এত ফুল থাকতে কালী পুজোয় জবা ফুল ছাড়া চলে না কেন? রয়েছে দারুণ কাহিনি
কালীপুজোর সময় জবা ফুলের গুরুত্ব অনেক। অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে এত ফুল থাকতে জবা ফুলই কেন গুরুত্ব পায়? এই প্রতিবেদনে জেনে নিন জবা ফুল মা কালীর কেন এত প্রিয়? এই প্রশ্নের উত্তর লুকিয়ে আছে এই ফুলের মধ্যেই।
মা কালীর মূর্তি বিভিন্ন জায়গায় আলাদা আলাদা। কোথাও খুব উগ্র, উলঙ্গিনী, কোথাও লাল শাড়ি পরা। কিছু জায়গায় রং গাঢ় নীল আবার কিছু জায়গায় গাঢ় কালো।
কিন্তু দেবীর রূপ যাই হোক না কেন, একটা জিনিস বদলায় না। সেটা হল জবা ফুল। জবা বিভিন্ন রঙের পাওয়া যায়।
তবে কালী পুজোয় রক্তজবা ব্যবহারের নিয়ম রয়েছে। এই ফুলের কোনও গন্ধ নেই, বিশেষ কোনও বৈশিষ্ট্য নেই।
তবে, জবার মাহাত্ম্য বেড়ে যায় যখন এটি দেবীর পায়ে স্থান পায়। জেনে নিন এর পেছনে লুকিয়ে আছে কী রহস্য।
প্রচলিত বিশ্বাস হল জবা ফুলের পাপড়িগুলি দেবী কালীর লোলজিহ্বার মত। এর রঙ উজ্জ্বল লাল। অনেকে মনে করেন এটা উগ্রতার প্রতীক।
অন্যদিকে দেবী কালী উগ্র। পাপের বিনাশের পরও তিনি থেমে থাকেননি। তার ক্রোধে তিনি বিশ্বজগতকে ধ্বংস করতে ছাড়েননি।
শেষ পর্যন্ত মহাকালকে তার রাগ শান্ত করতে মাথা নত করতে হয়। তাই দেবীর প্রিয় ফুল হিসেবে রক্তজবা জন্ম নেয়। এটাও বলা হয় লাল রং শক্তি ও শৌর্যের প্রতীক।
এ নিয়ে প্রচলিত ধারণা রয়েছে। একদিন জবা কেঁদে মা কালীর কাছে অভিযোগ জানাল। বলল, 'মা, আমাকে কেউ সম্মান করে না। কোনও পুজোয় লাগি না। রূপ নেই, গন্ধ নেই, তুমি নিজেই বিচার করো।'
মা কালী উত্তর দিলেন, 'যাদের কেউ নেই। তাদের মা আছে। আজ থেকে তুমিই আমার পুজোয় অপরিহার্য হবে।'
সেই সঙ্গে মা কালী জবাকে বললেন, "রং কটকটে কে বলেছে। তোমার রং টকটকে লাল। আমি জগত্তারিণী, ক্রমাগত সৃজন এবং সংগ্রামে আমি রক্তলিপ্ত। লাল সৃজন ও শৌর্যের প্রতীক তুমি তো আমারই প্রতিনিধিত্ব কর।"
আবার মনে করা হয়, লাল রং বিপদের প্রতীক অর্থাৎ নারীকে অসম্মান করলে তার পরিণতি মারাত্মক হতে পারে।
এর অনেক নিদর্শন আমাদের প্রাচীন মহাকাব্য থেকে আজ পর্যন্ত ছড়িয়ে আছে। সেই লালের বিপদ বার্তা ও সাবধান চেতনা জবা বহন করে। তাই শুধু জবা ফুলই উপযুক্ত।