চিনা স্পাই ক্যামেরা পাক সেনেটে
শুক্রবার ছিল চেয়ারম্যান ও ডেপুটি চেয়ারম্যান নির্বাচন
ভোটকেন্দ্রের ঠিক উপরেই ছিল ওই ক্যামেরা
এই নিয়ে উত্তাল পাক রাজনৈতিক মহল
শুক্রবার গোপন ক্যামেরা বসানোর অভিযোগে চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হল পাক সেনেট অর্থাৎ সংসদের উচ্চকক্ষে। এদিন পাক সেনেটের চেয়ারম্যান ও ডেপুটি চেয়ারম্যান নির্বাচন ছিল। আর তার জন্য গঠিত ভোটকেন্দ্রের ঠিক উপরেই চিনা স্পাইক্যাম বসানো ছিল বলে অভিযোগ করেছেন, বিরোধী দল পাকিস্তান পিপলস পার্টির (PPP) সেনেটর মোস্তাফা নওয়াজ খোকর। অপর সেনেটর রাজা রব্বানীর দাবি এটা একটা গুরুতর আইন লঙ্ঘন।
তবে, পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি স্পাই ক্যামেরার ছবি পোস্ট করে তিনি লিখেছেন, স্পাইক্যাম হলে তা সনাক্ত করা অসম্ভব হত। কারণ স্পাইক্যাম কারোর মাথায়, কিংবা নখেও বসানো যায়। সম্ভবত মন্ত্রীরা সিসিটিভি ক্যামেরাকে দেখে স্পাইক্যাম বলে ভুল করেছেন। তবে যে ক্যামেরাই হোক, ভোটকেন্দ্রের উপরে তা থাকবে কেন, তাই নিয়ে প্রশ্ন তুলে ইমরান সরকারকে বিদ্ধ করেছে পাকিস্তানের বিরোধী দলের জোট।
শুক্রবারই পাকিস্তানের সেনেটে, নবনির্বাচিত ৪৮ জন সদস্য শপথ গ্রহণ করেন এরপরই গোপন ব্যালটের মাধ্যমে সংসদের উচ্চ কক্ষের চেয়ারম্যান ও ডেপুটি চেয়ারম্যান নির্বাচন করার কথা ছিল। আর সেখানেই এই বিপত্তি ঘটে। সেননেটের মধ্য়েই মন্ত্রী ও সেনেটরদের একে অপরের সঙ্গে তীব্র বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়তে দেখা যায়।
চলতি মাসের শুরুতে, সেনেটের ভোটে প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানির জয়ে জোর ধাক্কা খেয়েছিল ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (PTI)। তাঁকেই বিরোধীরা সেনেটের চেয়ারম্যান পদে যৌথ প্রার্থী করেছে। তাঁর বিরুদ্ধে ইমরান থান দাঁড় করিয়েছেন সাদিক সানজরানি-কে। এবার জিতলে দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য সেনেট কক্ষ পরিচালনার ভার পাবেন সানজরানি। তবে বিরোধী দলের জোট, পাকিস্তান ডেমোক্র্যাটিক মুভমেন্ট (PDM) গিলানির জয়ের বিষয়ে দারুণ আত্মবিশ্বাসী। ১০০-এর সদস্যের সেনেট সভায় জিততে দরকার ৫১টি ভোট। দুই পক্ষই তাদের পক্ষে সেই সমর্থন আছে বলে দাবি করেছে।
গত বুধবার ইমরান খান মন্ত্রীসভার অর্থমন্ত্রী আবদুল হাফিজ শায়খকে পরাজিত করেছিলেন ইউসুফ রাজা গিলানি। বিরোধীরা এরপরে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি জানিয়েছিল। গত শনিবার আস্থাভোট করেছিলেন ইমরান। সেই ভোটে অবশ্য তিনি স্বচ্ছন্দ্যেই জিতেছেন। তাঁর দল গিলানির বিরুদ্ধে ভোট জালিয়াতির অভিযোগ করেছে। এবার এই স্পাই ক্যাম নিয়ে নতুন করে উত্তাল পাকিস্তানের রাজনৈতিক মহল। ক্যামেরাটি চিনা হওয়ার প্রশ্ন উঠছে বেজিং-এর সঙ্গে হাত মিলিয়ে কি বিরোধীদের উপর নজর রাখছেন ইমরান খান?