ইন্টারনেট আসক্তি শিশু থেকে টিনএজদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর কতটা প্রভাব ফেলছে, জেনে নিন বিশেষজ্ঞের মতামত

Published : Jun 26, 2023, 05:01 PM ISTUpdated : Jun 26, 2023, 11:06 PM IST
Child Specialist Dr Samik Hazra

সংক্ষিপ্ত

১০ জনের মধ্যে ৯ জন অভিভাবক চান যে তাদের সন্তানরা ইন্টারনেটে সময় কাটানোর চেয়ে বেশি মেলামেশা করুক এবং খেলুক। এই বিষয়ে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ (চাইল্ড স্পেশালিস্ট) ডাঃ শমীক হাজরা কী বলছেন চলুন জেনে নেওয়া যাক। 

আগে যেখানে বাবা-মায়েরা শিশু-কিশোরদের মাদকাসক্তি থেকে বাঁচানোর চিন্তা করতেন> এখন এর পাশাপাশি অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের ইন্টারনেট আসক্তি থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। জেনে অবাক হবেন যে আজকাল এমনভাবে শিশুদের মনে জায়গা করছে যে, বিপুল সংখ্যক শিশুকে চিকিৎসা ও পরামর্শ দিতে হচ্ছে। এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছ, দেশে ২ থেকে ১২ বছর বয়সী শিশুরা প্রতিদিন গড়ে ৪ ঘণ্টা ৪০ মিনিট ইন্টারনেটে ব্যয় করছে। কিশোরদের মধ্যে এই আসক্তি আরও বেশি উদ্বেগজনক। কিশোররা প্রতিদিন ইন্টারনেটে ৭ ঘন্টা ২২ মিনিট ব্যয় করছে।

শিশুরা মানসিক রোগের শিকার হচ্ছে

সমীক্ষা অনুসারে, এর মধ্যে স্কুল বা বাড়ির কাজের জন্য ইন্টারনেটে ব্যয় করা সময় অন্তর্ভুক্ত নয়। এর কারণে শিশুরাও মানসিক রোগের শিকার হচ্ছে। ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে মেট্রো শহরের শিশুরা অনেক এগিয়ে। কমন সেন্স মিডিয়া, একটি বেসরকারী সংস্থার একটি সমীক্ষা যা প্রযুক্তি সংক্রান্ত শিশুদের অভ্যাসগুলি ট্র্যাক করে, প্রকাশ করেছে যে বেশিরভাগ শিশু টিভি, স্মার্টফোন এবং অন্যান্য গ্যাজেটগুলিতে লেগে থাকে। শিশুরা ভিডিও দেখার জন্য প্রতিদিন কমপক্ষে ১ ঘন্টা ইউটিউব ব্যবহার করে। ১০ জনের মধ্যে ৯ জন অভিভাবক চান না যে তাদের বাচ্চারা নেটে সময় কাটাক

ন্যাশনাল ট্রাস্ট সার্ভে অনুসারে, ৮৩ শতাংশ অভিভাবক বিশ্বাস করেন যে তাদের সন্তানদের প্রযুক্তি ব্যবহার করতে শেখা উচিত, কিন্তু এতে আসক্ত হওয়া উচিত নয়। অন্যদিকে, ১০ জনের মধ্যে ৯ জন অভিভাবক চান যে তাদের সন্তানরা ইন্টারনেটে সময় কাটানোর চেয়ে বেশি মেলামেশা করুক এবং খেলুক। এই বিষয়ে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ (চাইল্ড স্পেশালিস্ট) ডাঃ শমীক হাজরা কী বলছেন চলুন জেনে নেওয়া যাক।

ডাঃ হাজরার মত, ''ইন্টারনেটে আসক্তি ক্রমশই বর্তমান প্রজন্মের কিশোর-কিশোরীদের ক্রমেই গ্রাস করছে। ইন্টারনেটের বহু ভালো গুণ আছে। তথ্যের ভান্ডার এবং পারস্পরিক আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে ইন্টারনেট তথা সোশ্যাল মিডিয়ার গুরুত্ব অপরিসীম। কিন্তু ক্রমান্বয়ে ইন্টারনেট ব্যবহার বয়সন্ধিকালীন অনুসন্ধিৎসু অথচ স্বতঃপরিবর্তনশীল কিশোরমননে রেখে যেতে পারে দীর্ঘস্থায়ী কুপ্রভাব। একদিকে যেমন রয়েছে অধিক ব্যবহার এবং অপব্যবহারের ফলে মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি তথা মনসংযোগ এবং মস্তিষ্কের কাজে ঘাটতি, অন্যদিকে ইন্টারনেটের সূত্র ধরে আসে অপরাধ জগতের হাতছানি তথা সাইবার অপরাধের আবর্তে পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি। বিশেষ করে অপরিণতমনস্ক কিশোর কিশোরীরা ভীষণ রকম ভাবে ঝুঁকির মুখে দাঁড়িয়ে।

ইন্টারনেটের অধিক ব্যবহারের থেকে যেমন বয়ঃসন্ধিকালীন কিশোর কিশোরীকে নিবৃত্ত করতে হবে তথা শুধুমাত্র দরকারি ওয়েবসাইটেই যেন তারা বিচরণ করে সেদিকে নজর রাখতে হবে। অন্যদিকে সাইবার অপরাধ সংক্রান্ত প্রাথমিক পাঠটা তাদের দিয়ে রাখতে হবে। যাতে তারা নিজেদের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সচেতন হতে পারে। বাবা মায়েরা যদি নিজেদের মোবাইলের জগত ছেড়ে বয়সন্ধিকালীন কিশোর কিশোরীকে সময় দেন কিছুটা এবং যদি বাস্তব জীবনের বন্ধুত্ব, খেলাধুলার প্রতি আকর্ষণ গড়ে তোলা যায় তাহলে ইন্টারনেট আসক্তি কমানোর ক্ষেত্রে তা একটা ইতিবাচক ভূমিকা নেবে।''

PREV
click me!

Recommended Stories

সন্তানকে ‘সেরা’ করে তুলতে গিয়ে আপনি ‘পিকক পেরেন্ট’ হয়ে যাচ্ছেন না তো?
শিশুদের স্মৃতিশক্তি বাড়াতে পারে এমন সাতটি সুপারফুড