মরা ছুঁয়ে থাকা- গড়ুর পুরাণ অনুযায়ী জানুন কেন মৃত্যুর পরে দেহ একা ফেলে রাখা হয় না

পারলৌকিক কাজের মধ্যে অন্যতম হল মৃত্যুর পরে মৃতদেহ ছুঁয়ে থাকতে হয়। মৃতদের কখনই একা একা রাখা যায় না।

 

হিন্দু ধর্মের বিশ্বাস অনুযায়ী মৃত্যুই শেষ হয়। মৃত্যুর পরেও অনেক কিছু থেকে যায়। হিন্দুশাস্ত্র বিশ্বাস করা হয় দেহ বিলীন হয়। কিন্তু আত্মা থেকে যায়। হিন্দু দর্শন অনুযায়ী দেহ হল আত্মার খোলোস। আর সেই কারণেই মৃত্যুর পরে অনেক নিয়ম -নীতি পালনের প্রথা রয়েছে। যা মৃতের পরিবারের সদস্যরা মেনে চলে। তবে এইসব রীতিনীতি মানার কারণ ব্যাখ্যা করা হয়েছে গড়ুর পুরাণে।

পারলৌলিক কাজ

Latest Videos

মৃত্যুর পরে যেসব নিয়মনীতি মানতে হয় তারমধ্যে অন্যতম হল পারলৌকিক কাজ। যা পরিবারের সদস্যদের কঠোরভাবে মানতে হয়। এই পারলৌকিক কাজের মধ্যে অন্যতম হল মৃত্যুর পরে মৃতদেহ ছুঁয়ে থাকতে হয়। মৃতদের কখনই একা একা রাখা যায় না।

বাংলার প্রবাদ মরা ছুঁয়ে থাকা

এই প্রথা থেকেই এসেছে বাংলার প্রবাদ মরা ছুঁয়ে থাকা। এই নিয়ম প্রাচীণ বাংলা সাহিত্যে যেমন রয়েছে তেমনই রয়েছে পুরণা। আমরা প্রবাদ জানলেও অনেকেই জানি না এই প্রথার মূল কারণ। কিন্তু গড়ুর পুরাণে এর ব্যাখ্যা রয়েছে। বলা হয়েছে মৃত্যুর পরে নিথর দেহ পরিবারের কোনও না কোনও সদস্যকে ছুঁয়ে থাকতে হয়।

মরা ছুঁয়ে থাকার ধর্মীয় ব্যাখ্যা

১. হিন্দু শাস্ত্রে আত্মাকে অনেক বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। শরীরকে কষ্ট দিলেও আত্মাকে কষ্ট না দেওয়ার কথাই বলা হয় শাস্ত্রে। কিন্তু মৃত্যুর পরেই আত্মা শরীর ত্যাগ করে না। কারণ পুরনা বাসস্থান বা খোলোস ছাড়তে আত্মারও কষ্ট হয়। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী আত্মাকে কষ্ট না দওয়ার জন্যই দেহ একা একা রাখা হয় না। কারণ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আত্মার পরিচিতি থাকে।

২. তন্ত্র সাধনা হিন্দু শাস্ত্রের একটি অঙ্গ। তন্ত্র সাধনায় মৃতদেহ ও আত্মার প্রয়োজন হয়। তাই দেহ যদি খালি ফেলে রাখা হয় তাহল তান্ত্রিক অনেক দূর থেকে বসে সেই দেহ ও আত্মাকে নিজের ইচ্ছে মত কাজে লাগাতে পারে। তবে তান্ত্রিকের কাজ আত্মার জন্য খুবই কষ্টের । তাই দেহ একা রাখা হয় না।

৩. দেহ যদি খালি ঘরে ফেলে রাখা হয় তাহলে দেহের দখল নিতে পারে কোনও অশুভশক্তি। তাতে আত্মার কষ্ট হয়। আর সেই কারণেএকা ফেলে রাখা হয় না। বিশেষ করে রাতের বেলায় দেহ একা ফেলে রাখা হয় না। হিন্দু ধর্মের বিশ্বাস রাতের বেলা অশুভ শক্তি বেশি সক্রিয় হয়।

৪. মৃত মানুষের দেহে দ্রুত জীবাণু প্রবেশ করতে পারে। বা দেহ থেকে ছড়িয়ে পড়তে পারে। সেইজন্য মৃতদেহের সঙ্গে একজনকে রাখা হয়, যিনি ক্রমাগত ধূর ধূনো জ্বালবেন। প্রয়োজনে মৃতদের সেন্ট বা অগুরু ছড়িয়ে দেবেব। তাতে দেহ থেকে দুর্গন্ধ বের হবে না।

৫ হিন্দু ধর্মের বিশ্বাস মৃত্যের পরে শরীর থেকে আত্মা বার হয়ে গেলেও সে পরিচিত স্থান বা দেহ ছেড়ে যেতে চায় না। তাই মৃত্যুর পরেও দীর্ঘক্ষণ আত্মা দেহের পাশে ঘোরাফেলা করে। সেই কারণে মৃতদের একা ফেলে রাখা হয় না। কেউ ছুঁয়ে থাকলে আত্মা দেহে প্রবেশ করতে পারে না।

৬. মৃত্যুর পরে সরীরে পোকামাকড়ের উপদ্রব হতে পারে। কারণ নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরেই দেহে পচন শুরু হয়। তাই একজনকে সেখানে বসিয়ে রাখা হয়, যিনি মৃতদেহের ওপর নজর রাখেন।

Share this article
click me!

Latest Videos

'একত্রিত হতে হবেই, ওরা ৫০ পেরলেই শরিয়া আইন চালু করবে' গর্জে উঠলেন শুভেন্দু | Suvendu Adhikari | News
'Mamata Banerjee-র জন্যই অভয়ার এই অবস্থা' বলতে গিয়ে এ কী বললেন Suvendu Adhikari, দেখুন
শুভেন্দুর বিরাট ঘোষণা! সোনাচূড়ার আড়াই বিঘা জমিতে হবে বিশাল Ram Mandir | Suvendu Adhikari
'সনাতনী সম্মেলন'-এ Suvendu Adhikari-র বিশেষ বার্তা, দেখুন সরাসরি
‘RG Kar-র তথ্য প্রমাণ Mamata Banerjee-র নির্দেশে লোপাট হয়েছে’ বিস্ফোরক Adhir Ranjan Chowdhury