কালীপুজোর আগের জেনে নিন বাংলার কোণায় কোণায় থাকা কালীমায়ের জনপ্রিয় সব মন্দিরের কাহিনি এশিয়ানেট নিউজের পেজে। আজ রইল উত্তর কলকাতা ও উত্তর দব্বিশ পরগণার তিন প্রসিদ্ধ কালী মন্দিরের কাহিনি। যা সকলের জানা উচিত-
কালীপুজোর আগের জেনে নিন বাংলার কোণায় কোণায় থাকা কালীমায়ের জনপ্রিয় সব মন্দিরের কাহিনি এশিয়ানেট নিউজের পেজে। আজ রইল উত্তর কলকাতা ও উত্তর দব্বিশ পরগণার তিন প্রসিদ্ধ কালী মন্দিরের কাহিনি। যা সকলের জানা উচিত-
ঠনঠনিয়া কালীমন্দির-
ঠনঠনিয়ার শ্রীশ্রীসিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দির বা ঠনঠনিয়া কালীবাড়ি কলকাতার ঠনঠনিয়া অঞ্চলে অবস্থিত একটি প্রাচীন ও জনপ্রিয় কালী মন্দির। এটি কলেজ স্ট্রীট মোড় থেকে একটু দূরে বিধান সরণিতে অবস্থিত। জনশ্রুতি অনুসারে ১৭০৩ খ্রিষ্টাব্দে উদয়নারায়ণ ব্রহ্মচারী নামে জনৈক তান্ত্রিক মাটি দিয়ে সিদ্ধেশ্বরী কালীমূর্তি গড়েন। ১৮০৬ খ্রিষ্টাব্দে শঙ্কর ঘোষ নামে জনৈক ধনাঢ্য ব্যক্তি বর্তমান কালীমন্দির ও পুষ্পেশ্বর শিবের আটচালা মন্দির নির্মাণ করেন ও নিত্যপূজার ব্যয়ভার গ্রহণ করেন। এখানে মায়ের মূর্তি মাটির, প্রতি বছর মূর্তি সংস্কার করা হয়। ঠনঠনিয়া কালীবাড়িতে জ্যৈষ্ঠ মাসে ফলহারিণীর পুজো, কার্তিক অমবস্যায় আদিকালীর পুজো ও মাঘ মাসে রটন্তী কালীর পুজো হয়।
আনন্দময়ী নিমতলা কালীবাড়ি-
শ্রীশ্রীআনন্দময়ী কালীবাড়ি হল কলকাতার নিমতলা অঞ্চলের একটি বিখ্যাত কালীমন্দির। এটি হুগলি নদীর তীরবর্তী নিমতলা মহাশ্মশানের পাশে অবস্থিত। নিমতলা মহাশ্মশানে দাহকার্যের জন্য আনীত শবদেহগুলিকে এই মন্দিরের সামনে নামিয়ে মৃতের আত্মার শান্তি প্রার্থনা করার রেওয়াজ আছে। লোকশ্রুতি অনুসারে, অতীতে কোনও এক কালীসাধক শ্মশানের কাছে একটি ছোটো কুটিরে কালীপূজা করতেন। সেই কুটিরেই তিনি আনন্দময়ী কালীর বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করেন। পরে কুটিরের জায়গায় এই মন্দির নির্মিত হয়।
মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা জগন্নাথ নামে এক ভক্তকে পূজার ভার দিয়েছিলেন। জগন্নাথ অবস্থাপন্ন না হওয়ায় নারায়ণ মিশ্র নামে এক ব্রাহ্মণের কাছে মন্দিরটি বিক্রি করে দেন। নারায়ণ মিশ্রের বড়ো ছেলের মৃত্যুর পর দৌহিত্র জমিদার মাধবচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় এই মন্দিরের সত্ত্বাধিকারী হন। তিনিই কুটিরের পরিবর্তে স্থায়ী মন্দির নির্মাণ করান। এখনও এখানে মেদিনীপুর অঞ্চলের ছয় জন পুরোহিত এই মন্দিরে পূজা করেন।
মন্দিরটি মাঝারি আকৃতির দোতলা চাঁদনি শ্রেণির মন্দির। এই মন্দিরের চূড়া নেই। মন্দিরের কাছে একটি পুরনো আটচালা শিব মন্দির আছে। সেই মন্দিরে একটি বড়ো শিবলিঙ্গ রয়েছে। শিবরাত্রি উপলক্ষে এখানে মহাসমারোহে পূজা হয়।
নৈহাটি বড় মা-
''ধর্ম হোক যার যার বড়মা সবার''-
নৈহাটির বিখ্যাত হিন্দু ধর্মীয় অনুষ্ঠান হল মা কালী পূজা। নৈহাটির অরবিন্দ রোডে "বড় মা " পূজা তাদের মধ্যে সব থেকে প্রাচীন ও বিখ্যাত। নৈহাটির বাসিন্দা ভবেশ চক্রবর্তীর হাত ধরে শুরু হয়েছিল এই পুজো। বলা হয়, কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে নবদ্বীপের রাস উৎসব দেখতে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে রাধাকৃষ্ণের বিশাল মূর্তি দেখে ভবেশ মনস্থির করেন উঁচু প্রতিমা বানিয়ে তাঁরাও কালীপুজো করবেন। সেই
মতো নৈহাটি ফিরে ২১ ফুটের কালীপ্রতিমা বানিয়ে পুজো শুরু করেন। যা প্রথমে 'ভবেশ কালী' নামে পরিচিত ছিল। কিন্তু লোকমুখে তা ধীরে ধীরে 'বড় মা' হয়ে যায়। আশেপাশের শহরতলীতেও বড়মা-র জনপ্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ে। আজ বাংলা-তথা বাংলার বাইরের ভক্তরাও বড়মা সাক্ষাতের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে। এই মন্দিরে ভীষণ জাঁকজমক সহকারে কালীপুজো অনুষ্ঠিত হয়।