পূর্ণ স্বীকৃতি ও প্রসার, যৌনকর্মীদের স্বার্থবিরোধী আইটিপিএ আইনের একাধিক ধারা বাতিল করা, ইত্যাদি দাবিতে গত ২৫ বছর ধরে ‘দুর্বার মহিলা সমন্বয় কমিটি’ যৌনকর্মীদের জন্যে কাজ করে চলেছে। এই আন্দোলনের জেরেই যৌনকর্মীরা ভোটাধিকার পেয়েছেন। আধার কার্ড, রেশন কার্ড,প্যান কার্ড, স্বাস্থ্য বিমা প্রকল্প, বার্ধক্য ভাতা, বিধবা ভাতা, সস্তায় রেশন পাওয়া ইত্যাদি সরকারি সুবিধা তাঁরা পাচ্ছেন। কিন্তু আজও জোটেনি শ্রমিকের তকমা।

কেন জরুরি শ্রমিকের মর্যাদা 

এই সমস্ত কিছুর প্রতিবাদে এবং যৌন পেশাকে স্বীকৃতির দাবিতেই পয়লা মে’র আগের দিন ছিল যৌনকর্মীদের এই মহামিছিল।

ভোট বড় বালাই

লোকসভা নির্বাচনের আবহে সর্বভারতীয় যৌনকর্মী সংগঠনের মাধ্যমে বিভিন্ন দলের প্রার্থীদের কাছে তাঁদের দাবি-দাওয়াও পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। গোটা দেশে প্রায় ৫০ লক্ষ যৌনকর্মী এবং তাদের উপর নির্ভরশীল প্রায় আড়াই কোটি ভোটদাতা রয়েছেন।

অধিকার বুঝে নেওয়ার দাবিদাওয়া

দুর্বার মহিলা সমন্বয় কমিটির সচিব কাজল বসু জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক দাবিগুলির মধ্যে রয়েছে-

যৌনকর্মী ও তাদের সন্তানদের সব ধরনের সরকারি পরিষেবা দিতে হবে। 

  ৪৫ বছর বয়সের পর প্রত্যেক যৌনকর্মী এবং রূপান্তরকামীদের পেনশন দিতে হবে।
 
৩ রাজ্য এবং জাতীয় স্তরে নীতি নির্ধারণ কমিটিগুলিতে যৌনকর্মীদের প্রতিনিধিত্ব থাকতে হবে। 

যৌনপেশার সঙ্গে যুক্ত যে কাজগুলি অপরাধমূলক কাজ হিসেবে দেখা হয় তা আইটিপিএ আইনের ধারা থেকে বাদ দিতে হবে। 

স্বশাসিত বোর্ডকে স্বীকৃতি দিতে হবে। যৌনপেশাকেও শ্রমতালিকার অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। যৌনকর্মীদের অপরাধী হিসাবে চিহ্নিত করা যাবে না। 

যৌনপেশাকে অবলম্বন করে জীবিকা নির্বাহ করা এবং নাবালিকা এবং অনিচ্ছুক সাবালিকাদের এই পেশা থেকে দূরে রাখার সংকল্প নিয়েই মে দিবসকে সামনে রেখে এদিন তাঁরা ‘শ্রমিক’ হিসেবে স্বীকৃতির দাবি করছেন। 

মিছিলে পা মেলানো মানুষের আশা, সমাজে তাঁদের প্রতিদান আর মানবিকতাকে গুরুত্ব দিয়ে যৌনকর্মীদের এই দাবিগুলিকে স্বীকৃতি দেবে। এদিনের মিছিলের মাধ্যমে এই মানবিকতার বার্তাটিই তাঁরা  পৌঁছে দিতে চেয়েছেন সমাজের সর্বস্তরের মানুষের কাছে।

Share this article
click me!