মানসিক স্বাস্থ্য শিশুর সামগ্রিক সুস্থতা ও ভবিষ্যতের সম্ভাবনাকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করে।
শৈশবে মানসিক স্বাস্থ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্বেগের বিষয়। কারণ এটি শিশুর সামগ্রিক সুস্থতা ও ভবিষ্যতের সম্ভাবনাকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করে। সময়মত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া খুবই জরুরি। শিশুদের মামসিক স্বাস্থ্য খারাপ হচ্ছে এটি বোঝা যায় ৮টি কারণ থেকেই।
১. আচরণের পরিবর্তন
শিশুর আচরণে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন মানসিক স্বাস্থ্য উদ্বেগের প্রাথমিক সূচক হতে পারে। ভারতে, এখনও এই বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয় না। কিন্তু ভারতের ৪-১৬ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে প্রায় ৭ শতাংসই মানসিক স্বাস্থ্য দুর্বল। যা তাদের আচরণ থেকেই বোঝা যায়।
২. মানসিক যন্ত্রণা
দীর্ঘস্থায়ী মানসিক যন্ত্রণা শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য খারাপ করে দেয়। কিশোর ও কিশোরীদের মধ্যে বর্তমানে বিষন্নতা বাড়ছে। তবে এই বিষয়ে পরিবারের সদস্যদের সচেতন হতেই পরামর্শ দিয়েছে বিশেষজ্ঞরা। মানসিক বিষন্নতা শুধুমাত্র পরিবারের সদস্যদের সাহায্যেই কাটতে পারে।
৩. ঘুম
মানসিক স্বাস্থ্য অনেকটা নির্ভর করে ঘুমের ওপর। ঘুমের ব্যাঘাত মানসিক স্বাস্থ্য দুর্বল করে দেয়। একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে ভারতীয় কিশোর কিশোরীদের ৪০ শতাংসেরও ঘুমের গুণগত মান খুব খারাপ।
৪. পড়াশুনা খারাপ
মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যা নিয়ে যেসব ভারতীয় শিশুরা পড়াশুনা করেছে তাদের রেজাল্ট খুব খারাপ হচ্ছে। ভারতের জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্যের সমীক্ষা অনুযায়ী ৭ শতাংশ শিশুই মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যা রয়েছে। তাই তাদের রেজাল্ট খারাপ হচ্ছে।
৫. সামাজিক বিচ্ছিন্নতা
সামাজিকভাবে যদি কাউকে বয়কট করা হয় তাহলে সেই শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য ভেঙে পড়ে। সেই শিশুরা তুলনামূলকভাবে অনেকটা পিছিয়ে পড়ে। অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, ভারতের প্রতিযোগিতামূলক শিক্ষা ব্যবস্থার কারণে শিশুদের মনে সমস্যা তৈরি হয়। পিছিয়ে পড়ার ভয় থাকে।
৬. শারীরিক লক্ষণ
শারীরিক সমস্যা থাকলে সেই শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য খুব একটা ভাল হয় না। পেট খারাপ বা মাথা ব্যাথার মত সমস্যা যদি কোনও শিশুর থাকে তাহলে তার মেজাজ সর্বদা ভাল হয় না।
৭. খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন
অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ভারতীয় শিশুদের মানসিক অশান্তির একটি অন্যতম কারণ। ইন্ডিয়ান জার্নাল অফ কমিউনিটি মেডিসিন রিপোর্ট করেছে যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ভারতীয় কিশোর-কিশোরীর ফুড হ্যাভিট তুলে ধরে বলা হয়েছে জাঙ্ক ফুড বা নিয়মিত খাবার না খাওয়ার জন্য মানসিক স্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
একটি সমীক্ষা রিপোর্টে বলা হয়েছে দেশের প্রায় ১৫-৩৯ শতাংশ শিশুর মধ্যেই আত্মহত্যা করার প্রবণতা রয়েছে। সেটাও মানসিক স্বাস্থ্য দুর্বল হওয়ার কারণে। তাই বিশেষজ্ঞরা শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর জোর দিতে পরামর্শ দিয়েছেন অভিভাবকদের।