চৈতন্যমহাপ্রভু জয়ন্তী পালন করা হয় দোলযাত্রার দিন, জানুন নিমাই সন্ন্যাসীর তিনটি অমূল্য কথা

চলতি বছর চৈতন্যমহাপ্রভুর জন্মজয়ন্তী পড়েছে ৭ মার্চ। কৃষ্ণভক্ত নিমাই সন্ন্যাসী বৈষ্ণব ধর্মের প্রচারক ছিলেন। বর্তমানে তিনি দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিদেশেও জনপ্রিয়।

 

চৈতন্যমহাপ্রভু- অনেক কাহিনি রয়েছে। কিছু সত্যি কিছু আবার কাল্পনিক। তবে চৈতন্যমহাপ্রভু জাতপাতের উর্ধ্বে উঠে মানবতাই শ্রেষ্ঠ ধর্ম এই কথা প্রচার করেছিলেন তা সকলেই একবাক্য স্বীকার করে নেন। ৯ শতক আগে তাঁর জন্ম হলেও এখনও তাঁর আদর্শ, মতাদর্শ আর জনপ্রিয়তায় তেমন ভাঁটা পড়েনি। নামগান করেই তিনি তাঁর ধর্মের মূল কথা প্রচার করেছিলেন। কৃষ্ণ প্রেম আর মানুষে প্রেমই ছিল তাঁর ধর্মের মূলকথা।

জন্মঃ চৈতন্যমহাপ্রভু নবদ্বীকে ১৪৮৬ খ্রিষ্টাব্দে ১৮ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। । চলতি বছর তাঁর জন্মতিথি পড়েছে ৭ মার্চ অর্থাৎ সোমবার। তাঁর বাবা ছিলেন সিলেটের বাসিন্দা জগন্নাথ মিশ্র, মাতা শচীদেবী। দুই স্ত্রী নাম ছিল বিষ্ণুপ্রিয়া ও লক্ষ্মীপ্রিয়া। মাত্র ২৪ বছর বয়সেই তিনি সন্ন্যাসী হন। প্রথমেই তিনি দক্ষিণভারত সফর করেন। কথিত রয়েছে সেই সময় মায়াবাদীরা প্রচার করছিল যে বিদেশী শাসকদের কারণে ভারতীয়রা ধর্মত্যাগ করছে। সেই সময়ই চৈতন্যদেব বৈষ্ণব ধর্ম প্রচার করেন। হরিনামের মাধ্যমে প্রেম আর ভক্তিভাব ছড়িয়ে দেন। চৈতন্যদেবের কৃপাতেই বৈষ্ণব ধর্ম জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। মাত্র ৪৮ বছরে তঁর মৃত্যু হয়।

Latest Videos

এই রাজ্যের বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের মানুষ চৈতন্যদেবকে ঈশ্বরের অবতার মনে করেন। দোলের দিনই তাঁর জন্মদিন পালন করেন। চৈতন্যদেব গোটাজীবন ধরেই রাধা-কৃষ্ণের সাধনা করে গিয়েছিলেন। জীবনের একটি বড় সময় তিনি কাটিয়েছিলেন। ভক্তদের কাছে তিনি নিমাই সন্ন্যাসী নামে পরিচিত ছিলেন।

নিমাই থেকে চৈতন্য- সালটা ছিলে ১৫০৯। নিমাই তথন তাঁর বাবার শেষকৃত্য করছেন। সেই সময় তিনি ঈশ্বরপুরী নামে এক সাধুর সঙ্গে দেখা করেছিলেন। সেই সাধুই তাঁর মনে কৃষ্ণপ্রেম জাগিয়ে তুলেছিলেন। কৃষ্ণনাম জপ করতে শিখিয়েছিলেন। তারপরের বছরই সাধক শ্রীপাদ কেশব ভারতীর কাছে দীক্ষা নেন। সেইসময় থেকেই তাঁর নাম হয় চৈতন্য। পরবর্তীকালে ভক্তরা মহাপ্রভু যুক্ত করে নিয়েছিলেন। প্রথমে নিত্যানন্দ প্রভু এবং অদ্বৈতাচার্য মহারাজের শিষ্য হন। শিষ্যদের সাহায্যে তিনি বাদ্যযন্ত্রে হরে কৃষ্ণ, হরে কৃষ্ণ, কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে নাম উচ্চারণ করেন। শুরু হল হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে।

কথিত রয়েছে, গৌরাঙ্গ বা নিমাই জগন্নাথপুরীতে গিয়েছিলেন। সেখানেই মন্দিরে জগন্নাথ দেবের সামনে নাচতে নাচতে তিনি জ্ঞান হারান। সেই অবস্থাতেই তাঁকে সর্বভৌম্য ভট্টাচার্য তাঁর বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিলেন। যদিও তা নিয়ে অনেক বিতর্ক হয়। কারণ নিমাই জ্ঞানের উর্ধ্বে উঠে ভক্তির গুরুত্ব প্রমাণ করেছিলেন। তারপর থেকেই তাঁর শিষ্যের সংখ্যা বাড়তে থাকে। ওড়িশার সূর্যবংশীয় রাজা প্রতাপ রুদ্রদেব নিমাই সন্ন্যাসীকে শ্রীকৃষ্ণের অবতার বলে মনে করতেন।

চৈতন্যদেবের অমূল্যবানীঃ

১। ভক্তিতে আবেগ প্রবল আচার অনুষ্ঠান নিছকই একটি শিল্প। চৈতন্যদেব ভক্তির পবিত্রতা প্রচার করতেন। ভক্তিবাদের তিনি ছিলেন অন্যতম প্রচারক। ভগবানকে তিনি সাধারণ মানুষের কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন। তাঁর দর্শন ছিল অত্যান্ত সরল।

২। প্রেম সম্পদের সারমর্ম। চৈতন্যমহাপ্রভু শস্য থেকে বৃক্ষ হওয়ার উদাহরণ দিয়ে ভক্তদের বলেছিলেন পৃথিবী বৃথা, এর জন্য কর্মের কোনও অর্থ নেই। মানুষের কল্যাণই সবথেকে জরুরি।

৩। কৃষ্ণনাম জপ- চৈতন্যদেব বলেছিলেন কৃষ্ণনাম জপের প্রধান ফল হল প্রেম। সেখানেই প্রেম থাকে যেখানে ভক্তি থাকে। ভক্তি হল ঘাসের থেকেও নম্র, বৃক্ষের থেকেও সহনশীল। নিঃস্বার্থ হয়ে অন্যকে সম্মান করার অন্যনামও হল ভক্তি। শুদ্ধচিত্তে হরিনাম জপ করা আর মানুষের কাছে ঈশ্বরের ভালবাসা পৌঁছে দেওয়া ছা়ড়া আর কিছুই নয়।

আরও পড়ুনঃ

TMC Vs. BJP: অনুব্রতর নাম নিয়ে তৃণমূল নেতার হুমকি, পাল্টা জবাব বিজেপি নেতার

বাড়িতে জবা ফুলের গাছ রেখেছেন? আপনাআপনি কেটে যাবে ঘরের একাধিক বাস্তুদোষ

ন্যাড়া পোড়ানোর ছাই দিয়ে পালন করুন এই টোটকা, এই সহজ উপায় দূর হবে সকল বাস্তুদোষ

 

Share this article
click me!

Latest Videos

‘সরকারকে প্রশ্ন করলেই সরকার উলঙ্গ হয়ে যাবে!’ বক্তব্য রাখতে না দেওয়ায় বিস্ফোরক Sajal Ghosh
‘অনেকদিন পর কেষ্টদা ফিরেছে তাই একটু বিশৃঙ্খলা হচ্ছে’ অদ্ভুত ব্যাখ্যা Satabdi-র! | Satabdi Roy News
Mamata Banerjee Live: নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে মমতা, দেখুন সরাসরি
Suvendu Adhikari: 'কয়লার ৭৫ ভাগ তৃণমূলের পকেটে যায়' বিস্ফোরক অভিযোগ শুভেন্দুর
Mamata Banerjee : 'মোদী বাংলার কৃষকদের একটা পয়সাও দেয় না' বিতর্কিত মন্তব্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের