আজও অনেক বাড়িতে মহিলারা কুমড়ো কাটে না। প্রথমে বাড়ির একজন পুরুষ গোটা কুমড়ো কাটে, তবেই মহিলাটি কাটতে পারে। কিন্তু জানেন কি এর কারণ কী এবং এর পেছনে ধর্মীয় তাৎপর্য কী।
কুমড়ো হোক বা লাউ এগুলি বিভিন্ন ইত্যাদি নামে পরিচিত। এটি থেকে অনেক ধরণের খুব সুস্বাদু খাবার তৈরি করা হয়। এর পাশাপাশি এটি স্বাস্থ্যের জন্যও ভালো, কারণ আয়ুর্বেদে কুমড়াকে ঔষধি গুণে পরিপূর্ণ বলে মনে করা হয়েছে।
কিন্তু কুমড়া কোনও সাধারণ জিনিস নয়, বরং এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে অনেক বিশ্বাস ও ঐতিহ্য। তাই আজও অনেক বাড়িতে মহিলারা কুমড়ো কাটে না। প্রথমে বাড়ির একজন পুরুষ গোটা কুমড়ো কাটে, তবেই মহিলাটি কাটতে পারে। কিন্তু জানেন কি এর কারণ কী এবং এর পেছনে ধর্মীয় তাৎপর্য কী।
কুমড়ো বা গোটা লাউকে জ্যেষ্ঠ পুত্র হিসাবে বিবেচনা করা হয়
লোকবিশ্বাস অনুসারে, কুমড়াকে জ্যেষ্ঠ বা জ্যেষ্ঠ পুত্র হিসাবে বিবেচনা করা হয়। ছত্তিশগড় সহ অনেক রাজ্যে, বিশেষ করে আদিবাসী সম্প্রদায়ের মহিলারা আজও কুমড়া কাটে না। কারণ এর পিছনে একটি বিশ্বাস রয়েছে যে কুমড়া কাটা বড় ছেলেকে বলি দেওয়ার মতো। তাই পুরুষরা কুমড়োর কাটার আগে এটি কেটে ফেলেন, তারপর মহিলারা এটিকে ছোট ছোট টুকরো করে কাটতে পারেন। কারণ মহিলারা গোটা কুমড়ো বা লাউ কাটতে পারেন না।
নারকেলের মতো কুমড়ার গুরুত্ব
হিন্দু ধর্মে নারীদের যেভাবে নারকেল ভাঙতে নিষেধ করা হয়েছে। একইভাবে কুমড়া কাটাও নিষিদ্ধ। মহিলারা পূজায় নারকেল দিতে পারেন, কিন্তু ভাঙতে পারেন না। একইভাবে নারীদেরও কুমড়া কাটাও নিষিদ্ধ। একজন পুরুষ প্রথমে কুমড়ো না কাটলে একজন মহিলা তা কাটতে পারে না। এর কারণ হল, সনাতন ধর্মে সাত্ত্বিক উপাসনায় নারকেল, কুমড়ার মতো জিনিসগুলিকে বলির রূপ বলে মনে করা হয়।
নারী সৃষ্টিকর্তা নয় ধ্বংসকারী
এটি এমন পৌরাণিক তাত্পর্য যে, যেখানে পশু বলি দেওয়া হয় না, সেখানে পশুর প্রতীক হিসাবে কুমড়ো দেওয়ার প্রথা রয়েছে। সনাতন ধর্মানুসারে নারীই সৃষ্টির উৎস, ধ্বংসের নয়। তিনি জন্মদাত্রী এবং পালনকারী মা। সেজন্য সে প্রতীকীভাবে বলিও দিতে পারে না।
কুমড়ার বৈশিষ্ট্য
কুমড়ো এমন একটি সবজি, যার পাতা, ফুল, ফল এবং ডালগুলিও খাবার তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। কুমড়া থেকে পাকোড়া, সবজি, স্যুপ এবং সাম্বার ইত্যাদি অনেক ধরনের খাবার তৈরি করা হয়। কুমহদা বা কুমড়া সম্পর্কিত এই সমস্ত বৈশিষ্ট্যগুলির কারণে, প্রতি বছর ২৯ সেপ্টেম্বর বিশ্ব কুমড়া দিবস পালিত হয়।