ব্রেন স্ট্রোকের পর প্রায় ২১ থেকে ৩৮ শতাংশ রোগী অ্যাফেসিয়ায় ভোগেন। অ্যাফেসিয়ায়, রোগীর মস্তিষ্কের বাম অংশ কাজ করা বন্ধ করে দেয়।
AIIMS দিল্লি এবং IIT দিল্লি দুর্দান্ত উদ্ভাব। এবার গানের মাধ্যমে হবে রোগীদের চিকিৎসা। বিশেষ করে ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় নতুন পথের উদ্ভাবন করেছে। মিউজিক থেরাপি রোগীদের সারিয়ে তুলতে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে AIIMS-এর চিকিৎসক দীপ্তি বিভা বলেছেন, ব্রেন স্ট্রোকের পরে রোগীরা তাদের শোনার আর কথা বলার অধিকার হারিয়ে ফেলে। তাদেরই সারিয়ে তুলতে ব্যবহার করা হবে মিউজিক থেরাপি। তিনি আরও বলেছেন ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্তদের মিউজিক থেরাপির মাধ্যমে গুনগুন করে গান শোনাতে ও কথা বলা শেখান হবে। তিনি বলেছিলেন যে ভারতে প্রথমবারের মতো অ্যাফেসিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের জন্য একটি মিউজিক থেরাপি মডিউল তৈরি করা হচ্ছে। এইমসের নিউরোলজি বিভাগকে সাহায্য করছে দিল্লি আইআইটি।
ব্রেন স্ট্রোকের পর প্রায় ২১ থেকে ৩৮ শতাংশ রোগী অ্যাফেসিয়ায় ভোগেন। অ্যাফেসিয়ায়, রোগীর মস্তিষ্কের বাম অংশ কাজ করা বন্ধ করে দেয়। মস্তিষ্কের বাম অংশের কারণেই একজন ব্যক্তি কথা বলে, জিনিস বোঝে এবং মানুষের সামনে তার অনুভূতি প্রকাশ করে। অ্যাফেসিয়ায় ভুগছেন এমন রোগী একটি ছোট শব্দও বলতে পারছেন না এবং এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে, এইমসের নিউরোলজি বিভাগ রোগীদের জন্য সঙ্গীত থেরাপি নিয়ে কাজ করছে। বাইরের দেশে এই ধরনের রোগীদের জন্য প্রায়ই মিউজিক থেরাপি ব্যবহার করা হয়।
কীভাবে হবে এই থেরাপিঃ
চিকিৎসক জানিয়েছেন অ্যাফেসিয়ায় আক্রান্ত রোগীর মস্তিষ্কের বাম অংশ একেবারেই কাজ করে না। কিন্তু ডান অংশ কাজ করে। পুরোপুরি সুস্থ থাকে। যার কারণে রোগী গান বুঝতে পারে। সুরও শুনতে পায়। সেই কারণে গান শুনলে গুণগুণ করতে পারে। যে রোগীা সামান্য জল চেয়েও খেতে পারে না তারাও মিউজিক থেরাপিতে সুস্থ হয়ে যাবে।
মিউজিক থেরাপির মাধ্যমে রোগীর ডান দিক সক্রিয় করে তাকে কথা বলা ও গানের সুর বুঝতে শেখানো হয়। এতে প্রথমে রোগীর সামনে ছোট ছোট বাদ্যযন্ত্র বাজানো হয়, যা রোগী শুধু বুঝতেই পারে না, গুনগুন করতেও সক্ষম হয়। এই টিউনগুলি আগে থেকেই ঠিক করা হয়। যা রোগীদের প্রথমে টুকরো টুকরো করে এবং তারপর পুরো লাইনটি বলে বোঝানো হয়। এতে রঘুপতি রাঘব রাজা রাম বা আয়ে মেরে ওয়াতন কে লোগনের মতো সুর রয়েছে, যা প্রায় প্রত্যেক ভারতীয় জানেন এবং শুনেছেন।
প্রক্রিয়াটি সফল হতে কত বাকি
বর্তমানে, IIT দিল্লি এবং AIIMS দিল্লি যৌথভাবে রোগীদের উপর গবেষণা করছে এবং এর মডিউল প্রস্তুত করতে ব্যস্ত। এই প্রজেক্টের একজন সঙ্গীত বিশেষজ্ঞও রয়েছে। কয়েকটি গান ও সুর খুঁজে বার করা হচ্ছে। প্রথম দফায় ৬০ জন রোগীর উপর সমীক্ষা করা হচ্ছে। প্রথম ৩০ জন রোগীকে মিউজিক থেরাপি দেওয়া হচ্ছে। বাকি ৩০ জন রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।৩ মাস পরে তাদের মধ্যে পরিবর্তনগুলি দেখা হবে। তারপরই ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে।