স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনলে এই ধরনের সমস্যা কমানো যায়। জেনে নেওয়া যাক, থাইরয়েড সমস্যা প্রতিরোধে মানুষের কী খাওয়া উচিত এবং কী করা উচিত নয়?
সাম্প্রতিক দিনগুলোতে বিশ্বজুড়ে থাইরয়েডের সমস্যা দ্রুত বাড়ছে। থাইরয়েড গলায় অবস্থিত একটি ছোট গ্রন্থি। থাইরয়েড হরমোনের অস্বাভাবিক উৎপাদন বা ঘাটতির কারণে মানুষকে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হতে পারে। হাইপারথাইরয়েডিজম থাইরয়েড হরমোনের অত্যধিক উৎপাদনের কারণে হয়, যখন এর অভাব হাইপোথাইরয়েডিজমের ঝুঁকি বাড়ায়।
চিকিৎসকদের মতে, পুরুষদের তুলনায় নারীদের থাইরয়েডের সমস্যা বেশি হতে পারে। থাইরয়েডের সমস্যা দুর্বলতা, শরীরে কাঁপুনি, ডায়রিয়া, ওজন হ্রাস, অনিদ্রা এবং অনিয়মিত হৃদস্পন্দনের কারণ হতে পারে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনলে এই ধরনের সমস্যা কমানো যায়। জেনে নেওয়া যাক, থাইরয়েড সমস্যা প্রতিরোধে মানুষের কী খাওয়া উচিত এবং কী করা উচিত নয়?
১) থাইরয়েডে ডিম ও মাছ উপকারী হতে পারে
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, হাইপোথাইরয়েডিজমে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য ডিম ও মাছ খাওয়া খুবই উপকারী বলে মনে করা হয়। ডিমের কুসুমে আয়োডিন এবং সেলেনিয়াম পাওয়া যায় এবং সাদা অংশে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন পাওয়া যায়। এছাড়া অনেক ধরনের মাংস এবং স্যামন, টুনাসহ সব ধরনের সামুদ্রিক খাবার এ ধরনের রোগীদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হতে পারে। থাইরয়েডের ঘাটতি পূরণে এটি খুবই উপকারী প্রমাণিত হতে পারে।
২) শুকনো ফল উপকারী হতে পারে
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, থাইরয়েড রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য বাদাম এবং বীজ খাওয়া খুবই উপকারী হতে পারে। শুকনো ফলগুলিতে উচ্চ পরিমাণে সেলেনিয়াম থাকে, যা থাইরয়েড গ্রন্থিকে উদ্দীপিত করতে সাহায্য করে। তাই সেলেনিয়াম সমৃদ্ধ খাবার যেমন আখরোট, সূর্যমুখী বীজ ইত্যাদি খান। তবে মনে রাখবেন দিনে ২-৩টির বেশি শুকনো ফল খাবেন না, কারণ এগুলো থাইরয়েডের সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে।
৩) থাইরয়েড রোগে কি খাবেন
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, যাদের থাইরয়েডের ঘাটতির সমস্যা রয়েছে তাদের বেশি করে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত। মুগ ডাল, বিউলির ডাল, ছোলা, রাজমার ডাল, ডিম, মুরগি এবং মাছ এই জাতীয় রোগীদের জন্য প্রোটিনের ভাল উত্স । অন্যদিকে, যাদের থাইরয়েডের সমস্যা (হাইপারথাইরয়েডিজম) আছে তাদের জন্য দুগ্ধজাত পণ্য (দুধ, দই, পনির) উপকারী বলে মনে করা হয়। ফুলকপি এবং ব্রকলির মতো সবজি থাইরয়েড হরমোনের উৎপাদন কমায়।
৪) থাইরয়েড রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের যা খাওয়া উচিত নয়
আপনি যদি হাইপারথাইরয়েডিজমের সমস্যায় ভুগছেন, তাহলে খাবারের আগে জল বা কোনও পানীয় পান করা এড়িয়ে চলুন। এছাড়াও, জাঙ্ক ফুড এড়িয়ে চলুন, কারণ এগুলো ওজন বাড়াতে পারে এবং এর সঙ্গে আরও অনেক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সমস্যা যেমন কোলেস্টেরল বৃদ্ধি, রক্তচাপ বৃদ্ধি, স্থূলতা এবং হার্ট সংক্রান্ত সমস্যা দেখা দিতে পারে। থাইরয়েড হরমোনের বেশি থাকে রোগীদের সুস্থ থাকতে ডায়েটের পাশাপাশি ব্যায়ামের দিকেও মনোযোগ দেওয়া উচিত।